নির্বাচন প্রক্রিয়া বিলম্বিত করতে সময়ক্ষেপণ করা হচ্ছে: রিপন
Published: 18th, March 2025 GMT
দেশ ও জাতি ভীষণ সংকট আর অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন। অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেছেন, সংস্কার নিয়ে সময় ক্ষেপণ করা হচ্ছে। কিছু কিছু গিনিপিককে একটু বড় জায়গায় পৌঁছানো, স্বাবলম্বিতা অর্জন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এটা একটি ষড়যন্ত্র। আমরা বলতে চাই, নির্বাচন প্রক্রিয়া বিলম্বিত না করে সোজাসুজি নির্বাচন করার জন্য যা যা করা দরকার সেই সংস্কারগুলো করেন।
মঙ্গলবার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে-আইইবি'তে এক দোয়া ও ইফতার মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন। খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা এবং পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে এক্স- জেসিডি ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (ইইবি) আয়োজিত এই দোয়া ও ইফতার মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক প্রকৌশলী শোয়েব বাসরী হাবলু। এতে অন্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আইইবির সভপাপতি প্রকৌশলী আ ন হ আখতার হোসেন ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা প্রকৌশলী খালেদ হাসান ফাহিম প্রমুখ।
অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টার বক্তব্য উদ্বৃত্ত করে আসাদুজ্জামন রিপন বলেন, তিনি (আইন উপদেষ্টা) কিছু ছাত্রকে বলেছেন বাবারা তোমরা আরও ৫-১০ বছর থেকে দেশটাকে ঠিক করে দিয়ে যাও। আরও ৫ বছর! কেন? এটা ছাত্রদের মাঝে স্বৈরাচারী মনোভাব ঢুকিয়ে দেওয়ার প্রবণতা। বিনা ভোটে বিনা নির্বাচনে জনগণের প্রতিনিধি ছাড়া একটি সরকার ৫/১০ বছর কি করে থাকে। এর আইনগত কোনো ভিত্তি নাই।
তিনি প্রশ্ন রাখেন, গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার ছাড়া দেশ পরিচালিত হওয়া সম্ভব হয় কিনা? একজন আইন উপদেষ্টা এটা কি করে বলেন, ভাবা যায়? কত বড় একটা ফেসিস্ট-আউট লুক। একটি ফেসিস্টকে তাড়িয়ে যদি আমরা আরেকটি ফ্যাসিবাদী ধারণা বহন করি! যদি একটি অনির্বাচিত সরকার ৫/১০ বছর থাকতে পারে-এই ধরণের আকাঙ্ক্ষা সৃষ্টি করে-আকাঙ্ক্ষাকে উসকে দেয়া এটা একটা জঘন্য অপরাধ। সরকার সংস্কার করে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করার কথা বলেছে।
রিপন বলেন, আমরা এমন সরকার ব্যবস্থা চাই-যা গণতান্ত্রিকপন্থায় নির্বাচিত হবে। কিন্তু তা না করে সরকার শুধু প্রধানমন্ত্রী পরপর দুই বার ক্ষমতায় থাকতে পারবে না এমন সংস্কারের কথা বলছে। এতে জনগণের লাভ কি। আমরা ৫ বছর পর কোনো মোঘল সম্রাট তৈরি করতে চাই না।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ উপদ ষ ট সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
সংস্কারের ১০৮টি সুপারিশের সঙ্গে একমত এবি পার্টি, দ্বিমত ৩২টিতে
বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের গুরুত্বপূর্ণ ১৬৬টি সুপারিশের মধ্যে ১০৮টি বিষয়ে একমত পোষণ করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে নিজেদের মতামত দিয়েছে এবি পার্টি। দলটি ৩২টি সুপারিশের বিষয়ে দ্বিমত এবং ২৬টি বিষয়ে আংশিক একমত জানিয়ে আজ সোমবার লিখিত মতামত কমিশনের কাছে জমা দেয়।
এবি পার্টির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়। পাঁচটি সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ ১৬৬টি সুপারিশের বিষয়ে মতামত চেয়ে ৬ মার্চ ৩৭টি রাজনৈতিক দল ও জোটের কাছে ‘স্প্রেড শিট’ (ছক আকারে) পাঠিয়েছিল ঐকমত্য কমিশন। ১৩ মার্চের মধ্যে তাদের মতামত জানাতে অনুরোধ করা হয়েছিল।
গতকাল ঐকমত্য কমিশন জানিয়েছিল, গতকাল পর্যন্ত ১১টি দল মতামত দিয়েছে।
এবি পার্টি জানায়, আজ লিখিত মতামত দেয় এবি পার্টি। পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, ভাইস চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল হক ও নাসরিন সুলতানা দলের পক্ষ থেকে ঐকমত্য কমিশনের কাছে মতামত জমা দেন। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষে মতামত গ্রহণ করেন কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ ও কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
এবি পার্টি জানায়, সংস্কারের সময়কাল ও বাস্তবায়নের উপায় হিসেবে সর্বমোট ৬টি প্রস্তাব দিয়েছিল ঐকমত্য কমিশন। এর মধ্যে একটি হলো ‘নির্বাচনের আগে অধ্যাদেশের মাধ্যমে’। এই পদ্ধতিতে সংবিধান সংশোধন বর্তমান সংবিধানের আলোকে অগ্রহণযোগ্য। বর্তমান সংবিধান স্থগিত বা বাতিল না করে অধ্যাদেশের মাধ্যমে সংবিধান সংশোধন করা বর্তমান সংবিধান সাপেক্ষে বেআইনি। তবে বর্তমান সংবিধান স্থগিত করে জুলাই বিপ্লবের চেতনার আলোকে প্রস্তাবিত সাংবিধানিক বিধানগুলো পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও পরিমার্জন করে নতুন সংবিধান পুনর্লিখন করা যেতে পারে। এ বিষয়ে অ্যটর্নি জেনারেলের মাধ্যমে আপিল বিভাগের কাছে সরকার অধিকতর সাংবিধানিক ব্যাখ্যা চাইতে পারে।
দলটি আরও বলেছে, অবশিষ্ট পাঁচটি প্রস্তাব সার্বিক বিবেচনায় দুরূহ ও সময়সাপেক্ষ বলে মনে করে এবি পার্টি। এই পরিস্থিতিতে এবি পার্টি সংস্কারের সময়কাল ও বাস্তবায়নের উপায় হিসেবে আইনি সম্ভাব্য জটিলতা থাকা সত্ত্বেও ‘নির্বাচনের আগে অধ্যাদেশের মাধ্যমে’ এই উপায়টিকে বেছে নিয়েছে। তা ছাড়া যেসব সুপারিশে সংবিধান সংশোধনের সম্ভাব্য উপাদান নেই, সেসব ক্ষেত্রে নির্বাচনের আগে অধ্যাদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা সবচেয়ে সহজসাধ্য বলে এবি পার্টি বিশ্বাস করে।