অভিযুক্তদের স্বপদে বহাল রেখেই দুর্নীতির তদন্ত
Published: 18th, March 2025 GMT
দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে নানা অনিয়মের তদন্ত চলছে ধীরগতিতে। অভিযুক্তদের স্বপদে বহাল রেখেই চলছে কার্যক্রম। একই সঙ্গে আদালতের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও খনি থেকে স্ক্র্যাপের মালপত্র ডেলিভারি দেওয়া হচ্ছে। এসব বিষয় নিয়ে দ্বিতীয় দফা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দিনাজপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ে অভিযোগ করেন শহরের বালুবাড়ী এলাকার জোবায়দুর রহমান।
৩ মার্চ বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম ও ব্যবস্থাপক সাফায়েত আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো করা হয়। এর আগে পেট্রোবাংলা, বিদ্যুৎ-জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, দুর্নীতি দমন কমিশন, উপকর কমিশনারসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করা হয়।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক পেট্রোবাংলার পরিচালক (পরিকল্পনা) আব্দুল মান্নান পাটওয়ারী বলেন, নতুন আরও অভিযোগ এসেছে। সব অভিযোগ তদন্ত করে একসঙ্গে প্রতিবেদন দেওয়া হবে। শিগগিরই প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। অভিযুক্তদের স্বপদে বহাল রেখে কেন তদন্ত করা হচ্ছে– প্রশ্নে তিনি বলেন, এটা মন্ত্রণালয়ের দেখার বিষয়। আমাদের দায়িত্ব তদন্ত করা। আমরা সেই কাজটি সঠিকভাবে করার চেষ্টা করছি।
দুর্নীতি দমন কমিশন দিনাজপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপপরিচালক আতাউর রহমান সরকার জানান, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির বিষয়ে বিভিন্ন অভিযোগ পেয়েছি। সেগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
জানা গেছে, গত ১৮ সেপ্টেম্বর খনিতে স্ক্র্যাপের মালপত্র বিক্রি নিয়ে দুর্নীতি, ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎ, উৎকোচের বিনিময়ে আউটসোর্সিং কর্মচারী হিসেবে ২৫ জনকে নিয়োগ, ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাবে অস্বাভাবিক লেনদেন, ব্যাংকে এফডিআর, প্রক্রিয়া ছাড়াই গাছ কেটে টাকা আত্মসাৎ করা ছাড়াও নানা অনিয়মের অভিযোগে প্রথম অভিযোগটি করা হয়েছে। এসব কাজে জড়িত ছিলেন খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম সরকার ও ব্যবস্থাপক সাফায়েত আলী। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ৭ নভেম্বর চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে পেট্রোবাংলা। কমিটিতে পেট্রোবাংলার পরিচালক (পরিকল্পনা) আব্দুল মান্নান পাটওয়ারীকে আহ্বায়ক, উপমহাব্যবস্থাপক (উৎপাদন ও বিপণন) ড.
এদিকে ২৬ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ স্ক্র্যাপের মালপত্র সরবরাহ না করতে আট সপ্তাহের স্থগিতাদেশ দেন। এর পরও ২৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মেট্রো-ট-১৮-৭২৯৯ নম্বরের একটি ট্রাকে ২৯ টন ৩৩০ কেজি স্ক্র্যাপ (লোহা) সরবরাহ করা হয়। এ-সংক্রান্ত কাগজপত্র এসেছে সমকালের কাছে।
অভিযোগের বিষয়ে জোবায়দুর রহমান জানান, গত ৭ নভেম্বর অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য পেট্রোবাংলা থেকে অফিস আদেশ হয়। পেট্রোবাংলার মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আমজাদ হোসেন স্বাক্ষরিত এ আদেশে ২০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়। তিন মাসেও তা আলোর মুখ দেখেনি। এর কারণ অভিযুক্তদের স্বপদে রেখেই তদন্ত চলছে। এদিকে নিষেধাজ্ঞার পরও স্ক্র্যাপের মালপত্র ডেলিভারি দেওয়া হচ্ছে। এসব কারণে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও দুদক কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
ব্যবস্থাপক সাফায়েত আলী মিয়া তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেন। একইভাবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এমডি প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম সরকার। তিনি বলেন, আমরা আদালতের আদেশ অনুসরণ করি। আইনজীবী যেভাবে পরামর্শ দেন, সেভাবেই কাজ করি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ক র য প র ম লপত র তদন ত কর সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
অ্যাপেক্স ওয়েভিংয়ের কারখানা এক মাস বন্ধ ঘোষণা
পুঁজিবাজারে এসএমই প্ল্যাটফর্মে তালিকাভুক্ত কোম্পানি অ্যাপেক্স ওয়েভিং অ্যান্ড ফিনিশিং মিলস লিমিটেডের কারখানার উৎপাদন এক মাসের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গ্যাস লাইন বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
রবিবার (১৩ এপ্রিল) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
তথ্য মতে, অ্যাপেক্স ওয়েভিং অ্যান্ড ফিনিশিং মিলস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত ১২ এপ্রিল অনুষ্ঠিত কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, ১৩ এপ্রিল থেকে ১২ মে পর্যন্ত গ্যাস লাইন বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে কারখানার উৎপাদন এক মাসের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এর ধারা ১৬ অনুযায়ী এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কারখানাটি ১৩ মে থেকে পুনরায় চালু হবে এবং উৎপাদন শুরু করবে।
কোম্পানিটি আরো জানায়, ব্যবস্থাপনা যদি বিভিন্ন উৎস থেকে প্রয়োজনীয় তহবিল সংগ্রহ করতে সক্ষম হয় তবে কারখানাটি লে-অফ সময়ের আগে পুনরায় চালু হবে। কিন্তু ব্যবস্থাপনা যদি এই সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় তহবিল সংগ্রহ করতে সক্ষম না হয়, তাহলে পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্তে লে-অফের সময় বাড়ানো হতে পারে।
ঢাকা/এনটি/ইভা