জুলাই-আগস্টে হামলার ঘটনায় বহিষ্কৃত ১২৮ জনের তালিকা পূর্ণাঙ্গ নয়: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
Published: 18th, March 2025 GMT
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় গত বছরের ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে হামলার ঘটনায় সাময়িক বহিষ্কৃত ১২৮ জনের তালিকাটি পূর্ণাঙ্গ নয় বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ নিয়ে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এই আহ্বান জানানো হয়।
গতকাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় ১২৮ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়। বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে হামলা–সংক্রান্ত তথ্যানুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
কিন্তু দেখা যাচ্ছে, ১২৮ জনের তালিকায় ১২২ জন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। বাকি ৬ জন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নয়। এ নিয়ে আলোচনার মধ্যে আজ বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ বিষয়ে অধিকতর তদন্তের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক তাজমেরী এস এ ইসলামকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি সত্যানুসন্ধান কমিটির মাধ্যমে চিহ্নিত ১২৮ জনের বিষয়ে পুনরায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হল, বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে তথ্য চেয়ে চিঠি দেবে। সেটি পাওয়ার পর তা যাচাই-বাছাই করে খুব শিগগির কমিটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দেবে। তার ভিত্তিতে দোষীদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে ১২৮ জনের তালিকায় নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতসহ অভিযুক্ত অনেকের নাম না থাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী আজ দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভও করেছেন।
আরও পড়ুনঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বহিষ্কৃতদের মধ্যে পাঁচজনই বাইরের৪১ মিনিট আগে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ঈদে কাপড় বিক্রির লক্ষ্য ৫৫০ কোটি টাকা
পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের ভুলতা গাউছিয়া পাইকারি কাপড়ের মার্কেটের বেচাকেনা জমে উঠেছে। দোকানিরা সাধ্যমতো পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন। ক্রেতা আকর্ষণে নানা অফারে ডাকছেন কেউ কেউ। রেডিমেড কাপড়ের দোকানে ক্রেতাদের ভিড় তুলনামূলক কম হলেও জাকাতের লুঙ্গি এবং শাড়ি কাপড়ের দোকানগুলোয় উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। গত রোজায় মার্কেটটিতে বিক্রি হয়েছিল প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, এ বছর তা বেড়ে দাঁড়াবে প্রায় ৫৫০ কোটি টাকায়। যদিও কাপড়ের বাড়তি দাম এবং চলমান অর্থনৈতিক মন্দার কারণে এ লক্ষ্য অর্জনে শঙ্কাও প্রকাশ করেছেন কয়েক ব্যবসায়ী।
জানা গেছে, প্রায় ২৪ একর জায়গায় ১৯৭৯ সালে প্রতিষ্ঠিত গাউছিয়া মার্কেটে বর্তমানে দোকানের সংখ্যা ৫ হাজার ৪৭২টি। নির্মাণকাজ শেষ হলে এ সংখ্যা ১৪ হাজারে দাঁড়াবে। শনিবার বাদে সপ্তাহের ছয় দিনই চলে জমজমাট বেচাকেনা। ঈদ উপলক্ষে তিন সপ্তাহ ধরে শনিবারও মার্কেট খোলা থাকছে। সপ্তাহের সোম ও মঙ্গলবার তৈরি পোশাকের পাইকারি বেচাকেনা চলে এ মার্কেটে। এ দু’দিন দৈনিক ৫০ থেকে ৭০ কোটি টাকার পাইকারি কাপড় বেচাকেনা হয়। ঈদের সময় বিক্রির পরিমাণ বেড়ে যায় কয়েক গুণ। বাকি দিনগুলোয় চলে খুচরা বেনাকেনা।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, রাজধানী ঢাকা ছাড়াও রাজশাহী, সিরাজগঞ্জ, সিলেট, গাজীপুর, ময়মনসিংহ, বরিশালসহ সারাদেশের ব্যবসায়ীরা পাইকারি কাপড় কিনতে এসেছেন। এ বছর দাম একটু বেশি হলেও কেনাবেচার যেন কমতি নেই।
রাজশাহী থেকে আসা আসিয়া ফ্যাশনের মালিক জসীমউদ্দীন বলেন, আমি এই মার্কেট থেকেই পাইকারি কাপড় কিনে থাকি। এই মার্কেটের কাপড়ের দাম বেশ সাশ্রয়ী এবং মানও ভালো। ইদানীং ব্যবসায়ীরা আর আগের মতো বাকিতে পণ্য দিতে চাচ্ছেন না। নগদ টাকায় ব্যবসা করতে অনেকেরই বেগ পেতে হচ্ছে।
গাউছিয়া মার্কেটের আলিফ বস্ত্র বিতানের মালিক রইসুল ইসলাম বলেন, আমাদের একটাই লক্ষ্য, সর্বনিম্ন লাভ করে সবচেয়ে ভালো কাপড়টি পাইকারি ক্রেতাদের হাতে তুলে দেওয়া। ফলে সারাদেশের ব্যবসায়ীরা আমাদের ওপর আস্থা রাখছেন।
ব্যবসায়ীরা জানান, এখানে ৩০০ থেকে শুরু করে ১ হাজার ২০০ টাকার মধ্যে ভালো মানের বুটিক থ্রিপিস পাবেন। জয়পুরি সুতির কাপড় পাবেন ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকার মধ্যে। সিল্কের শাড়ি ১ হাজার ৫০০ থেকে ৩-৪ হাজার টাকার মধ্যে পেয়ে যাবেন। রুহিতপুরি লুঙ্গি ২৫০ থেকে ১ হাজার, জয়পুরহাটের লুঙ্গি পাবেন ২৫০ থেকে ৭০০ টাকার মধ্যে। ১৫০ টাকা থেকে শুরু করে ৬০০ টাকার মধ্যে ভালো মানের জাকাতের কাপড় পাবেন। এ ছাড়া সুতি গজ কাপড়, সুতি থ্রিপিস, ওড়না, জামদানি শাড়ি, লুঙ্গিসহ সব ধরনের কাপড় খুব সস্তায় পেয়ে যাবেন।
বিক্রি নিয়ে খুচরা রেডিমেড কাপড়ের ব্যবসায়ীদের গলার সুর একটু ভিন্ন। সজীব ফ্যাশনের মালিক ইমরান হোসেন বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছরের বেচাকেনা একটু কম। গত বছরের এ সময় প্রতিদিন গড়ে দেড় থেকে দুই লাখ টাকার কাপড় বিক্রি করেছি। কিন্তু এবার একটু কমে গেছে। আগামী কয়েকদিন বাড়বে বলে আশা করছি।
ভুলতা গাউছিয়া মার্কেটের বাইরে ফুটপাতের দোকানগুলোও সেজেছে ঈদের সাজে। রংবেরঙের বাহারি জামাকাপড় নিয়ে ফুটপাতে প্রায় ৫০০ দোকান বসেছে। সরকার পরিবর্তনের পর ফুটপাতে ব্যবসা করার জন্য কোনো চাঁদা দিতে হয়নি বলেও জানান ব্যবসায়ীরা।
গাউছিয়া করপোরেশনের মালিক মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভূঁইয়া বলেন, গাউছিয়া করপোরেশন এখন দেশের সর্ববৃহৎ পাইকারি কাপড়ের মার্কেট। ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা, আধুনিক ফায়ার ডিফেন্স সিস্টেমসহ সর্বোত্তম সেবা দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য।