নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিস্কৃত শিক্ষার্থী পেলেন গবেষণা প্রকল্প
Published: 18th, March 2025 GMT
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বহির্ভূতভাবে নজরুল ইন্সটিটিউটের গবেষণা প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে। এমনকি ওই গবেষণাকর্মের তত্ত্বাবধায়ক হয়েছেন তারই বিভাগের বিভাগীয় প্রধান।
ওই বহিস্কৃত শিক্ষার্থী হলেন, ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের গালিব ফয়সাল।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ইন্সটিটিউট অব নজরুল স্টাডিজে চূড়ান্তভাবে মনোনীত গবেষণা প্রকল্পের তালিকা প্রকাশ করলে এ তথ্য পাওয়া যায়।
তালিকার ১৪ নম্বরে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২ বছরের জন্য বহিস্কৃত ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থী গালিব ফয়সালের নাম। তার গবেষণা কর্মের তত্ত্বাবধায়ক হয়েছেন তারই বিভাগীয় প্রধান রায়হানা আক্তার।
বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকদের উপর হামলা এবং ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মারামারির ঘটনায় গত ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৭তম সিন্ডিকেট সভায় ২ বছরের জন্য বহিষ্কার হন গালিব। ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের বিভাগীয় প্রধান রায়হানা আক্তারের বিশেষ আনুকুল্যে ইতোমধ্যে তার শাস্তি কমানোর জন্য সিন্ডিকেটে আবেদনও করেছেন তিনি।
তার জন্য ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের স্নাতকোত্তর (তার ব্যাচের) সেমিস্টার পরিক্ষা পিছিয়ে রাখা হয়েছে বলেও অভিযোগ আছে।
আইন অনুযায়ী, বহিষ্কৃত শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো অ্যাকাডেমিক, প্রাতিষ্ঠানিক কিংবা আর্থিক সুবিধাপ্রাপ্তি কিংবা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবে না।
এ বিষয়ে ইংরেজি কথা বলতে ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও ওই শিক্ষার্থীর গবেষণাকর্মের তত্ত্বাবধায়ক রায়হানা আক্তারের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি।
ইনস্টিটিউট অব নজরুল স্টাডিজ এর পরিচালকের দায়িত্বে আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম। অতিরিক্ত পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন রাশেদুল আনাম।
এ বিষয়ে রাশেদুল আনাম তিনি বলেন, “বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের আগেই আমাদের এ তালিকাটি রিভিউ হয়েছিল, যার কারণেই তার নামটি এই তালিকায় এসেছে। তবে যারা শাস্তিপ্রাপ্ত তারা কোনোভাবেই গবেষণার জন্য অনুমোদন পাবে না। কালকের মধ্যেই আমরা এই তালিকাটি সংশোধন করে প্রকাশ করব।”
একই রকম বক্তব্য দিয়েছেন ইন্সটিটিউট অব নজরুল স্টাডিজ এর পরিচালক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.
