যশোরের কেশবপুরে খ্রিষ্টান মিশনারিতে এক আদিবাসী স্কুলছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় মিশনারি ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছেন বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার দুপুরে এ বিক্ষোভের খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা স্কুলছাত্রীর মৃত্যুর সঠিক রহস্য উন্মোচন করার দাবি জানিয়েছেন। এ সময় মিশন থেকে তিন আদিবাসী ছাত্রীকে পুলিশের মাধ্যমে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তাছাড়া মারা যাওয়া মেয়েটির বাবার দেওয়া অভিযোগ অপমৃত্যু মামলার সঙ্গে সংযুক্ত করে রাখার কথা জানিয়েছে পুলিশ।

শুক্রবার রাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে মৃত অবস্থায় রাজের্নং ত্রিপুরা (১৫) নামের খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের আদিবাসী স্কুলছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। রাজের্নং ত্রিপুরা কেশবপুর পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। সে বান্দরবানের থানচি উপজেলার কালুপাড়া গ্রামের রমেশ ত্রিপুরার মেয়ে। রাজের্নং ত্রিপুরা কেশবপুর সদরের সাহাপাড়ার খ্রিষ্টান মিশনে থেকে পড়াশোনা করত। 

পুলিশ বলছে, স্কুলছাত্রীর মরদেহ উদ্ধারের পর খ্রিষ্টান মিশনে গেলে কর্তৃপক্ষ জানায়, শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজের্নং ত্রিপুরা তার শয়নকক্ষের জানালার গ্রিলের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে। 

পুলিশ ও খ্রিষ্টান মিশনারি সূত্রে জানা গেছে, কেশবপুর সাহাপাড়ার খ্রিস্টান আউটরিস্ট সেন্ট্রাল ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ প্রকল্পের অধীনে ৪৪ আদিবাসী কিশোরী সেখানে থেকে পড়াশোনা করে। তাদের অন্যতম স্কুলছাত্রী রাজের্নং ত্রিপুরা। 

স্কুলছাত্রীর মৃত্যুর পর থেকেই গুঞ্জন ওঠে, তাকে নির্যাতন করে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। এর পর এ ঘটনায় সোমবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা মিশন ঘেরাও করে। সে সময় রাজের্নং ত্রিপুরার পরিবারের সদস্যসহ অন্য তিন আদিবাসী স্কুলছাত্রীর পরিবারের স্বজনরাও মিশনে হাজির হন। তাদের দাবির মুখে মিশনে থাকা অপর তিন স্কুলছাত্রীকে পুলিশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে।

খ্রিষ্টান মিশনারির পরিচালক খ্রিস্ফার সরকার দাবি করেন, মেয়েটিকে তার নিজের শয়নকক্ষ থেকে জানালার গ্রিলের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছিল। হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। তাকে কোনো ধরনের নির্যাতন করা হয়নি। মিশনে থাকা তিন ছাত্রীর পরিবারের দাবির কারণে পুলিশের মাধ্যমে তাদের স্বজনের কাছে তুলে দেওয়া হয়েছে।

খ্রিষ্টান মিশন ঘেরাও কর্মসূচিতে নেতৃত্বদানকারী বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের সমন্বয়ক মো.

মাশফি চৌধুরী বলেন, রাজের্নং ত্রিপুরার মৃত্যুর আসল রহস্য মিশনারির ফাদার ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। মেয়েটির মৃত্যুর পর তার অন্য সহপাঠীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিল। অন্য ছাত্রীদের অভিভাবকরা মিশনে নিতে গেলেও তাদের সন্তানদের দেখা করতে দেয়নি। তাই তারা (শিক্ষার্থী) ঘেরাও করে প্রশাসনের সহযোগিতায় ছাত্রীদের অভিভাবকদের কাছে বুঝে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। তারা রাজের্নং ত্রিপুরার মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করছেন।

কেশবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, মেয়েটির বাবা এ বিষয়ে একটি অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগটি অপমৃত্যু মামলার সঙ্গে সংযুক্ত করে রাখা হয়েছে। 

মনিরামপুর-কেশবপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) ইমদাদুল হক বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের মিশন ঘেরাও করে বিক্ষোভের বিষয়ে জেনে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। মেয়েটির বাবার অভিযোগের সূত্র ধরে বিষয়টি সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করা হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: যশ র সমন বয়ক র পর ব র র ঘ র ও কর ক শবপ র র র পর

এছাড়াও পড়ুন:

সফটওয়্যার প্রকৌশলী এআই এজেন্ট আনতে যাচ্ছে ওপেনএআই

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাচালিত সফটওয়্যার প্রকৌশলী এজেন্ট আনতে যাচ্ছে চ্যাটজিপিটির নির্মাতাপ্রতিষ্ঠান ওপেনএআই। প্রতিষ্ঠানটির তথ্যমতে, এআই এজেন্টটি মানুষের সহায়তা ছাড়াই কোড লিখে বিভিন্ন ধরনের সফটওয়্যার তৈরি করতে পারবে। শুধু তাই নয়, নিজ থেকে সফটওয়্যারে থাকা ত্রুটি শনাক্ত করে সমাধানও করবে।

ওপেনএআইয়ের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা (সিএফও) সারাহ ফ্রাইয়ার জানিয়েছেন, নতুন এআই এজেন্টের নাম ‘এ-এসডব্লিউই’ বা ‘এজেন্টিক সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার’। এটি ওপেনএআইয়ের তৈরি তৃতীয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এজেন্ট। এর আগে ‘অপারেটর’ ও ‘ডিপ রিসার্চ’ নামে দুটি এআই এজেন্ট চালু করেছে ওপেনএআই। এগুলো এখন শুধু চ্যাটজিপিটির প্রিমিয়াম গ্রাহকেরা ব্যবহার করতে পারেন।

নিজেদের তৈরি সফটওয়্যার প্রকৌশলী এআই এজেন্টের বিষয়ে সারাহ ফ্রাইয়ার জানান, এ-এসডব্লিউই একজন সফটওয়্যার প্রকৌশলীর মতোই কাজ করবে। কাজ বুঝিয়ে দিলে নিজ থেকে কোড লেখার পাশাপাশি সফটওয়্যারের মাননিয়ন্ত্রণ, ত্রুটি শনাক্তসহ প্রকল্প-সম্পর্কিত নথিপত্র তৈরি করে দেবে এআই এজেন্টটি।

ওপেনএআইয়ের তৈরি এআই এজেন্ট প্রকৃতপক্ষে একটি ‘ফোর্স মাল্টিপ্লায়ার’ বা কর্মক্ষমতা বৃদ্ধিকারী উপাদান হিসেবে কাজ করবে। এটি সফটওয়্যার প্রকৌশলীদের দলকে অনেক বেশি উৎপাদনশীল করে তুলতে পারে। তবে চলতি বছরের শুরুতে ওপেনএআইয়ের চালু করা ‘ডিপ রিসার্চ’ এজেন্টকে গবেষণা সহকারীর বিকল্প হিসেবে পরিচয় করানো হলেও এখনো তা পুরোপুরি সেই ভূমিকা পালন করতে পারছে না।

সূত্র: লাইভমিন্ট

সম্পর্কিত নিবন্ধ