ঈদ মানেই নতুন জামা-কাপড় পরার সঙ্গে সঙ্গে নানা রকম খাবারের ধুম। ঈদের সকালে টেবিলে নানা পদের আয়োজন থাকলেও মিষ্টি জাতীয় খাবার থাকা চাই। ছোট-বড় সবার পছন্দের কয়েক পদের ডেজার্টের রেসিপি দিয়েছেন মিতা আজহার
গাজরের জর্দা
উপকরণ: গাজর কুচি ২ কাপ, চিনি ১ কাপ, ঘি ১ কাপ, দারচিনি ২ টুকরা, এলাচ ৪টি, তেজপাতা ১টি, বাদাম কুচি পরিমাণমতো।
প্রস্তুত প্রণালি: গাজর কুচি গরম পানিতে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। চুলায় ফ্রাইপ্যান বসিয়ে ঘি দিন। গরম হলে দারচিনি, এলাচ ও তেজপাতা দিয়ে গাজর কুচি দিয়ে নেড়েচেড়ে ভেজে নিন। এবার চিনি দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। চিনির পানি শুকিয়ে ঝরঝরে হয়ে গেলে নামিয়ে বাদাম কুচি দিয়ে পরিবেশন করুন মজাদার গাজরের জর্দা।
বাকলাভা
উপকরণ: লম্বা সেমাই ১ প্যাকেট, কনডেন্সড মিল্ক ১ টিন, ঘি ১ কাপ, বাদাম ৩ রকম– কাজু, আমন্ড ও পেস্তা ১ কাপ।
প্রস্তুত প্রণালি: প্রথমে চুলায় ফ্রাই প্যান বসিয়ে ঘি দিন। হালকা গরম হলে বাদাম কুচিগুলো ভেজে উঠিয়ে নিন। অন্য একটি পাত্র চুলায় বসিয়ে পেস্তা-কাজু-আমন্ড বাদামের সঙ্গে কনডেন্সড মিল্ক দিয়ে নেড়েচেড়ে পুর তৈরি করে নিন। এবার সেমাই ভেজে কনডেন্সড মিল্ক দিয়ে রান্না করে একটা ট্রেতে লম্বা করে বিছিয়ে দিন। একটু পরেই চাকু দিয়ে লম্বা লম্বা লাইন করে কেটে মাঝখানে ফাঁকা রেখে রোল করে নিন। ফাঁকার মধ্যে বাদামের পুর ভরে ওপরে পেস্তা বাদাম কুচি দিয়ে পরিবেশন করুন মজাদার বাকলাভা।
দুধ সেমাই
উপকরণ: লাচ্ছা সেমাই ১ প্যাকেট, তরল দুধ ১ লিটার, গুঁড়া দুধ ২ কাপ, চিনি ৩ টেবিল চামচ, দারচিনি ২ টুকরা, এলাচ ৪টি, তেজপাতা ১টি, ঘি ১ চা চামচ, বাদাম, কিশমিশ সাজানোর জন্য।
প্রস্তুত প্রণালি: প্রথমে একটি প্যান চুলায় বসিয়ে তরল দুধ জ্বাল করুন। চিনি দিয়ে নেড়েচেড়ে একটু ঘন করে গুঁড়া দুধ, দারচিনি, এলাচ ও তেজপাতা দিয়ে মিশিয়ে নিন। অন্য একটি ফ্রাইপ্যানে ঘি দিয়ে বাদাম, কিশমিশ একটু ভেজে নিন। একটি সার্ভিং ডিশে ১ প্যাকেট লাচ্ছা সেমাই ঢেলে তাতে জ্বাল করা দুধ দিয়ে ওপরে বাদাম, কিশমিশ দিয়ে পরিবেশন করুন মজাদার দুধ সেমাই।
ডিমের পুডিং
উপকরণ: ডিম ৮টি, তরল দুধ ২ কাপ, গুঁড়া দুধ ২ কাপ, চিনি দেড় কাপ, ভ্যানিলা এসেন্স ৫ ফোঁটা।
প্রস্তুত প্রণালি: প্রথমে একটি পাত্রে ডিম ফেটে নিন। এবার চিনি দিন। তারপর তরল দুধে গুঁড়া দুধ মিশিয়ে ঢেলে দিন। ভালো করে মিক্স করে নিন। ভ্যানিলা এসেন্স মিশিয়ে পুরো মিশ্রণ স্টিলের বাটিতে ঢেলে নিন। পানির ভাপে ৩০-৩৫ মিনিট ভাপ দিন। হয়ে গেলে নামিয়ে নিন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: তরল দ ধ
এছাড়াও পড়ুন:
টেসলা কতটা ‘মেড ইন আমেরিকা’
যুক্তরাষ্ট্রে এখন ব্যবসা নিয়ে অনেক আলাপ শোনা যাচ্ছে। কোন প্রতিষ্ঠান কতটা আমেরিকান, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। অন্য দেশের আমদানির ওপরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছেন। ডোনাল্ড ট্রাম্পের সহযোগী ইলন মাস্কের টেসলা গাড়ি এই সময় সবচেয়ে বেশি চাপের ওপরে রয়েছে। টেসলার বিভিন্ন কারখানায় যুক্তরাষ্ট্রের গাড়ি উৎপাদন করা হলেও অন্য সব দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে টেসলা বিভিন্ন যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করে বলে জানা যায়।
