‘প্রজন্মের বন্ধনের মধ্য দিয়ে বিশ্ব মানবতার কল্যাণ’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) বিশ্ব সমাজকর্ম দিবস পালিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ বিভাগের উদ্যোগে দিবসটি পালিত হয়েছে।

দিবসটি উপলক্ষে বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ ভবন প্রাঙ্গণ থেকে র‍্যালি বের করা হয়। র‍্যালিটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রশাসন ভবন চত্বরে সংক্ষিপ্ত সভায় মিলিত হয়। সভা শেষে বিভাগটির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পালন করেন।

আরো পড়ুন:

ইবিতে গ্রিন ফোরামের আলোচনা সভা 

বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি নিয়ে বিএনপিপন্থি শিক্ষকের গবেষণা, অতঃপর.

..

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম, প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান, সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. ফকরুল ইসলাম, বিভাগটির সভাপতি আসমা সাদিয়া রুনা, বিভাগটির শিক্ষক হাবিবুর রহমান, শ্যাম সুন্দর সরকার প্রমুখ।

সভায় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী বলেন, “মানব ইতিহাসে মানবের বিচরণ ঘটে হজরত আদম ও হাওয়ার (আ.) মাধ্যমে। সেখান থেকেই মানব ইতিহাসের শুরু। আগে আমাদের বাবা-মা-ভাই-বোন মিলে পরিবার মিলে পরিবার তৈরি হয়। এর মাধ্যমেই সমাজ তৈরি হয়। আল্লাহ ঈদ, জুমুয়ার মাধ্যমে একটি সমাজের মিলন ঘটিয়েছেন। আবার পবিত্র হজ্জের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী মানুষের মিলন ঘটিয়েছেন।”

তিনি বলেন, “তবে পূর্বের যৌথ পরিবার ব্যবস্থা হ্রাস পেয়েছে। এর মাধ্যমে সামাজিক বন্ধন ভেঙে যায়নি। আমাদের চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুবিধা সব স্থরের মানুষের মাঝে পৌছে দিতে হবে। তাহলে আমাদের সামাজিক দায়িত্ববোধ সম্পন্ন হবে।”

প্রতি বছর মার্চ মাসের তৃতীয় মঙ্গলবার সমাজকর্মের প্রচার, প্রসার ও মানব সম্পর্কের উন্নয়নে বিশ্বব্যাপী পালন করা হয় বিশ্ব সমাজকর্ম দিবস।

ঢাকা/তানিম/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

নড়াইলে চুন-সুরকির গোয়ালবাথান মসজিদ গরমে দেয় ঠান্ডার প্রশান্তি

শ্যামল প্রকৃতির মধ্যে একটুকরা ঐতিহ্যের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে একটি মসজিদ। প্রায় সাড়ে চার শ বছরের পুরোনো মসজিদটির অবস্থান নড়াইল সদর উপজেলার গোয়ালবাথান গ্রামে। চুন–সুরকির গাঁথুনিতে তৈরি গোয়ালবাথান মসজিদটিতে মোগল স্থাপত্যশৈলীর নান্দনিক ছোঁয়া স্পষ্ট। সুনিপুণ একটি গম্বুজ, সুগঠিত ছোট চারটি মিনার আর দেয়ালের অসাধারণ কারুকাজ।

ছোটবেলা থেকে এই মসজিদে নিয়মিত নামাজ আদায় করা সত্তরোর্ধ্ব মো. সুলতান কাজী বলেন, ‘আমি ছোটবেলা থেকে এই মসজিদে নামাজ পড়ি। চুন-সুরকি দিয়ে বানানো হওয়ায় মসজিদের ভেতরে গরমের সময় ঠান্ডা ও ঠান্ডার সময় গরম অনুভূত হয়। ভেতরে ঢুকলেই প্রশান্তি লাগে।’

মসজিদটির দৈর্ঘ্য ৫০ ফুট ও প্রস্থ ৩৫ ফুট। নিয়মিত ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় হয়। মূল মসজিদের ভেতরে একসঙ্গে তিন কাতারে নামাজ আদায় করা সম্ভব। তবে সময়ের পরিক্রমায় মুসল্লির সংখ্যা ক্রমে বাড়তে থাকায় মসজিদের সঙ্গে নতুন করে একটি অংশ সংযোজন করা হয়েছে, যাতে আরও বেশি মানুষ স্বাচ্ছন্দ্যে ইবাদত করতে পারেন। মসজিদের পাশেই আছে শানবাঁধানো পুকুরঘাট, এখানে বসেই অজু সম্পন্ন করেন মুসল্লিরা।

মোগল আমলে মুন্সী হয়বৎউল্লাহ নামের একজন মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন বলে প্রচলিত আছে। তাঁর বংশধরেরা এখনো মসজিদটি দেখভাল করেন।

প্রতিনিয়ত দূরদূরান্ত থেকে নামাজ আদায় করতে এবং মসজিদটি একনজর দেখতে ভিড় করেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। তাঁদের একজন নড়াইল শহরের ভওয়াখালী এলাকার বাসিন্দা মো. তরিকুল ইসলাম। গোয়ালবাথান গ্রামে তাঁর একটি ইটভাটা আছে। মাঝেমধ্যে এখানে আসা হয় তাঁর। তিনি বলেন, ‘শুনেছি, এই মসজিদের বয়স ৪৫০ বছর। এই এলাকায় এলেই আমি ঐতিহ্যবাহী এই মসজিদে নামাজ পড়ি। এখানে নামাজ পড়ে খুবই শান্তি লাগে।’

মোগল আমলে মুন্সী হয়বৎউল্লাহ নামের একজন মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন বলে প্রচলিত আছে। তাঁর বংশধরেরা এখনো মসজিদটি দেখভাল করেন। তাঁরা বলেন, টিভি ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মসজিদের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দর্শনার্থীরা এখানে আসেন। দর্শনার্থীদের জন্য বসার বেঞ্চ বা বিশ্রামাগার নির্মাণ করা জরুরি। এ ছাড়া মসজিদের ইমামের থাকার জন্য একটি ঘর প্রয়োজন। মসজিদে আসার ১০০ ফুট কাঁচা রাস্তা বৃষ্টির সময় কাদা হয়ে যায় বলে পাকা করা দরকার।

আমি ছোটবেলা থেকে এই মসজিদে নামাজ পড়ি। চুন-সুরকি দিয়ে বানানো হওয়ায় মসজিদের ভেতরে গরমের সময় ঠান্ডা ও ঠান্ডার সময় গরম অনুভূত হয়। মো. সুলতান কাজী, মুসল্লি

মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক এইচ এম তৈয়বুর রহমান বলেন, এটি যশোর-খুলনা অঞ্চলের প্রাচীন একটি মসজিদ। কিন্তু ঐতিহ্যবাহী মসজিদটি এখনো প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আওতায় আসেনি। প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ তাদের আওতায় নিয়ে মসজিদটি দেখভাল করবে, এমনটাই আশা তাঁদের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