দৈনিক কালের কণ্ঠের সহকারী সম্পাদক আলী হাবিব মারা গেছেন। আজ মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
কালের কণ্ঠে আলী হাবিবের একজন সহকর্মী প্রথম আলোকে বলেন, আজ বিকেলে অফিসে দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। সহকর্মীরা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে রাত পৌনে আটটার দিকে তিনি মারা যান। তাঁর বয়স হয়েছিল ৬১ বছর। আজ রাতে কালের কণ্ঠের অফিস প্রাঙ্গণে তাঁর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। জানাজা শেষে রাতে তাঁর মরদেহ ঝিনাইদহের গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হবে।
আলী হাবিব ১৯৬৪ সালে ঝিনাইদহে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৯৩ সালে দৈনিক জনকণ্ঠে সম্পাদকীয় সহকারী হিসেবে যোগ দেন। পরে ২০০১ সাল থেকে সহকারী সম্পাদক ও ফিচার বিভাগের প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ‘রঙ্গভরা বঙ্গদেশ’ ও ‘ঝিলিমিলি’ ফিচার পাতার বিভাগীয় সম্পাদক ছিলেন তিনি। ২০০৯ সালের সেপ্টেম্বর থেকে তিনি দৈনিক কালের কণ্ঠে কর্মরত ছিলেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
প্রাণ গোপালের চিকিৎসক মেয়েকে হেনস্তার চেষ্টার ঘটনায় জিডি
বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (সাবেক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়-বিএসএমএমইউ) শিক্ষক অনিন্দিতা দত্তকে হেনস্তার চেষ্টার ঘটনায় শাহবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। আজ সোমবার তিনি নিজেই এই জিডি করেন।
অনিন্দিতা দত্ত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এবং আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্তের মেয়ে। তিনি রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। এ ঘটনার পেছনে বাবা প্রাণ গোপাল দত্তের নির্বাচনী এলাকা কুমিল্লার চান্দিনার বাসিন্দা সজল কুমার করের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন অনিন্দিতা দত্ত।
জিডিতে বলা হয়, গতকাল রোববার দুপুরে সজল কুমার কর নামের এক ব্যক্তির নেতৃত্বে কতিপয় দুষ্কৃতকারী অনিন্দিতাকে তাঁর বিভাগের নিচতলার পাশের সড়কে দাঁড় করিয়ে তাঁদের সঙ্গে যেতে বলেন, অন্যথায় গ্রেপ্তারের হুমকি দেন। এমন অবস্থায় তিনি দ্রুত নিজ বিভাগে প্রবেশ করেন। সহকর্মী শিক্ষক, চিকিৎসক, কর্মচারী ও আনসার সদস্যদের সহায়তায় তিনি বিভাগের চেয়ারম্যানের কক্ষে অবস্থান নেন। সহকর্মীরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও প্রক্টরসহ অন্য কর্মকর্তারা আসেন। এ সময় অনেক বহিরাগত সেখানে এসে মব সৃষ্টি করে তাঁকে শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনস্তা করার চেষ্টা করে। পরে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে। পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে সেনাবাহিনী তাঁকে উদ্ধার করে নিরাপদ গন্তব্যে পৌঁছে দেয়।
অনিন্দিতা দত্ত গতকাল প্রথম আলোকে বলেছিলেন, সজল কর এবং একটি রাজনৈতিক দলের ছাত্রসংগঠনের সেগুনবাগিচা ও শাহবাগ থানার নেতারা ঘটনার পেছনে আছেন। ৫ আগস্টের পর থেকে সজল কর তাঁদের পরিবারকে নানাভাবে নাজেহাল করার পাশাপাশি অর্থ দাবি করে আসছেন।
সজল কর পেশায় একজন আয়কর আইনজীবী। তিনি গতকাল প্রথম আলোকে বলেছিলেন, অনিন্দিতা তাঁকে যেতে বলায় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিংয়ে গিয়েছিলেন। যাওয়ার সময় সেগুনবাগিচা এলাকার একজনকে সঙ্গে নিয়েছিলেন। তবে ওই ব্যক্তির রাজনৈতিক পরিচয় সজল করের জানা নেই।
তবে অনিন্দিতা বলেন, সজল করকে তিনি কোনো দিন দেখেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার কথাও তাঁকে বলেননি।
সজল করের বাড়ি কুমিল্লার চান্দিনা এলাকায়। ওই এলাকার সংসদ সদস্য ছিলেন প্রাণ গোপাল দত্ত। সজল কর প্রথম আলোকে বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার সময় তিনি নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর তিনি প্রাণ গোপাল দত্তের নামে পাঁচটি মামলা করেছেন। কোনোটিতে অনিন্দিতা দত্তের নামও আছে। সমঝোতার ব্যাপারে কথা বলার জন্য অনিন্দিতা দত্ত তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে বলেছিলেন। তবে মানুষ জড়ো করা বা মব তৈরির ব্যাপারে তাঁর কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুর প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় অনিন্দিতা দত্ত লোক পাঠিয়ে থানায় একটি জিডি করেছেন।