রমজান মাসে সবারই চিন্তা থাকে কীভাবে একই সঙ্গে স্বাস্থ্যকর এবং মুখরোচক খাবার তৈরি করা যায়। আবার ঈদে বাসার সবাইকে এবং অতিথিদেরকে মিষ্টিমুখ তো করাতেই হবে। এ রকম চাহিদায় দুধ হয়ে উঠতে পারে মজাদার সব খাবার তৈরিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। শুধুমাত্র ঐতিহ্যবাহী খাবারই নয়, দেশ বিদেশের হরেক রকম নতুন খাবার তৈরি করা সম্ভব দুধ দিয়ে। আর এজন্যই ইদানিং স্বাস্থ্য সচেতন খাদ্যরসিকরা ঝুঁকছে নানাবিধ সৃজনশীল খাবারের তৈরির দিকে।
 
খাদ্যরসিকদের নিত্য নতুন খাবারের ধারণা দিতে পিছিয়ে নেই ফুড ইনফ্লুয়েন্সাররাও। ডানো কিচেন এর মতো অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোতে তাদের রয়েছে সাবলিল পদচারণা। তাদের অভিনব সব খাবারের রেসিপি বিশেষ করে দুধ ব্যবহার করে তৈরি খাবারের রেসিপি সব রুচির মানুষকেই আগ্রহী করছে। দেশের বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী মিষ্টিসহ তারা তৈরি করছে নানা ধরনের স্মুদি বা মিল্কশেক। আর ইফতারের জন্য নানা ধরনের মুখরোচক খাবার কিংবা পানীয় দিয়ে তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন আইডিয়ার আদান প্রদান।   

ইনফ্লুয়েন্সাররা খাবার বা পানীয়র জন্য নানা ধরনের নতুন এবং অভিনব উপাদানও শেয়ার করছেন। বিভিন্ন মিষ্টান্ন বা অন্যান্য খাবার তৈরির জন্য সম্প্রতি নতুন পাউডার দুধের ব্র্যান্ড ‘ডানো ডিলাইট’ নিয়ে হোম-কুক এবং শেফদের মধ্যে চলছে বিস্তর আলোচনা। এটি দিয়ে তারা আইসক্রিম, পুডিং কিংবা মজাদার গ্যানাশে তৈরি করে তাদের কন্টেন্ট ও মতামত শেয়ার করছেন।

‘ডেকোর আপা’ হিসেবে জনপ্রিয় ফুড ইনফ্লুয়েন্সার হালিমা তুজ সাদিয়া বলেন, ‘কে বলে স্বাস্থ্যকর রেসিপি দিয়ে তৈরি খাবার মজাদার হয় না? ডানো ব্যবহার করে আমি একইসাথে মজাদার এবং স্বাস্থ্যকর সব খাবার তৈরি করছি।’

শুধু রেসিপিই নয়, ডানো কিচেন বিভিন্ন আইডিয়া নিয়ে আদান প্রদানের জন্যও খুব চমৎকার একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে গড়ে উঠছে। দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফুড ইনফ্লুয়েন্সার এবং তাদের ফলোয়ারদের মধ্যেও তৈরি হচ্ছে একটি অপূর্ব বন্ধন। ফুড ইনফ্লুয়েন্সারদের শেয়ার করা আইডিয়াগুলো ব্যবহার করে বাকিরা শুধুমাত্র তাদের নিজেদের রান্নার অভিজ্ঞতাই উন্নত করছেন না, তারা নিজেরাই উৎসাহ পাচ্ছেন নতুন কিছু করার এবং অন্যদেরকেও উৎসাহ দিচ্ছেন। খাবার রান্না নিয়ে যদি কারো কোন দ্বিধা সৃষ্টি হয়, সেগুলো নিয়েও সৃজনশীল আলোচনা হয় ডানো কিচেন প্ল্যাটফর্মটিতে।

‘সাফওয়ানস কিচেন’ এর জনপ্রিয় শেফ সাফওয়ান জানান, ‘রান্নার প্রতি আমার অসীম আগ্রহের কারণেই আমি ডানো কিচেন নিয়মিত ফলো করি। পুষ্টিকর ও মান সম্মত খাবার তৈরিতে এই প্ল্যাটফর্মটির সবার আগ্রহ আমাকেও উৎসাহ দেয় ঐতিহ্যবাহী খাবারের পাশাপাশি বিভিন্ন ফিউশন খাবার তৈরি করতে।’

পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই দুধ দিয়ে বিভিন্ন খাবার রান্নার চল রয়েছে আদিকাল থেকে। প্রাথমিকভাবে দুধ শুধুমাত্র পানীয় হিসেবে ব্যবহৃত হলেও পরবরর্তীতে তা বিভিন্ন খাবারের রেসিপিতে ও পরিশীলিত রান্নায় প্রধান উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। পশ্চিমা সভ্যতায় বিভিন্ন খাবারে ভিন্ন মাত্রা নিয়ে আসতে দুধ ব্যবহার করে তৈরি করা হয় সস, স্যুপ কিংবা বিভিন্ন ধরনের স্টিউ। আর বিভিন্ন প্রকারের রুটি কিংবা কেক তৈরিতে করতে দুধ একেবারেই অপরিহার্য। 

বিভিন্ন ধরনের ডেজার্ট তৈরিতে দুধের ব্যবহার না থাকলেই নয়। দেশীয় ফিরনি-পায়েস, মিষ্টি বা পিঠা-পুলি থেকে শুরু করে ইতালীয় জেলাটো, ফরাসি ক্রেম ব্রুলে এবং আমেরিকান চিজকেক তৈরিতে প্রধান উপাদান হচ্ছে দুধ।

