Samakal:
2025-03-18@22:42:53 GMT

ছেলেদের ঈদ পোশাক

Published: 18th, March 2025 GMT

ছেলেদের ঈদ পোশাক

ছেলেদের ঈদ মানেই সারাদিন কেবল এক পাঞ্জাবি– এই গতানুগতিক চিন্তা কিন্তু এখন আর নেই। তবে ঈদের সকালটা জুড়ে থাকে পাঞ্জাবির আধিপত্য। বাকি দিন চলে টি শার্ট, পলো বা রেগুলার শার্ট পরেই।
চলতি ঈদ কালেকশনে টি-শার্টে দেখা যাচ্ছে ওভারসাইজড ফিট ও গ্রাফিক প্রিন্টের আধিপত্য। আড়ং ও ইয়েলোর কালেকশনেই মিলছে নেকলাইন ডিটেইল ও জিওমেট্রিক প্যাটার্নের ছোঁয়া। লিনেন ও কটন ব্লেন্ড ফেব্রিকের কারণে গরমের সময়েও এই পোশাকগুলো পরে স্বস্তি পাওয়া যাবে। রঙের দিক থেকেও এবার রয়েছে বেশ বৈচিত্র্য– হালকা নীল, সাদা, অলিভ গ্রিনের পাশাপাশি থাকছে বোল্ড নিওন শেড। দাম শুরু হচ্ছে মাত্র ৫০০ টাকা থেকে আর ব্র্যান্ডেড টি-শার্টের রেঞ্জ ১ হাজার ২০০ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত। 
পলো শার্টের ক্ষেত্রেও এবার এসেছে বেশ আরামদায়ক ও মার্জিত রূপ। কে ক্র্যাফট ও রিচম্যান এনেছে মিনিমাল ডিজাইন ও সাবটেল স্ট্রাইপের মেলবন্ধন। তরুণদের পছন্দের তালিকায় উঠে এসেছে প্যাস্টেল টোন, মিন্ট গ্রিন, ল্যাভেন্ডার ও স্যান্ড বেজ। ফেব্রিক হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে মোইস্টার-উইকিং কটন ও পলিয়েস্টার ব্লেন্ড, যা এই চৈত্রের গরমেও ঘাম শোষণে সহায়ক। দাম ৮০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে। 
রেগুলার শার্টে চেকার্ড, ফ্লোরাল ও স্ট্রাইপড ডিজাইনে রয়েছে আধুনিক লুক। অঞ্জন’স ও দর্জি বাড়ি এনেছে ডুয়াল-টোন শার্ট, যেখানে কলার ও কাফে রয়েছে কনট্রাস্টিং রঙের ব্যবহার। কটন-সিল্ক ও লিনেন-রেয়ন ফেব্রিকের কারণে শার্টগুলোয় যুক্ত হয়েছে লাকজারি ফিল। রঙের দিক থেকে আর্থি টোন যেমন টেরাকোটা ও ম্যাট ব্লু, আবার ক্ল্যাসিক হোয়াইট-ব্ল্যাক কম্বিনেশনও জনপ্রিয়। দাম ব্র্যান্ডেড শার্টের ক্ষেত্রে ১ হাজার ২০০ থেকে ৪ হাজার ৫০০ টাকা আর স্থানীয় বাজারে ৪০০ থেকে ১ হাজার টাকার মধ্যেই মিলছে মানসম্মত বিকল্প। 
প্রতিটি ফ্যাশন হাউস ঈদ আয়োজনে সেজেছে ভিন্নভাবে। আড়ংয়ের ‘আরবান ঈদ’ কালেকশনে রয়েছে হ্যান্ড-এমব্রয়ডারি টি-শার্ট ও লিনেন শার্ট। কে ক্র্যাফট নজর দিয়েছে টেক্সচার্ড ফেব্রিক ও মেটালিক বাটন ডিটেইলে। ইয়েলোর কালেকশনে দেখা যাচ্ছে চেস্ট পকেট ও টোন অন টোন প্রিন্ট। সাশ্রয়ী দামের ট্রেন্ডি কালেকশন এনেছে টেক্সমার্ট ও বি-টেক। দাম ৮০০ থেকে ২ হাজার ২০০ টাকার মধ্যে। 
