জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে কোরআন বিতরণ করেছে বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবির। এ সময় প্রায় ৫০০ শিক্ষার্থীর হাতে কোরআন বিতরন করে তারা।

মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে জবি শাখা শিবিরের উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রমজান মাস উপলক্ষে আড়াই হাজার শিক্ষার্থীকে কোরআন উপহার দেওয়া হবে। আগ্রহী শিক্ষার্থীরা ছাত্রশিবিরের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় পেজে প্রকাশিত লিংকের মাধ্যমে নিবন্ধন করতে পারবে। নিবন্ধনের শেষ সময় ২৩ মার্চ পর্যন্ত নির্ধারিত হলেও উপহারের কোরআন শেষ হলে কার্যক্রমটি বন্ধ হয়ে যাবে। ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে যে কেউ এই উপহার গ্রহণ করতে পারবে।

শাখা ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক মো.

রিয়াজুল ইসলাম বলেন, “বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবির জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা শিক্ষার্থীদের কল্যাণের জন্য সব ধরনের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। পবিত্র মাস উপলক্ষে শিক্ষার্থীদের ইফতার বিতরণসহ শিক্ষার্থীবান্ধব বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।”

তিনি বলেন, “এরই ধারাবাহিকতায় ২ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থীর মাঝে কোরআন বিতরণের উদ্যেগ গ্রহণ করা হয়েছে। আজ প্রথম দিন ৫০০ জনের হাতে কোরআন মাজিদ তুলে দেওয়া হয়। পর্যায়ক্রমে বাকিগুলো ২ হাজার কপি শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে।”

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক রআন ব

এছাড়াও পড়ুন:

আর্থ-সামাজিক আবেদন ছিল চৈত্র সংক্রান্তি আর পহেলা বৈশাখে

বাংলা নববর্ষ বরণের আর নানা আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে চৈত্র সংক্রান্তি পালিত হতো গ্রাম-বাংলায়। আর্থ-সামাজিক আবেদন আর প্রাণ-প্রাচুর্যে ভরা ছিল সেই সব দিন। চৈত্র সংক্রান্তির সেসব অনুষ্ঠান এখন অনেকটাই ম্লাণ। প্রাধান্য পেয়েছে পহেলা বৈশাখ। আমরা দেখেছি চৈত্র সংক্রান্তি সামাজিক অনুষ্ঠান হিসেবে সবার কাছে সমাদৃত ছিল আর অর্থনৈতিক দিক বিবেচনায় হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে সবার কাছে প্রাধান্য পেত পহেলা বৈশাখ।

বাংলা বর্ষকে বিদায় জানানোর জন্য গ্রাম বাংলায় নানা আয়োজন হতো। গ্রামে মানুষের কাছে অন্যতম আকর্ষণ চড়ক ঘোরানো। জীবন্ত মানুষকে বর্ষিতে গাঁথা হতো। তারপর বাঁশের সাথে দড়ি দিয়ে বেঁধে ঘোরানো হতো। তাকে আবার আগের দিন না খাইয়ে রাখা হতো। সে আবার ওই ঘূর্ণায়মান অবস্থায় একটি কবুতর দাঁত দিয়ে ছিঁড়ে, সেটাকে নিচে ফেলে দিত। তারপরে পাঠা বলি হতো, কোনো কোনো জায়গায় মহিষ বলি হতো। বিভিন্ন গ্রামীণ মেলা হতো। বিশেষ করে চড়ক উৎসব যেখানে হতো, সেখানে। চৈত্র সংক্রান্তিতে বিশেষ বিশেষ জায়গা পূজাও হতো আবার মেলাও হতো। ওইসব মেলায় গৃহস্থলির জিনিসপত্র পাওয়া যেত। এই চড়ক উৎসবের আয়োজন করতো হিন্দুরা কিন্তু দৃশ্য উপভোগ করতে সবাই। আবার মেলার আয়োজন করতো হিন্দুরা কিন্তু গৃহস্থলির জিনিসপত্র—হাঁড়ি, পাতিল, কুলা, ডালা, সের এসব কেনার জন্য মুসলিমদেরও সরব উপস্থিতি থাকতো মেলায়। এখন যেমন পহেলা বৈশাখে পান্তা ভাত, ইলিশ মাছ খাওয়া; এই রীতি তখন ছিল না। তখন চৈত্র সংক্রান্তিকেই মূলত একটা পার্বণ হিসেবে সমাদৃত হতো। মেলাকেন্দ্রিক লাঠিখেলা ঘিরে অসংখ্য মানুষের জমায়েত হতো।