আর এই খাবারগুলোই রমজান মাসে ইফতারিতে কিংবা ঈদে অতিথি আপ্যায়নে হয়ে উঠছে অতুলনীয়। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ফ ড ইনফ ল য় ন স র প ল য টফর ম ব যবহ র কর র জন য উপ দ ন ধরন র

এছাড়াও পড়ুন:

ইউক্রেনে জ্বালানি অবকাঠামোতে হামলা বন্ধে পুতিনের সম্মতি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দেড় ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ফোনালাপ করেছেন। ইউক্রেন যুদ্ধে শান্তি এবং যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে কথা বলেছেন তারা। উভয় নেতাই এই সংঘাতের সমাপ্তি টানতে স্থায়ী শান্তির বিষয়ে একমত হয়েছেন। তারা যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে উন্নত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের প্রয়োজনীয়তার ওপরও গুরুত্ব দিয়েছেন। কথোপকথনে ৩০ দিনের জন্য ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোয় হামলা বন্ধে ট্রাম্পের প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়েছেন পুতিন। ফোনালাপ শেষে এক বিবৃতিতে ক্রেমলিন জানিয়েছে, রুশ প্রেসিডেন্ট তাৎক্ষণিকভাবে দেশটির সামরিক বাহিনীকে এ-সম্পর্কিত আদেশও দিয়েছেন। পাশাপাশি কৃষ্ণসাগরে নৌ চলাচলের নিরাপত্তা সম্পর্কিত ট্রাম্পের প্রস্তাবেও গঠনমূলক প্রতিক্রিয়া জানান পুতিন।

গত জানুয়ারিতে ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের মধ্যে এটি দ্বিতীয় আলাপ। ফেনালাপে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যকার ৩০ দিনের প্রাথমিক যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনা আলোচনার মূল বিষয় হিসেবে মনে করা হয়েছিল। গত সপ্তাহে ইউক্রেন এই প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়েছিল। আলোচনায় পুতিন এই যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণ এবং ওই সময়ে ইউক্রেনের সেনা সংগ্রহ ও পুনরায় সশস্ত্র হওয়া রোধে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় উত্থাপন করেছেন। পুতিন এ সময় বলেছেন, সংঘাতের সমাধান সমন্বিত, টেকসই ও দীর্ঘমেয়াদি হতে হবে। এ ক্ষেত্রে রাশিয়ার নিরাপত্তা স্বার্থ ও যুদ্ধের মূল কারণগুলো বিবেচনায় নেওয়া প্রয়োজন। 

হোয়াইট হাউস একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, ফোনালাপে দুই নেতা উল্লেখ করেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া উভয়েই এই যুদ্ধে প্রচুর সম্পদ ও প্রাণ হারিয়েছে, যা তাদের জনগণের কল্যাণে ব্যয় করা উচিত ছিল। এই সংঘাত কখনোই শুরু হওয়া উচিত ছিল না এবং এটি বহু আগেই আন্তরিক ও সদিচ্ছাপূর্ণ শান্তি প্রচেষ্টার মাধ্যমে শেষ হওয়া উচিত ছিল। তারা কৌশলগত অস্ত্রের বিস্তার এবং ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে উত্তেজনা বন্ধ করার বিষয়েও আলোচনা করেছেন। এ ছাড়া দুই নেতা একমত হয়েছেন, ইরান কখনোই এমন অবস্থানে থাকা উচিত নয়, যাতে তারা ইসরায়েলকে ধ্বংস করতে পারে। 

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, উভয় নেতা বিশ্বাস করেন, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে উন্নত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। এতে বৃহৎ অর্থনৈতিক চুক্তি এবং ভূরাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জিত হবে, যখন শান্তি নিশ্চিত হবে। 

পরে ক্রেমলিনও একটি বিবৃতি দিয়ে জ্বালানি অবকাঠামো সম্পর্কিত যুদ্ধবিরতির তথ্য নিশ্চিত করে। এতে বলা হয়েছে, আলোচনায় ট্রাম্প প্রস্তাব করেন ৩০ দিনের জন্য সংঘর্ষে থাকা পক্ষগুলোকে জ্বালানি অবকাঠামোয় আঘাত থেকে পারস্পরিকভাবে বিরত থাকতে হবে। পুতিন এই উদ্যোগের প্রতি ইতিবাচক সাড়া দেন এবং রুশ সেনাবাহিনীকে তা বাস্তবায়ন করতে নির্দেশ দেন। পাশাপাশি কৃষ্ণসাগরে নৌ চলাচলের নিরাপত্তা নিয়ে ট্রাম্পের একটি সুপরিচিত উদ্যোগ বাস্তবায়নের প্রস্তাবেও গঠনমূলকভাবে সাড়া দেন রুশ প্রেসিডেন্ট। উভয় নেতাই এই ধরনের চুক্তির সুনির্দিষ্ট বিবরণ আরও বিস্তারিত আলোচনা শুরু করার বিষয়ে একমত হয়েছেন। 

ক্রেমলিনের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, সংঘাতের উত্তেজনা কমাতে এবং রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক উপায়ে এর সমাধান খুঁজতে বিদেশি সামরিক সহায়তা ও কিয়েভকে গোয়েন্দা তথ্য দেওয়া সম্পূর্ণ বন্ধ করা জরুরি।
 
এদিকে ট্রাম্প-পুতিনের ফোনালাপ নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি ইউক্রেন। এর আগে ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিহা মঙ্গলবার বলেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে শান্তিচুক্তির ক্ষেত্রে কিয়েভ বাধা নয়। তিনি বিশ্বাস করেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টের নেতৃত্বে তারা ন্যায্য ও স্থায়ী শান্তি অর্জন করতে পারবেন। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