দেশের অন্যতম ফ্যাশন ও লাইফস্টাইল ব্র্যান্ড ‘লা রিভ’। এবারের ঈদে পুরুষের পোশাকে ‘মুভমেন্ট’ থিমে নতুন কালেকশন উন্মোচন করেছে। এ ব্যাপারে লা রিভের ডিজাইন ও ক্রিয়েটিভ ম্যানেজার মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘ঈদ মানেই সংযোগের আনন্দ– এই অনুভূতিকে রং, কাপড় ও নকশায় রূপ দেওয়াই ছিল আমাদের মূল লক্ষ্য। মুভমেন্ট থিমের মাধ্যমে আমরা নতুন কিছু আনতে চেয়েছি, যা পরিধানকারীর মনে স্বাধীনতা ও আত্মপ্রকাশের বার্তা দেয়।’ 
এ বছর পুরুষদের ঈদ ট্রেন্ডে গুরুত্ব পেয়েছে আর্থি টোন্স, অর্গানিক রং এবং সফট প্যাস্টেল টোনস। এ ছাড়া লাল, নীল, কালো, অরেঞ্জ, টেরাকোটা এবং স্বর্ণালি রংও এই বছর ঈদ ফ্যাশনে বিশেষভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। 
লা রিভে পুরুষদের জন্য থাকছে নতুন ডিজাইনের শার্ট, পলো, টি-শার্ট, ডেনিম, চিনো ও প্যান্ট-পায়জামা। কিশোরদের জন্য রয়েছে বয়স উপযোগী উৎসবের পোশাক। 
সব বয়সীর জন্য ট্রেন্ডি ফ্যাশন 
বিক্রেতারা জানান, এবারের ঈদে সদ্য তরুণরা চাচ্ছেন একটু ফ্রেশ, কনফিডেন্ট আর বোল্ড লুক। ওভারসাইজ টি-শার্ট, গ্রাফিক প্রিন্ট আর প্যাস্টেল বা নিওন রঙের পলো শার্ট তাদের প্রথম পছন্দ। হালকা ফেব্রিক ও স্মার্ট কাটে তারা এবার আরও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন। মধ্যবয়সী পুরুষ পছন্দ করছেন একটু মার্জিত অথচ আধুনিক লুক– সলিড কালার, মিনিমাল ডিজাইন আর আরামদায়ক টেক্সচারের রেগুলার শার্ট। আবার বয়স্কদের জন্য রয়েছে– ক্ল্যাসিক কটন শার্ট, আর্থি শেড আর লুজ কাটের শার্ট; যা আরাম ও সৌন্দর্য একসঙ্গে ধরে রাখে। 
এ বছর ঈদ ট্রেন্ড নিয়ে ফ্যাশন ডিজাইনার হোসাইন ইমন জানান, হালকা জিএসএমের ঢিলেঢালা পলো এখন ট্রেন্ডি। এই ট্রেন্ড আগামী দু’তিন বছর এভাবেই চলবে। আগে মানুষ টাইট পলো পরত; এখন একটু রিলাক্স ফিট চলছে। লাইট কালার, ডেনিম কলার বা স্লিভের ভ্যারিয়েশন জনপ্রিয় হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, টি-শার্টেও সলিড বেইজের ওপর সামনে ছোট লেখা বা লোগো আর পেছনে বড় প্রিন্ট বা সিনারি জেন জি ও জেন আলফাদের জন্য বেশ ট্রেন্ডি। v

