প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “রাজনৈতিক দলগুলো যদি সীমিত সংস্কারে রাজি হয়, তবে ডিসেম্বরেই নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব। তবে তারা বৃহত্তর সংস্কার চায়, তাহলে নির্বাচন কয়েক মাস পিছিয়ে যাবে।”

মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) মার্কিন সিনেটর গ্যারি পিটার্স প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করতে গেলে এ কথা জানান তিনি।

এ সময় মার্কিন সিনেটর পিটার্স অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার উদ্যোগ, বিভিন্ন কমিশনের প্রতিবেদন এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চান।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু এবং উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে। আলোচনায় উঠে আসে বাংলাদেশের সমসাময়িক পরিস্থিতি।”

প্রধান উপদেষ্টা প্রতিটি নাগরিকের মানবাধিকার রক্ষায় সরকারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, “সংখ্যালঘুদের ওপর হামলাগুলো ধর্মীয় নয়, বরং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছিল। তবে সরকার দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে।”

ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে দুই নেতা পারস্পরিক আগ্রহের বিষয়গুলো আলোচনা করেন এবং দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের সম্পর্ক আরো গভীর করার উপায় নিয়ে আলোচনা করেন।

ড.

ইউনূস এ সময় বলেন, “নির্বাচন হবে মুক্ত ও সুষ্ঠু। এটি উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের দিন বড় উদযাপন হবে, যেমনটি আমরা অতীতে দেখেছি।”

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলো জুলাই ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করবে। একবার তারা মূল কমিশনগুলোর প্রস্তাবিত সংস্কারের সঙ্গে একমত হবে। জুলাই চুক্তি দেশের ভবিষ্যতের দিক-নির্দেশনা স্থির করবে।”

পিটার্স সরকারি সংস্কার কর্মসূচির প্রশংসা করে বলেন, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে একটি মসৃণ গণতান্ত্রিক পরিবর্তন প্রত্যাশা করছে।”

সিনেটর পিটার্স বলেন, “তার মিশিগান কনস্টিটুয়েন্সিতে অনেক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মানুষ বাস করেন, যার মধ্যে ডেট্রয়ট শহরও অন্তর্ভুক্ত। তাদের মধ্যে কিছু মানুষ গত কয়েক মাসে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।”

তিনি বলেন, “সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিষয়ে বিশাল পরিমাণ মিথ্যা তথ্যও প্রচারিত হয়েছে। এই মিথ্যা তথ্যের কিছু অংশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছে, যা সংখ্যালঘু গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।”

অধ্যাপক ইউনূস তার সরকারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, “তারা দেশের প্রতিটি নাগরিকের মানবাধিকার রক্ষা করবে, তাদের বর্ণ, ধর্ম, জাতি, লিঙ্গ বা পরিচয় যাই হোক না কেন।”

তিনি বলেন, “আগস্ট মাসে পরিবর্তনের পর সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা, বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে সংঘটিত হয়েছিল, ধর্মীয় নয়। তবে তার সরকার দোষীদের বিরুদ্ধে তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নিয়েছে।”

অধ্যাপক ইউনূস মার্কিন সিনেটরকে বাংলাদেশের বিভিন্ন শহর ও গ্রামের সফরের আমন্ত্রণ জানান এবং অন্যান্য মার্কিন রাজনৈতিক নেতাদের, সাংবাদিকদের এবং সমাজকর্মীদেরও বাংলাদেশ সফরের জন্য আমন্ত্রণ জানান, যাতে তারা ধর্মীয় ঐক্যের বাস্তব তথ্য জানতে পারেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের সাহায্য প্রয়োজন। দয়া করে আপনার বন্ধুদের বাংলাদেশ সফরের জন্য বলুন। এর মাধ্যমে আমরা এই মিথ্যা তথ্য প্রচারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারব।”

দুই নেতা সামাজিক ব্যবসা, দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মাইক্রোক্রেডিটের ভূমিকা এবং একটি দারিদ্র্যমুক্ত পৃথিবী নিয়ে আলোচনা করেন।

ঢাকা/হাসান/সাইফ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন ত ক সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

প্রত্যর্পণ নিয়ে দ্বন্দ্ব: বিচারকের অভিশংসন চাইছেন ট্রাম্প, প্রধান বিচারকের সতর্কতা

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশটির ওয়াশিংটনের এক বিচারকের অভিশংসন চেয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়েছেন। ওই বিচারকের অভিশংসনের জন্য তাঁর দল রিপাবলিকান পার্টির সদস্যরা এরই মধ্যে কার্যক্রম শুরু করেছেন। কিন্তু বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগের দ্বন্দ্বের কারণে কোনো বিচারকের অভিশংসন চেষ্টা নিয়ে সতর্ক করেছেন দেশটির প্রধান বিচারপতি জন রবার্টস। 

ট্রাম্প প্রশাসন গত শনিবার ভেনেজুয়েলার ২৩৮ নাগরিকসহ মোট ২৬১ ব্যক্তিকে এল সালভাদরে প্রত্যর্পণ করেছে।  এসব ব্যক্তিকে এল সালভাদরের একটি উচ্চ নিরাপত্তাসম্পন্ন কারাগারে রাখা হবে। এ জন্য মধ্য আমেরিকার দেশটি যুক্তরাষ্ট্র থেকে অর্থ পাবে।

 একই দিন এই ব্যক্তিদের প্রত্যর্পণ দুই সপ্তাহ মুলতবি রাখতে রুলিং দিয়েছিলেন ওয়াশিংটনের কেন্দ্রীয় সরকারের বিচারক জেমস বোসবার্গ।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওয়াশিংটনের কেনেডি সেন্টারে, ১৭ মার্চ ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