নতুন বাংলাদেশকে হাত ছাড়া করতে চাই না: বিএলডিপি চেয়ারম্যান
Published: 18th, March 2025 GMT
জাতীয় ঐক্য সমন্বয় পরিষদ প্রধান সমন্বয়কারী ও বিএলডিপির চেয়ারম্যান এম. নাজিম উদ্দিন আল-আজাদ বলেছেন, নতুন বাংলাদেশকে হাত ছাড়া করতে চাই না।
সোমবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে তিনি এ কথা বলেন। জাতীয় ঐক্য সমন্বয় পরিষদ কর্তৃক ১৯ দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার গণ অভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে জগদ্দল পাথরের ন্যায় জাতির ঘাড়ের ওপর জবরদস্তি চেপে বসে সম্পূর্ণ ফ্যাসিবাদী শাসনের মাধ্যমে এদেশের সকল রাজনৈতিক দলের কণ্ঠরোধ করে দেওয়া হয়েছিল। একইসঙ্গে গণ অভ্যুত্থান প্রতিহত করতে ফ্যাসিবাদী সরকারের দলীয় মন্ত্রী, এমপি, ছাত্র ও শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কায়দায় ছাত্র জনতা তথা বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীদের ওপর গুলিবর্ষণ, হত্যা, গুম, নির্যাতন, আয়নাঘরে রেখে অমানবিক নির্যাতনের মাধ্যমে তাদের মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে।
বিএলডিপি’র চেয়ারম্যান বলেন, দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে অসংখ্য ছাত্র গুরুতর আহত অবস্থায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। অনেকেই চিরস্থায়ী পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। অদ্যাবধি মাঝে মাঝে মৃত্যুর দুঃসংবাদও আমাদের কানে আসছে। সন্তান, স্বামী হারিয়ে মাতা ও গৃহবধূর আহাজারির আর্তনাদ নির্মল বায়ুকে বিষাক্ত করে তুলেছে। ছাত্র জনতার এ মহান আত্মত্যাগের মধ্যদিয়ে দীর্ঘ ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন হয়। শুরু হয় বৈষম্যমুক্ত সমাজ রাষ্ট্র গঠনের প্রক্রিয়া।
তিনি বলেন, জাতির এই ক্রান্তিকালে দেশের হাল ধরেন প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ গ্রামীণ আপামর বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর একান্ত আপনজন বিশ্ব বরেণ্য অর্থনীতিবিদ, নোবেল জয়ী প্রফেসর ড.
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান, জাতীয় ঐক্য সমন্বয় পরিষদের সমন্বয়কারী ও মিডিয়া উইং চিফ শেখ মোস্তাফিজুর রহমান। অনুষ্ঠানে জাতীয় ঐক্য সমন্বয় পরিষদ চেয়ারম্যানের পক্ষে ১৯ দফা দাবি পাঠ করেন জাতীয় ঐক্য পরিষদ এর সমন্বয়কারী প্রফেসর এ আর খান। এসময় অনুষ্ঠানে অন্যান্যর মধ্যে বিভিন্ন পার্টির চেয়ারম্যানরা উপস্থিত ছিলেন। তারা হলেন- লেবার পার্টির সেকেন্দার আল মনি, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের এ. আর. এম. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, স্বাধীন পার্টির মির্জা আজম, ফেডারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রফেসর এ আর খান, জাতীয় মুক্তি দল পার্টির এটিএম বীরমুক্তিযোদ্ধা মমতাজুল করিম, জনতা পার্টির এস এম মোস্তাফিজুর রহমান (মোস্তাক সরকার), জাতীয় স্বাধীনতা পার্টির মিজানুর রহমান মিজু, জাস্টিস পার্টির আবুল কাসেম মজুমদার, অ্যাপ্লাইড ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রিন্সিপাল এম আর করিম, পিপলস পার্টির মো. সিদ্দিকুর রহমান, স্বাধীন পার্টির ডা. মো. জুয়েল সম্রাট চিসতী, সিটিজেন পার্টির ড. আসলাম আল মেহেদী, ইসলামী সাম্যবাদী দল পার্টির মুফতি নুরুল আমিন, বি.আর.পি পার্টির মো. হারুন অর রশিদ হিরু, মানবাধিকার আন্দোলন পার্টির খাজা মহিবউল্লাহ শান্তিপুরী, স্বদেশ পার্টির মো. আনিছুর রহমান দেশ প্রমুখ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন র রহম ন সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
যে প্রলোভনে মিয়ানমারে দুই বছর জেল খাটলেন ২০ কিশোর–তরুণ
কারও বয়স ১৬, কারও ১৮ ছুঁই ছুঁই। দালালের প্রলোভনে পড়ে মালয়েশিয়ায় ভালো বেতনে চাকরি আর উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখেছিলেন তাঁরা। পরিবারকে না জানিয়েই রওনা দিয়েছিলেন অবৈধ বিপদসংকুল সাগরপথে। কিন্তু মিয়ানমারে পৌঁছেই আটক হন তাঁরা। তারপর অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে ২২ মাস কারাভোগ করেন।
অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে ২০২৩ সালের জুনে মিয়ানমারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক এসব কিশোর–তরুণ আজ মঙ্গলবার সকালে নৌবাহিনীর জাহাজে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছান। সেখান থেকে সন্ধ্যায় বাসে তাঁদের নেওয়া হয় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে। সেখানে অপেক্ষারত পরিবারের সদস্যদের কাছে তুলে দেওয়া হয় এসব কিশোর–তরুণকে।
সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসের সামনে বাস থেকে একে একে নামেন তরুণেরা। ছেলে কিংবা ভাইকে এত মাস পর কাছে পেয়ে দৌড়ে যান স্বজনেরা। কেউ কেউ কান্নায় ভেঙে পড়েন।
জানা গেছে, অসাধু দালালেরা এসব কিশোর–তরুণকে মালয়েশিয়ায় পাচারের চেষ্টা করেছিল। পথে মিয়ানমারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তাঁরা আটক হন। তাঁদের বাংলাদেশি নাগরিকত্ব যাচাইয়ের পর মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা শুরু করে সরকার। এরপর বাংলাদেশ দূতাবাস তাঁদের প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা করে।
অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ফিরে আসা কিশোর–তরুণেরা কক্সবাজার জেলার টেকনাফ ও উখিয়া অঞ্চলের বাসিন্দা। মালয়েশিয়া যাত্রার কথা কেউ পরিবারকে জানাননি। প্রায় এক মাস পর স্বজনেরা জানতে পারেন তাঁরা আটক হয়েছেন। এক বছর আগে সরকারের কাছে তাঁদের ফিরিয়ে আনতে কাগজপত্র জমা দেয় পরিবার।
ফিরে আসা এক কিশোরের বোনের স্বামী আবদুল্লাহ বলেন, ‘পরিবারকে না জানিয়েই আমার শ্যালক দালালের খপ্পরে পড়ে মালয়েশিয়া যেতে চেয়েছিল। সে মিয়ানমারে আটক হয়। প্রায় এক মাস পর আমরা জানতে পারি। এখন সে পরিবারের কাছে ফিরে এসেছে।’
কিশোর–তরুণদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘তথ্য যাচাই করে তাঁদের বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। আমরা তাঁদের পরিবারের জিম্মায় হস্তান্তর করেছি।’
এর আগে গত রোববার মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন শহরের এমআইটিটি বন্দর থেকে ২০ বাংলাদেশি নাগরিক বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজ বিএনএস সমুদ্র অভিযানে বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা করেন। আজ সকালে জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছায়।