ঈদের আগে শ্রমিকদের চলতি মাসের কমপক্ষে ১৫ দিনের বেতন দিতে হবে: বিজিএমইএ
Published: 18th, March 2025 GMT
ঈদের আগে তৈরি পোশাকশ্রমিকদের বোনাস ছাড়াও চলতি মাসের কমপক্ষে ১৫ দিনের বেতন দিতে হবে বলে কারখানার মালিকদের আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। একই সঙ্গে সুযোগ থাকলে ঈদের দুই-তিন দিন আগে ছুটি দিতে কারখানার মালিকদের অনুরোধ করেছে সংগঠনটি।
বিজিএমইএর মহাসচিব মো. ফয়জুর রহমান আজ মঙ্গলবার সংগঠনের সদস্য কারখানার মালিকদের এক নোটিশে জানিয়েছেন, পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে শ্রম পরিস্থিতি এবং শিল্প খাতের শ্রমিকদের মজুরি, বোনাস ও ছুটিসংক্রান্ত বিষয় পর্যালোচনার জন্য ৬ মার্চ শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদের ৮৫তম সভা হয়। মালিক, শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধিসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত সভায় সিদ্ধান্ত হয়, ঈদের আগে পোশাকশিল্পের শ্রমিক-কর্মচারীদের মার্চ মাসের কমপক্ষে ১৫ দিনের মজুরি দিতে হবে। ফলে সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে কারখানার মালিকদের প্রতি অনুরোধ জানান সংগঠনের মহাসচিব।
বিজিএমইএর মহাসচিব পৃথক আরেকটি নোটিশে জানিয়েছেন, ঈদের ছুটিতে সড়ক, রেল ও লঞ্চযাত্রায় একই দিন বাড়তি যাত্রীর চাপ কমানোর জন্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তর থেকে ধাপে ধাপে শ্রমিকদের ঈদের ছুটি দিতে অনুরোধ করা হয়েছে। ফলে পণ্য জাহাজীকরণ (শিপমেন্ট), ক্রয়াদেশ ও উৎপাদনের সঙ্গে সমন্বয় করে সুযোগ থাকলে ঈদের দুই-তিন দিন আগে শ্রমিকদের ছুটি দেওয়ার অনুরোধ করা যাচ্ছে। শেষ কর্মদিবসে শ্রমিকেরা যাতে পণ্যবোঝাই ট্রাকে যাতায়াত না করেন, অতিরিক্ত যাত্রী না হন, অপরিচিত লোকের কাছ থেকে কিছু না খাওয়া ইত্যাদি বিষয়ে শ্রমিকদের সচেতন করতে কারখানা কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে কাজের চাপ কম থাকলে ঈদের শেষ কর্মদিবসের আগেই ছুটি দিতে কারখানার মালিকদের পরামর্শ দিয়েছেন নিট পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঈদের ছুটির আগে রপ্তানি পণ্য জাহাজীকরণের (শিপমেন্ট) চাপ থাকে। সে জন্য অধিকাংশ কারখানা শেষ কর্মদিবসে ছুটি দেয়। তবে কারও সুযোগ থাকলে আগেই শ্রমিকদের ছুটির দেওয়ার অনুরোধ করেছি। পাশাপাশি ছুটির আগে ঈদ বোনাস এবং চলতি মাসের মজুরি শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করে যতটুকু সম্ভব ততটুকু পরিশোধ করতে মালিকদের পরামর্শ দিয়েছি আমরা।’
ম্যাপড ইন বাংলাদেশের (এমইবি) ডিজিটাল মানচিত্র অনুযায়ী, দেশে ৩ হাজার ৫৫৫টি রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক কারখানা রয়েছে। এসব কারখানায় ৩০ লাখ ৫৩ হাজার শ্রমিক কাজ করেন।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ৩১ মার্চ পবিত্র ঈদুল ফিতর হতে পারে। সম্ভাব্য এই তারিখ ধরেই পাঁচ দিনের ছুটির তারিখ নির্ধারণ করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এই হিসাবে ২৯ মার্চ থেকে শুরু হচ্ছে ঈদুল ফিতরের পাঁচ দিনের ছুটি। অর্থাৎ ২৯, ৩০, ৩১ মার্চ এবং ১ ও ২ এপ্রিল থাকবে এই ছুটি। এর মধ্যে ঈদের দিন সাধারণ ছুটি। আর ঈদের আগের দুই দিন এবং পরের দুই দিন নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স গঠন
এছাড়াও পড়ুন:
নাটোরে টিসিবির পণ্য নিয়ে দফায় দফায় সংঘর্ষে আহত ১০
নাটোরে বড়াইগ্রামে টিসিবির পণ্য ভাগাভাগি নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছে। বিএনপির ওয়ার্ড কার্যালয়ে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার (১৫ মার্চ) বিকালে বড়াইগ্রাম উপজেলার নগর ইউনিয়নের ধানাইদহ বাজারে এ সংঘর্ষ ঘটে।
এতে আব্দুল্লাহ, রফিকুল ইসলাম, কালু মিয়া, আকাশ, শাহীনুর রহমান, ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি ফরহাদ হোসেন ও মিজানুর রহমানসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার দুপুর ২টার দিকে নগর ইউনিয়ন পরিষদে টিসিবির পণ্য বিতরণ চলছিল। এ সময় ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদ সরকারের নেতৃত্বে তার অনুসারীরা অবিক্রিত পণ্যগুলো ভাগাভাগি করে নেন। বিষয়টি জানতে পেরে নগর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মিল্টন হোসেন ও সাবেক ইউপি সদস্য আবুল হোসেন আবু লোকজনসহ পরিষদে গিয়ে এ ঘটনার প্রতিবাদ করেন এবং অবশিষ্ট পণ্যের অংশ দাবি করেন।
এ সময় কথা কাটাকাটির জের ধরে উভয় পক্ষই লাঠিসোটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের সরিয়ে দেয়। বিকাল চারটার দিকে মিল্টন হোসেন তার লোকজনসহ ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির কার্যালয়ে বসেছিলেন। এ সময় আসাদ সরকারের লোকজন পুনরায় চাইনিজ কুড়াল, হাসুয়া ও লাঠিসোটাসহ সেখানে গিয়ে ৬-৭ জনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করে। পরে তারা ওয়ার্ড বিএনপি অফিসের চেয়ার-টেবিলসহ ডেকোরেটর থেকে আনা চেয়ার ভাঙচুর করে চলে যায়।
এ ব্যাপারে বিএনপি নেতা আসাদ সরকার বলেন, “তারাই আমাদের ছেলেদেরকে মেরেছে, আর ওয়ার্ড বিএনপির অফিস আমরা ভাঙচুর করিনি। তারা নিজেরাই ভাঙচুর করে আমাদের দোষ দিচ্ছে।”
নগর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মিল্টন হোসেন বলেন, “টিসিবির পণ্য ভাগ করে নেওয়ার প্রতিবাদ করলে তারা হামলা করে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করে। এরপর আমরা বিএনপি অফিসে পূর্ব নির্ধারিত ইফতার মাহফিলের প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এ সময় তারা পুলিশের উপস্থিতিতে সশস্ত্র অবস্থায় অফিসে হামলা চালিয়ে ৬-৭ জনকে কুপিয়ে জখম করেছে এবং অফিসে ভাঙচুর করেছে।”
বড়াইগ্রাম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহবুবুর রহমান বলেন, “বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কেউ থানায় অভিযোগ করেনি।”
ঢাকা/আরিফুল/টিপু