বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক শিক্ষার সুযোগ তৈরি করতে ব্রিটিশ কাউন্সিল তৎপর। এ জন্য তারা সরকারের স্পষ্ট নির্দেশিকা, প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা কার্যক্রম, আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অংশীদারত্ব মনোভাব চায়।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান এক্টিসের একটি গবেষণায় এই বিষয়টি উঠে এসেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর ফুলার রোডে ব্রিটিশ কাউন্সিল মিলনায়তনে ট্রান্সন্যাশনাল এডুকেশন (টিএনই) শীর্ষক এই গবেষণার প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন ব্রিটিশ কাউন্সিলের সাউথ এশিয়ার এডুকেশন ডিরেক্টর সালভাদর কারবাজাল লোপেজ।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক বলেন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে এগিয়ে গেছে। জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি তৈরি ও বৈশ্বিক শিক্ষা অংশীদারত্বের মাধ্যমে শিক্ষার ভবিষ্যৎ গঠনে ট্রান্সন্যাশনাল এডুকেশন যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে কাজ করে যাবে।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ বলেন, টিএনই একাডেমিক উৎকর্ষ ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধির সুযোগ সৃষ্টি করছে। এটা উভয় দেশের জন্যই উপকারি। উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়ন, জ্ঞানবিনিময় এবং এই খাতে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করবে।

বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষার ভবিষ্যৎ গঠনে টিএনই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করেন ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর স্টিফেন ফোর্বস। তিনি বলেন, প্রতিবেদনটি বাংলাদেশে টিএনই-এর প্রসারসংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা চিহ্নিত করতে সহায়ক হবে। এ ছাড়া যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা খাতে পারস্পরিক সহযোগিতার পথ সুগম করবে।

অনুষ্ঠানে ‘বাংলাদেশে ট্রান্সন্যাশনাল এডুকেশনের সম্ভাবনা ও সামাজিক মূল্য’ শীর্ষক একটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে অংশগ্রহণকারীরা তাঁদের মতামত তুলে ধরেন।

জাতিসংঘের নীতিমালা অনুযায়ী কাউকে বাদ না দিয়ে শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন রূপকল্পে টিএনই প্রোগ্রাম চালানোর আহ্বান জানান ইউজিসির সদস্য মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন।

এ সময় ব্রিটিশ কাউন্সিলের সাউথ এশিয়ার এডুকেশন ডিরেক্টর সালভাদর কারবাজাল লোপেজ বলেন, বাংলাদেশে টিএনই প্রোগ্রাম ঠিকমতো চালু করতে হলে সঠিক শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন জরুরি। যেমনটি ভারত কিংবা মালয়েশিয়া করেছে।

কর্মমুখী শিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, ‘গ্র্যাজুয়েটরা বর্তমান বাজারে চাকরি পাচ্ছেন না। বেকারত্ব বাড়ছে। আমাদের দরকার কর্মমুখী শিক্ষা।’

অনুষ্ঠানে টিএনই–২০২৫ অনুদান বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেন ব্রিটিশ কাউন্সিলের হেড অব এডুকেশন তৌফিক হাসান। প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ২৫ হাজার পাউন্ড করে অনুদান দেওয়া হবে।

অনুদানের আওতায় লিভারপুল জন মুরস ইউনিভার্সিটি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ভালনারেবিলিটি স্টাডিজ একসঙ্গে কাজ করবে। এ ছাড়া নটিংহাম ট্রেন্ট ইউনিভার্সিটি ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, বার্মিংহাম সিটি ইউনিভার্সিটি এবং আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশও একসঙ্গে কাজ করবে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়েছে।

এ ছাড়া রয়েল হলোওয়ে ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এবং কিল ইউনিভার্সিটি ও ফ্রেন্ডস ইন ভিলেজ ডেভেলপমেন্ট বাংলাদেশ (এফআইভিডিবি) যৌথভাবে কাজ করবে।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ব্রিটিশ কাউন্সিলের সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার (এডুকেশন) জাকিয়া শারমিন। প্যানেল আলোচনা পর্বটি পরিচালনা করেন ব্রিটিশ কাউন্সিলের ডিরেক্টর (প্রোগ্রাম) ডেভিড নক্স। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন অ্যাসোসিয়েশন অব প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিজ অব বাংলাদেশের সেক্রেটারি জেনারেল ইশতিয়াক আবেদিন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউন ভ র স ট অন ষ ঠ ন ক জ কর

এছাড়াও পড়ুন:

কুড়িগ্রামে বর্ষবরণে নানা আয়োজন

‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো’ গানের মধ্য দিয়ে কুড়িগ্রামে নানা আয়োজনে নতুন বছর ১৪৩২ বঙ্গাব্দকে বরণ করেছে নানা শ্রেণি পেশার মানুষ।

আজ সোমবার বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের আয়োজনে সকাল ৯টা থেকে শুরু হয় বর্ষবরণের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। এতে জেলা প্রশান, প্রচ্ছদ, হিজিবিজি, সরকারি কলেজ, উদীচী, এনসিটিএফ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জেলা বিএনপিসহ বিভিন্ন সংগঠন আলাদাভাবে শোভাযাত্রার আয়োজন করে।

জেলার ঐতিহ্য গরুর গাড়ি, পুতুল নাচ, চরের কৃষকদের নানা কথা উঠে আসে শোভাযাত্রার মোটিভগুলোতে। বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাটি জেলা শহরের কুড়িগ্রাম সরোবরে গিয়ে শেষ হয়। এছাড়াও সেখানে দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। পাশাপাশি কুড়িগ্রাম ইকো পার্কে পুতুল নাচ, ভেলাকোপা গ্রামে লাঠি খেলা, পাঁচগাছির ভেলুর বাজারে ঘোড়া খেলাসহ দিন্যবাপী বর্ষবরণের নানা আয়োজন জেলার বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠিত হবে। তবে বিগত কয়েকবছর ধরে জেলায় বৈশাখী মেলা না হওয়ায় কিছুটা অখুশি দেখা যায় জেলা শহরের বাসিন্দাদের মধ্যে।

জেলা শহরের বাসিন্দা হামিদুল হক বলেন, ‘প্রতিবছর কুড়িগ্রামে ধুম-ধাম করে বর্ষ বরণ হলেও, বিগত কয়েক বছর থেকে বৈশাখী মেলা হয় না, এটি হলে ভালো হতো।’

পুতুল নাচ দেখতে আসা জারা ইসলাম বলেন, ‘বাবার সঙ্গে প্রথম পুতুল নাচ দেখতে আসলাম, খুব ভালো লাগছে।’

হিজিবিজির সংগঠক রাজ্য জ্যোতি বলেন, ‘বর্ষ বরণের নানা আয়োজন কুড়িগ্রাম সরোবরে দিনব্যাপী চলবে। প্রশাসন থেকে সব ধরণের নিরাপত্তা দিচ্ছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