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: দ র জন য ক ল কশন ড জ ইন

এছাড়াও পড়ুন:

যুদ্ধবিরতি ভেঙে গাজায় ইসরায়েলের হত্যাযজ্ঞ

যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার বাসিন্দাদের অনেকে তখন গভীর ঘুমে। কেউ কেউ সাহ্‌রির প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। এমন সময় শুরু হয় একের পর এক বোমা হামলা। ইসরায়েলি বাহিনীর সেই হামলায় হতাহত হতে থাকেন নারী-শিশুসহ সব বয়সী ফিলিস্তিনি। রাতের অন্ধকারে চলতে থাকে আহত রক্তাক্ত মানুষের আর্তচিৎকার আর আতঙ্কিত মানুষের দিগ্‌বিদিক ছোটাছুটি। যুদ্ধবিরতির মধ্যে আবার দুঃস্বপ্নের রাত ফিরে এল ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ এ উপত্যকায়।

১৫ মাস ধরে ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় ৪৮ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হওয়ার পর গাজাবাসীর মধ্যে কিছুটা স্বস্তি এনে দিয়েছিল যুদ্ধবিরতি। ধ্বংসস্তূপ থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা শুরু করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরামর্শ করে নতুন করে গাজায় হত্যাযজ্ঞ শুরু করেছে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকার। গত সোমবার মধ্যরাতের পরে ঘুমন্ত গাজাবাসীর ওপর এই হামলায় অন্তত ৪০৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

গাজার দক্ষিণের খান ইউনিস ও রাফা, উত্তরের গাজা নগর এবং মধ্যাঞ্চলের দেইর আল-বালাহসহ গাজার প্রায় সব জায়গায় যুদ্ধবিমান ও ড্রোন থেকে বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হামলায় অন্তত ৫৬২ ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। হতাহত ব্যক্তিদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু।

যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের বর্বরতম এ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে গাজার সশস্ত্র প্রতিরোধ সংগঠন হামাস। সংগঠনটি বলেছে, এই হামলার মধ্য দিয়ে ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ করেছে ইসরায়েল। নৃশংস এ হামলার প্রতিবাদ জানাতে আরব ও ইসলামিক দেশগুলোসহ ‘মুক্ত বিশ্বের মানুষদের’ সড়কে নেমে প্রতিবাদে শামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে হামাস।

ইসরায়েল দাবি করেছে, হামাস জিম্মিদের মুক্তি না দেওয়ায় এই হামলা চালানো হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছে, ইসরায়েল এখন থেকে আরও বেশি সামরিক শক্তি নিয়ে হামাসের ওপর হামলা চালাবে।

হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, গাজায় এ হামলার আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা করে ইসরায়েল।

যুদ্ধবিরতির মধ্যে গাজায় হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, ইসরায়েলের হামলা ফিলিস্তিনিদের জীবন অসহনীয় দুর্দশা বয়ে এনেছে। তিনি বলেন, ‘প্রথমত, যুদ্ধবিরতি পুরোপুরি মেনে চলতে হবে। দ্বিতীয়ত, গাজায় ত্রাণসহায়তা প্রবেশে বাধা দেওয়া যাবে না এবং তৃতীয়ত, নিঃশর্তে জিম্মিদের মুক্তি দিতে হবে।’

গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় প্রথম ধাপে ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। এর মেয়াদ শেষ হয় ২ মার্চ। যুদ্ধবিরতির মূল চুক্তিতে বলা ছিল, প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতি চলাকালে দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা হবে। যদি এর মধ্যেও দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতির শর্ত নিয়ে সমঝোতা না হয়, তাহলে প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতি চলবে।

এ ছাড়া প্রথম ধাপ শেষ হওয়ার পর ২ মার্চ যুদ্ধবিরতির মেয়াদ সাময়িকভাবে বাড়ানোর বিষয়ে অনুমোদন দেয় ইসরায়েলের সরকার। পবিত্র রমজান ও ইহুদিদের পাসওভার উৎসব এই মেয়াদকালের আওতায় পড়েছে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ২০ এপ্রিল পর্যন্ত যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ে। কিন্তু যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে সোমবার রাতে আবারও গাজায় নির্বিচার হামলা চালাল ইসরায়েল।

