আমার পিতাকে জুডিশিয়াল ও মেডিকেল কিলিং করা হয়েছে: মাসুদ সাঈদী
Published: 18th, March 2025 GMT
মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ড পাওয়া প্রয়াত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে জুডিশিয়াল ও মেডিকেল কিলিং করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তাঁর ছেলে মাসুদ সাঈদী। আজ মঙ্গলবার পিরোজপুর সদর উপজেলা পরিষদের মিলনায়তনে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
সভায় মাসুদ সাঈদী বলেন, ‘যারা আমার বাবার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়েছে, তারা অবশ্যই শাস্তি পাবে। আমরা প্রতিহিংসার রাজনীতি করি না। যারা আমার বাবাকে হত্যা করেছে, তারা আওয়ামী লীগের লোক। এখনো তারা বিভিন্ন পদে আসীন। তাদের কারণে আমরা আমাদের বাবার হত্যার সমস্ত ডকুমেন্ট হাতে পাচ্ছি না। সব ডকুমেন্ট হাতে পেলেই আমরা দোষীদের বিরুদ্ধে মামলা করব।’
জামায়াতে ইসলামী থেকে পিরোজপুর-১ (সদর-নেছারাবাদ-নাজিরপুর) আসনে মাসুদ সাঈদীকে এবং পিরোজপুর-২ (কাউখালী-ভান্ডারিয়া-ইন্দুরকানী) আসনে তাঁর ভাই শামীম সাঈদীকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এ উপলক্ষে আজ পিরোজপুরে কর্মরত সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন মাসুদ সাঈদী।
মাসুদ সাঈদী বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ এ দেশের রাজনীতিক তথা সাধারণ মানুষের বাক্স্বাধীনতা ও ভোটাধিকার হরণ করেছিল। আওয়ামী লীগ আমাদের নির্বাচন করতে দেয়নি। দেশের মানুষ ভোটাধিকার ও স্বাধীনতার জন্য ১৭ বছর লড়াই করেছে। একাত্তরের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে বিজয়ের পর এ দেশের মানুষের সবচেয়ে বড় বিজয় হচ্ছে চব্বিশের ৫ আগস্টের বিজয়। আমি বা আমাদের সংগঠন পরিবারতন্ত্রে বিশ্বাসী নয়। পরিবারের সিদ্ধান্তে আমরা রাজনীতি করি না। সংগঠন যাঁকে যোগ্য মনে করে, তাঁকেই মনোনয়ন দেয়। জামায়াতে ইসলামী আমাকে ও আমার ভাই শামীম সাঈদীকে যোগ্য মনে করে পিরোজপুরের দুটি আসনে মনোনয়নের ঘোষণা দিয়েছে।’
মতবিনিময় সভায় সাংবাদিক ছাড়াও জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুর রব, জেলা সেক্রেটারি মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম স দ স ঈদ স ঈদ ক
এছাড়াও পড়ুন:
ঘরোয়া রান্নার স্মৃতিময় বই ‘খাদ্যবিলাস’
নাম বললেই চেনা যাবে, আনোয়ারা তরফদার এমন কোনো বিখ্যাত রন্ধনশিল্পী নন। তাঁর রান্না একান্তই ঘরোয়া, তবে তাঁর সৃজনশীলতা ভিন্নতর। সেসব রান্নার রেসিপি নিয়েই প্রকাশিত তাঁর রান্নার বই ‘খাদ্যবিলাস’–এর মোড়ক উন্মোচন হলো আজ বুধবার সন্ধ্যায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে।
একসময়ের জনপ্রিয় সাময়িকী সাপ্তাহিক ‘বিচিত্রা’য় প্রায় ৩০ বছর আগে আনোয়ারা তরফদারের রান্নার রেসিপিগুলো প্রকাশিত হয়েছিল। পরে সেই লেখাগুলো নিয়ে বইও প্রকাশিত হয়। অনেক দিন থেকেই বইটি বাজারে ছিল না। আনোয়ারা তরফদারের মেয়ে কবি শামীম আজাদ বইটি নতুন করে সম্পাদনা ও পরিবর্ধন করেছেন। প্রকাশ করেছে পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। তিনি বলেন, ষাটের দশকে মধ্যবিত্ত পরিবারের রান্নার বিলাস বাহুল্য ছিল না বটে, কিন্তু তার মধ্যেও বিশেষ বিশেষ দিনে প্রিয়জনদের সামনে ভালোমন্দ রান্না তুলে ধরতে চাইতেন সব গৃহিণী। সীমিত বাজেটে কীভাবে হৃদয়, বুদ্ধি, মমতা এবং ভালোবাসায় সাধারণ রান্নাকে অসাধারণ সুস্বাদু করে আপনজনের রসনা তৃপ্ত করা যায়, সে ব্যাপারটি আনোয়ারা তরফদারের ‘খাদ্যবিলাস’ বইটিতে রয়েছে।
অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘আমরা এখন বাণিজ্যের পৃথিবীতে বসবাস করছি। একটা সময় প্রকৃতি ও সভ্যতা জড়াজড়ি করে থাকত। এখন চলছে প্রকৃতি বিনাশী কর্মকাণ্ড। এই রান্নাগুলো কেবল খাদ্য প্রস্তুত করা নয়, এর সঙ্গে সেই সময়ের যৌথ জীবন, সংস্কৃতি, প্রকৃতি সংলগ্নতা আর মায়া–মমতার বিষয়ও মিলে মিশে আছে। এই রান্না একান্তই বাঙালির ঘরোয়া রান্না। ঘরে ঘরে বাঙালির রান্না যেন টিকে থাকে, সেই কামনা করি।’
অর্থনীতিবিদ সেলিম জাহানের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন শাহীন আনাম, আফজাল হোসেন, আব্দুন নূর তুষার, আলপনা হাবিব ও প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের পক্ষে মজুমদার বিপ্লব। মায়ের স্মৃতিচারণা করেন ছেলে ফজলে আকবর তফরদার ও বইটির সম্পাদক কবি শামীম আজাদ। ধন্যবাদ জানান নাতি লাবিব তালুকদার।
‘খাদ্যবিলাস’ বইটি নিয়ে আলোচকেরা বলেছেন, এই রান্নার মধ্যে জড়িয়ে আছে স্মৃতি। একটি সময়কে ধরে রাখা আছে। এগুলো আসলে মায়ের হাতের রান্না। আর মায়ের হাতের রান্না শুধু খাদ্য নয়, অমৃতের মতো।
আনোয়ারা তরফদারের জন্ম গত শতকের ত্রিশের দশকে বৃহত্তর সিলেটে। স্বামী ছিলেন পদস্থ সরকারি কর্মকর্তা। স্বামীর চাকরিসূত্রে অবিভক্ত ভারতের আসাম ও পরে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে থেকেছেন। স্বামীর সীমিত আয়ে তিনি নিপুণভাবে সংসার পরিচালনা করেছেন। বাঙালির চিরায়ত রান্নায় তাঁর ছিল বিশেষ পারদর্শিতা। এ ছাড়া সূচিকর্ম, মৃৎপাত্রে অঙ্কনসহ বিভিন্ন কারুকর্মেও তাঁর বিশেষ সৃজনশীলতা ছিল। একটা সময় তিনি ঢাকায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে মেয়েদের পুঁতির গয়না তৈরির প্রশিক্ষণ দিয়েছেন।