ঢাকা/তৈয়ব/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য নজর ল
এছাড়াও পড়ুন:
ইউক্রেনে জ্বালানি অবকাঠামোতে হামলা বন্ধে পুতিনের সম্মতি
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দেড় ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ফোনালাপ করেছেন। ইউক্রেন যুদ্ধে শান্তি এবং যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে কথা বলেছেন তারা। উভয় নেতাই এই সংঘাতের সমাপ্তি টানতে স্থায়ী শান্তির বিষয়ে একমত হয়েছেন। তারা যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে উন্নত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের প্রয়োজনীয়তার ওপরও গুরুত্ব দিয়েছেন। কথোপকথনে ৩০ দিনের জন্য ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোয় হামলা বন্ধে ট্রাম্পের প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়েছেন পুতিন। ফোনালাপ শেষে এক বিবৃতিতে ক্রেমলিন জানিয়েছে, রুশ প্রেসিডেন্ট তাৎক্ষণিকভাবে দেশটির সামরিক বাহিনীকে এ-সম্পর্কিত আদেশও দিয়েছেন। পাশাপাশি কৃষ্ণসাগরে নৌ চলাচলের নিরাপত্তা সম্পর্কিত ট্রাম্পের প্রস্তাবেও গঠনমূলক প্রতিক্রিয়া জানান পুতিন।
গত জানুয়ারিতে ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের মধ্যে এটি দ্বিতীয় আলাপ। ফেনালাপে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যকার ৩০ দিনের প্রাথমিক যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনা আলোচনার মূল বিষয় হিসেবে মনে করা হয়েছিল। গত সপ্তাহে ইউক্রেন এই প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়েছিল। আলোচনায় পুতিন এই যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণ এবং ওই সময়ে ইউক্রেনের সেনা সংগ্রহ ও পুনরায় সশস্ত্র হওয়া রোধে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় উত্থাপন করেছেন। পুতিন এ সময় বলেছেন, সংঘাতের সমাধান সমন্বিত, টেকসই ও দীর্ঘমেয়াদি হতে হবে। এ ক্ষেত্রে রাশিয়ার নিরাপত্তা স্বার্থ ও যুদ্ধের মূল কারণগুলো বিবেচনায় নেওয়া প্রয়োজন।
হোয়াইট হাউস একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, ফোনালাপে দুই নেতা উল্লেখ করেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া উভয়েই এই যুদ্ধে প্রচুর সম্পদ ও প্রাণ হারিয়েছে, যা তাদের জনগণের কল্যাণে ব্যয় করা উচিত ছিল। এই সংঘাত কখনোই শুরু হওয়া উচিত ছিল না এবং এটি বহু আগেই আন্তরিক ও সদিচ্ছাপূর্ণ শান্তি প্রচেষ্টার মাধ্যমে শেষ হওয়া উচিত ছিল। তারা কৌশলগত অস্ত্রের বিস্তার এবং ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে উত্তেজনা বন্ধ করার বিষয়েও আলোচনা করেছেন। এ ছাড়া দুই নেতা একমত হয়েছেন, ইরান কখনোই এমন অবস্থানে থাকা উচিত নয়, যাতে তারা ইসরায়েলকে ধ্বংস করতে পারে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, উভয় নেতা বিশ্বাস করেন, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে উন্নত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। এতে বৃহৎ অর্থনৈতিক চুক্তি এবং ভূরাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জিত হবে, যখন শান্তি নিশ্চিত হবে।
পরে ক্রেমলিনও একটি বিবৃতি দিয়ে জ্বালানি অবকাঠামো সম্পর্কিত যুদ্ধবিরতির তথ্য নিশ্চিত করে। এতে বলা হয়েছে, আলোচনায় ট্রাম্প প্রস্তাব করেন ৩০ দিনের জন্য সংঘর্ষে থাকা পক্ষগুলোকে জ্বালানি অবকাঠামোয় আঘাত থেকে পারস্পরিকভাবে বিরত থাকতে হবে। পুতিন এই উদ্যোগের প্রতি ইতিবাচক সাড়া দেন এবং রুশ সেনাবাহিনীকে তা বাস্তবায়ন করতে নির্দেশ দেন। পাশাপাশি কৃষ্ণসাগরে নৌ চলাচলের নিরাপত্তা নিয়ে ট্রাম্পের একটি সুপরিচিত উদ্যোগ বাস্তবায়নের প্রস্তাবেও গঠনমূলকভাবে সাড়া দেন রুশ প্রেসিডেন্ট। উভয় নেতাই এই ধরনের চুক্তির সুনির্দিষ্ট বিবরণ আরও বিস্তারিত আলোচনা শুরু করার বিষয়ে একমত হয়েছেন।
ক্রেমলিনের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, সংঘাতের উত্তেজনা কমাতে এবং রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক উপায়ে এর সমাধান খুঁজতে বিদেশি সামরিক সহায়তা ও কিয়েভকে গোয়েন্দা তথ্য দেওয়া সম্পূর্ণ বন্ধ করা জরুরি।
এদিকে ট্রাম্প-পুতিনের ফোনালাপ নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি ইউক্রেন। এর আগে ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিহা মঙ্গলবার বলেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে শান্তিচুক্তির ক্ষেত্রে কিয়েভ বাধা নয়। তিনি বিশ্বাস করেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টের নেতৃত্বে তারা ন্যায্য ও স্থায়ী শান্তি অর্জন করতে পারবেন।