‘হাতে হাতে শিশুর ছিন্নবিচ্ছিন্ন দেহ’

ঘড়িতে তখন রাত ২টা ১০ মিনিট। মেয়ে বানিয়াসকে নিয়ে গভীর ঘুমে মারাম হুমাইদ দম্পতি। আচমকা যুদ্ধবিমান থেকে একের পর এক বোমা হামলার শব্দে ঘুম ভেঙে যায় বানিয়াসের। শিশুটির চোখেমুখে আতঙ্ক। চিৎকার করে কাঁদছিল আর বাবা-মাকে জিজ্ঞাসা করছিল, ‘বাবা! মা! কী হচ্ছে বাইরে?’

মারাম হুমাইদ বলেন, ‘মেয়ে শুয়ে ছিল আমার পাশে। তাকে কী বলব বুঝতে পারছিলাম না।’

দেইর আল-বালাহর বাসিন্দা মারার হুমাইদ বলেন, ‘এ অবস্থায় মেয়েকে কোলে জড়িয়ে ধরে তার বাবা। হামলার তীব্রতা আরও বাড়তে থাকে। বুঝতে পারছিলাম আবার ইসরায়েল হামলা শুরু করেছে।’

চারপাশে ইসরায়েলের নির্বিচার বোমা হামলার শব্দে ঘুম ভাঙে আহমেদ আবু রিজক ও তাঁর পরিবারের। গাজার এই স্কুলশিক্ষক বলেন, ‘আমরা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ি। শিশুরাও ভয়ে কুঁকড়ে গিয়েছিল। কিছুক্ষণের মধ্যেই বিভিন্ন সড়ক থেকে একের পর এক অ্যাম্বুলেন্স আসতে শুরু করে। দেখলাম লোকজন তাঁদের হাতে করে সন্তানদের ছিন্নবিচ্ছিন্ন দেহ নিয়ে আশপাশের হাসপাতালের দিকে ছুটে যাচ্ছে।’

মোমেন কোরেইকেহ নামে গাজার এক বাসিন্দা বলেন, সোমবার মধ্যরাতে ইসরায়েলের এই হামলায় নবজাতক, নারী-শিশুসহ পরিবারের ২৬ জন সদস্যকে হারিয়েছেন তিনি।

গাজায় আল-জাজিরার প্রতিনিধি তারেক আবু আজৌম জানান, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা, অস্থায়ী হাসপাতাল, আবাসিক ভবন—সর্বত্র বিমান থেকে বোমা হামলা চলছিল। হামলায় হামাসের কিছু শীর্ষ নেতাও নিহত হয়েছেন জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘যুদ্ধবিমান ও ড্রোন থেকে চালানো হামলার পর নবজাতক, শিশু, নারী ও প্রবীণ মানুষের অসাড় দেহ যত্রতত্র পড়ে থাকতে দেখা যায়।’

‘হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্র দায়ী’

হামাস বলেছে, ইসরায়েল এই নৃশংস হামলার মধ্য দিয়ে গত ১৯ জানুয়ারি শুরু হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি একতরফাভাবে বাতিল করেছে। ইসরায়েলির প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ও তাঁর চরমপন্থী সরকার যুদ্ধবিরতি চুক্তি উল্টে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর মধ্য দিয়ে গাজায় থাকা (ইসরায়েলি) বন্দীদের জীবনও অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দিচ্ছে তারা।

গাজার আরেক সশস্ত্র প্রতিরোধ সংগঠন ইসলামিক জিহাদ বলেছে, যুদ্ধবিরতির সব প্রচেষ্টা ভূলুণ্ঠিত করার অপচেষ্টার অংশ হিসেবে এ হামলা করেছে দখলদার ইসরায়েল।

যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে গাজায় নতুন করে ইসরায়েলের হামলা শুরুর জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে সরাসরি দায়ী করেছে ইরান। গতকাল দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে অব্যাহত হত্যাযজ্ঞের জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি দায়ী।’

