বালু তোলা নিয়ে সংঘর্ষে যুবক নিহত, গুলিবিদ্ধসহ আহত ২
Published: 18th, March 2025 GMT
ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার দক্ষিণাঞ্চল পাগলা থানার নিগুয়ারী ইউনিয়নের তললী গ্রামে নদীর বালু উত্তোলন নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে মেহেদি হাসান রাকিব নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন তার চাচা জিয়া ও একই গ্রামের মো. সাবিদ।
গতকাল সোমবার রাতে নিগুয়ারী ইউনিয়নের পল্টন মোড়ে এই ঘটনা ঘটে। নিহত যুবক রাকিব তললী নামাপাড়া গ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, স্থানীয় ইয়াসিন খানের সঙ্গে নিহত মেহেদি হাসান রাকিবের নদীর বালু উত্তোলন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। গত সোমবার সন্ধ্যায় উভয় পক্ষের লোকজন পাতলাসী বাজারে একসঙ্গে ইফতার করে নিগুয়ারী পল্টন মোড়ে আসার সময় রাকিবের সঙ্গে ইয়াসিনের কথা-কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এর জেরে রাত ১০টার দিকে ইয়াসিন ও তার লোকজন পল্টন মোড়ে রাকিবের ওপর হামলা করে। এ সময় সংঘর্ষ শুরু হলে ইয়াসিন ও তার লোকজন রাকিবকে ধরে নিগুয়ারী পল্টন মোড়ে ইয়াসিনের অফিসে নিয়ে মারধর করে। পরে রাকিবকে অফিসের পেছনে নিয়ে পিটিয়ে, কুপিয়ে এবং ইট দিয়ে মাথা থেঁতলিয়ে দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান রাকিব। এ ঘটনায় সাবিদ (২৪) নামে একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। রাকিবের চাচা জিয়াকে পিস্তল দিয়ে মাথায় আঘাত করলে সেও আহত হন। তাকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়। গুলিবিদ্ধ সাবিদকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে।
নিহত রাকিবের বাবা মজিবুর রহমান বলেন, ইয়াসিন ক্ষমতা পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এই এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে।
নাম না বলার শর্তে তিনি জানান, স্থানীয় নেতার ছত্রছায়ায় ইয়াসিন খান এই ইউনিয়নের মাছের খামার, ইটভাটা, বালুর ব্যবসা সব কিছু দখলে নিয়ে চাঁদাবাজি চালিয়ে যাচ্ছে। রাকিব এসব অপকর্মে বাধা দিতো বলেই পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে।
নিহত রাকিবের চাচাতো ভাই মোমেন বলেন, ‘বালু উত্তোলনের উদ্বোধনের কথা বলে আমার ভাই রাকিবকে নিয়ে তারা পাতলাশী বাজারে ইফতার করে। পরে রাস্তায় আসার সময় রাকিবের সঙ্গে তর্কাতর্কি ও মারামারি করে। এরপর পল্টন মোড়ে পিটিয়ে, ইট দিয়ে তার মাথা থেঁতলিয়ে মেরে ফেলে। এমনভাবে রাকিবকে মারা হয়েছে, তাকে আর চিনার কোনো উপায় নাই।’
পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ফেরদৌস আলম জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনি পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ঝুঁকিপূর্ণ সেতু পারাপারে দুর্ঘটনার শঙ্কা
নাঙ্গলকোট উপজেলার সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের আলিয়ারা-সাতবাড়ীয়া-অষ্টগ্রাম সড়কের খালের ওপর নির্মিত সাতবাড়িয়া সেতুটি বেহাল হয়ে পড়েছে। জনসাধারণের চলাচলে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে সেতুটি।
সেতুর পাটাতনের স্লাবগুলো ভেঙে গেছে। কাঠ ও লোহার পাত দিয়ে জোড়াতালি দেওয়া সেতুতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন পারাপার হচ্ছে প্রায় ১৫ গ্রামের অন্তত ২০ হাজার মানুষ।
এলাকাবাসী জানান, ৬০-৭০ বছর আগে সাতবাড়িয়া খালের ওপর সেতুটি নির্মাণ করা হয়। বিভিন্ন সময় রড ও সিমেন্টের (পাটাতন) স্লাবগুলো ভেঙে যেতে থাকে। এ ছাড়া সেতুর দুই পাশে রেলিং ভেঙে যায়। সেতুর উভয় পাশের মাটি সরে গিয়ে গভীর গর্তে পরিণত হয়েছে। জরাজীর্ণ সেতুটি দীর্ঘদিন মেরামত না হওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে অটোরিকশা, মোটরসাইকেল ও বিভিন্ন ছোট যানবাহন চলাচল করছে। এই ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর ওপর দিয়ে সাতবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কমিউনিটি ক্লিনিক, সাতবাড়িয়া বাজার, মসজিদ, এতিমখানা, আলিয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নাইয়ারা, চৌকুড়ী উচ্চ বিদ্যালয়, প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চৌকুড়ী বাজারে প্রতিদিন যাতায়াত করছেন প্রায় ১৫ গ্রামের মানুষ।
সাতবাড়িয়া গ্রামের সালাউদ্দিন, শাকিল, তামজীদ বলেন, এই সেতু পুনর্নির্মাণের জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে কয়েকবার বলেছেন তারা। কিন্তু সেতুটি এখনও পুনর্নির্মাণের খবর নেই। জরুরি প্রয়োজনে অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করতে পারেন না তারা।
এ ব্যাপারে নাঙ্গলকোট উপজেলা প্রকৌশলী অহিদুল ইসলাম শিকদার জানান, সেতুটি পুনর্নির্মাণের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে নতুনভাবে কাজ শুরু করা হবে।