বিশেষ আকর্ষণ ছিল শিব-পার্বতী। একজন শিব সাজতো আরেকজন পার্বতী সাজতো। মেলাটার নাম ছিল শিব-গাজনের মেলা। শিব আর গাজনের ভক্ত নন্দি, ভৃঙ্গী, ভূত-প্রেত, দৈত্যদানব; এদেরও আবার প্রতিমূর্তি সাজতো অনেকে। তারপর শিব-পার্বতীর সঙ্গে নেচে চলতো। এরা নেচে নেচে বিভিন্ন বাড়ি বাড়ি যেত। এছাড়াও হতো নীল পূজা, গম্ভীরা পূজা, শিবের গাজন, শাকান্ন।

চৈত্র সংক্রান্তিতে বিশেষ বিশেষ স্থানে শিরনীর আয়োজন হতো। ল্যাটকা খিচুড়ি, আখের গুঁড়ের ক্ষীর রান্না হতো। কলাপাতায় পরিবেশন করা হতো। মাঠে, স্কুলে কিংবা ক্লাবে এই সব আয়োজন হতো। সবাই মিলে খাওয়া-দাওয়া হতো। চৈত্র সংক্রান্তিতে বৈশাখ বরণের একটা প্রস্তুতিও লক্ষ্য করা যেত। ঘর বাড়ি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হতো। বাড়ির বউ-ঝিরা কাঁচা ঘর লেপে চকচকে করতো। আবার গ্রাম বা মফস্বলের ছোট বড় দোকানগুলো সাজানো হতো। কারণ পরের দিন হালখাতা। হালখাতা উপলক্ষ্যে বাড়ির পুরুষেরা পণ্য বেচা বিক্রিতে ব্যস্ত সময় পার করতো। কারণ প্রত্যেকেরই একটা চেষ্টা থাকতো দোকানের বাকি শোধ করার। পুরো টাকা শোধ করতে না পারলেও যতোটা সম্ভব শোধ করতো তারা। হালখাতা উপলক্ষ্যে দোকানগুলোতে নতুন লাল টালিখাতায় দেনা-পাওনার হিসাব লেখা শুরু হতো। পহেলা বৈশাখে দোকানদাররা সাধারণত বাকি বিক্রি করতো না। তারা বলতো, বছরের প্রথম দিনে বাকি দেবেন না। হালখাতা উপলক্ষ্যে বাড়ির ছোট সদস্যরাও আনন্দিত হতো। তারা বড়দের হাত ধরে হালখাতা খেতে যেত। রসগোল্লা, পুরি, জিলাপি পেয়ে খুব খুশি হয়ে বাড়ি ফিরতো। বৈশাখে গ্রাম বাংলার অর্থনীতিতে যোগ হতো নতুন গতি। তবে সবশেষে হালখাতা একটি সামাজিক অনুষ্ঠানও। এই অনুষ্ঠান  কেন্দ্র করে মানুষে মানুষে সম্পর্ক আর দৃঢ় হতো। সত্যিকার অর্থেই প্রাণ-প্রাচুর্য ছিল সেই সামাজিক সৌহার্দে। 

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গানে-নাচে-আবৃত্তিতে বর্ষবিদায়
  • চট্টগ্রামে নববর্ষের পূর্ব নির্ধারিত সব অনুষ্ঠান হবে: জেলা প্রশাসন
  • মারমাদের মাহা সাংগ্রাই উপলক্ষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা
  • ‌‘তৌহিদী জনতার’ চিঠিতে বাতিল হলো শেষের কবিতা নাটকের প্রদর্শনী
  • চারুকলায় আগুন দেওয়া ব্যক্তিকে শনাক্ত করেছে পুলিশ
  • আর্থ-সামাজিক আবেদন ছিল চৈত্র সংক্রান্তি আর পহেলা বৈশাখে
  • রাষ্ট্র ও সমাজকে পথশিশুদের প্রতি মানবিক হতে হবে
  • চন্দনাইশের ‘হাতপাখা’ গ্রামে ১০ কোটি টাকার ব্যবসা
  • শহুরে পরিবারের দ্বন্দ্ব নিয়ে ‘ননসেন্স’
  • আমিরাতের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