ইসরায়েলি হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে কাতার, সৌদি আরব ও জর্ডান। গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মধ্যস্থতা করে আসা কাতার বলেছে, ইসরায়েলের এ হামলা পুরো মধ্যপ্রাচ্যকে অশান্তির ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দিয়েছে।

গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতাকারী দেশ মিসর বলেছে, ইসরায়েলের এই হামলা যুদ্ধবিরতি চুক্তির স্পষ্ট লঙ্ঘন।

ইসরায়েলের হামলায় চীন গভীরভাবে উদ্বিগ্ন বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং। সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে এমন পদক্ষেপ না নিতে দুই পক্ষকে আহ্বান জানিয়েছে বেইজিং। রুশ সরকারের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, ‘আমরা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।’

গতকাল হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারোলাইন লেভিট ফক্স নিউজকে বলেন, ‘গাজায় আজ (সোমবার) রাতের হামলার বিষয়ে আগেই ট্রাম্প প্রশাসন ও হোয়াইট হাউসের সঙ্গে আলোচনা করেছে ইসরায়েল।’ তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, হামাস, হুতি, ইরানসহ যারা শুধু ইসরায়েল নয়, যুক্তরাষ্ট্রেও ভীতি ছড়াতে চায়, তাদের এর মূল্য চুকাতে হবে। নরকের সব দরজা খুলে যাবে।’

যুদ্ধবিরতির আলোচনা বন্ধ

কয়েক মাসের আলোচনার পর মিসর, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। এ চুক্তির আওতায় ৩৮ জিম্মিকে মুক্তি দেয় হামাস। বিনিময়ে ইসরায়েলি কারাগার থেকে প্রায় ২ হাজার বন্দীকে মুক্তি দেওয়া হয়। প্রাথমিক এ যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষে দ্বিতীয় ধাপে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে কাতারের দোহায় বিবদমান পক্ষের সঙ্গে কাতার ও মিসরের আলোচনা চলছিল। সূত্রের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সোমবার রাতের হামলার পর যুদ্ধবিরতির আলোচনা বন্ধ হয়ে গেছে।

দেড় মাস ধরে আলোচনা চললেও যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ অর্থাৎ স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও গাজা থেকে সব সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে ইসরায়েল রাজি হচ্ছিল না। ইসরায়েল ও তাদের মিত্র যুক্তরাষ্ট্র চাচ্ছিল, প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়িয়ে গাজায় থাকা অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হোক।

কিন্তু হামাস বলে আসছিল, মূল চুক্তি অনুযায়ী দ্বিতীয় ধাপের স্থায়ী যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর করতে হবে। এর আওতায় ইসরায়েলি সব সেনাকে গাজা থেকে প্রত্যাহার করতে হবে। এর পরই বাকি জিম্মিদের ছেড়ে দেবে তারা।

হামাস এখনো মূল যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে চলতে চায় বলে গতকাল জানিয়েছেন সংগঠনটির মুখপাত্র আবদেল লতিফ। তিনি রয়টার্সকে বলেন, মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে এখনো তাঁদের যোগাযোগ রয়েছে। এখনো তাঁরা মূল চুক্তি পুরোপুরি কার্যকরের পক্ষে।

এদিকে গাজায় হামলার পর ইসরায়েল নিশানা করে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী এ তথ্য জানিয়ে বলেছে, ক্ষেপণাস্ত্র হামলা প্রতিহত করেছে তারা। যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেস্তে যাওয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) উদ্বিগ্ন বলে জানিয়েছেন ইউরোপের ২৭টি দেশের এই জোটের পররাষ্ট্রবিষয়ক প্রধান কাজা কালাস। তিনি বলেছেন, ইসরায়েলকে অবশ্যই গাজায় হামলা বন্ধ ও ত্রাণসহায়তা প্রবেশ করতে দিতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