যুক্তরাষ্ট্রে টেসলার বিস্তৃত কারখানা নেটওয়ার্কের মাধ্যমে গাড়ি উৎপাদন করা হচ্ছে। ক্যালিফোর্নিয়ার ফ্রেমন্ট টেসলার প্রধান কারখানা। এখানে মডেল এস, মডেল ৩, মডেল এক্স এবং মডেল ওয়াইয়ের মতো গাড়ি সংযোজন করা হয়। নেভাদার গিগাফ্যাক্টরিতে প্যানাসনিকের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে একটি প্ল্যান্ট রয়েছে টেসলার। এখানে লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি সেল, পাওয়ারওয়াল ও মেগাপ্যাকের মতো শক্তি সঞ্চয়কারী পণ্য তৈরি করে টেসলা। টেক্সাসের গিগাফ্যাক্টরিতে সাইবারট্রাক এবং মডেল ওয়াই তৈরি করা হচ্ছে। নিউইয়র্কের গিগাফ্যাক্টরিতে প্রাথমিকভাবে সৌর প্যানেল উৎপাদনের জন্য প্রতিষ্ঠিত করা হলেও এখন জ্বালানির বিভিন্ন পণ্য ও উদ্ভাবন নিয়ে কাজ করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে টেসলার কারখানা রয়েছে। চীনের গিগাফ্যাক্টরি সাংহাই ২০১৯ সালে চালু হয়। এখানে মডেল ৩ ও মডেল ওয়াই নির্মাণ করা হচ্ছে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে টেসলার প্রথম কারখানা। এখানকার গাড়ি চীনের বাজারসহ ইউরোপ ও এশিয়ায় রপ্তানি করা হচ্ছে। জার্মানিতে আছে গিগাফ্যাক্টরি বার্লিন-ব্রান্ডেনবার্গ। ২০২২ সালে হওয়া এই ফ্যাক্টরিতে মডেল ওয়াই নির্মাণ করা হচ্ছে। জার্মান প্রকৌশল ও স্থায়িত্বের ওপর গুরুত্ব দিয়ে এই কারখানা চালু করা হয়। এখানে স্থানীয়ভাবে ব্যাটারি তৈরি করা হচ্ছে।
এ ছাড়া মেক্সিকো ও ভারতে টেসলার কারখানা চালুর কথা রয়েছে। কানাডায় টেসলার ব্যাটারি তৈরির ব্যবস্থা আছে। এখানে ৪৬৮০ ব্যাটারি সেল তৈরি হচ্ছে। এ ছাড়া যুক্তরাজ্য টেসলার ফ্যাক্টরি ভবিষ্যতে তৈরির কথা শোনা যায়। ব্যাটারি উপকরণের জন্য টেসলা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। লিথিয়াম, কোবাল্ট, গ্রাফাইট এবং নিকেলের জন্য চীনের গানফেং লিথিয়াম ও হুয়ায়ু কোবাল্টের মতো কোম্পানি টেসলার প্রধান সরবরাহকারী।
টেসলার লিথিয়াম সংগ্রহ করছে অস্ট্রেলিয়া থেকে। অস্ট্রেলিয়া বিশ্বের বৃহত্তম লিথিয়াম উৎপাদক। টেসলার পিলবারা মিনারেলস এবং মিনারেল রিসোর্সের মতো কোম্পানির সঙ্গে অংশীদারত্ব রয়েছে। নিকেল ও কোবাল্টের জন্য টেসলা পরিবেশবান্ধব উপায়ে কাঁচামাল সংগ্রহের জন্য কানাডার খনি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি সই করেছে। টেসলাকে ভ্যালে কানাডা কম কার্বনযুক্ত নিকেল সরবরাহ করে। কঙ্গো প্রজাতন্ত্র থেকে টেসলার জন্য কোবাল্ট সংগ্রহ করা হচ্ছে। টেসলা তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে এসব খনিজ উপাদান সংগ্রহ করছে।
টেসলার অটো যন্ত্রাংশ ও উপাদান বিশ্বের নানা দেশ থেকে সংগ্রহ করা হচ্ছে। ওয়্যারিং, প্লাস্টিকের যন্ত্রাংশ ও ধাতব উপাদান মেক্সিকো থেকে সংগ্রহ করা হচ্ছে। জার্মানির গিগাফ্যাক্টরি বার্লিন টেসলা মোটর এবং ড্রাইভ ইউনিটের জন্য উপাদান তৈরি করছে। টেসলা ও জাপানের প্যানাসনিক যৌথভাবে গিগাফ্যাক্টরি নেভাদায় ব্যাটারি সেল তৈরি করছে। এ ছাড়া জাপানের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ইলেকট্রনিকস ও সেন্সর ব্যবহার করে টেসলা। দক্ষিণ কোরিয়ার এলজি এনার্জি সলিউশন ও স্যামসাং এসডিআইয়ের কাছ থেকে টেসলা ব্যাটারি উপাদান ও ডিসপ্লে প্রযুক্তি গ্রহণ করছে। ভারতের টাটা অটোকম্প, সোনা কমস্টার ও ভারত ফোর্জের মতো কোম্পানি টেসলার ডিফারেনশিয়াল সিস্টেম এবং ছোট প্লাস্টিকের যন্ত্রাংশের মতো উপাদান সরবরাহ করে।
টেসলার গাড়িতে ব্যবহৃত বিরল মৃত্তিকা উপাদান ও বিশেষায়িত উপকরণ সংগ্রহ করা হচ্ছে ব্রাজিল থেকে। ইন্দোনেশিয়া থেকে নিকেল সংগ্রহ করা হচ্ছে। ইন্দোনেশিয়া বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় নিকেল উৎপাদকদের মধ্যে অন্যতম। টেসলা সুইডেন থেকে গ্রিন ইস্পাত ও বিরল মৃত্তিকা সংগ্রহ করছে।
সূত্র: সিএনবিসি, রয়টার্স, ন্যাসড্যাক