Risingbd:
2025-03-18@17:57:44 GMT

‘বিষ বাতাসে’ শ্বাস 

Published: 18th, March 2025 GMT

‘বিষ বাতাসে’ শ্বাস 

ধূমপান না করেও প্রতিদিন অত্যধিক বিষাক্ত পদার্থ শ্বাসের সঙ্গে শরীরে ঢুকছে। বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস)-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর রাতে ঢাকার একিউআই (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স) মান ছিল ৮৮০। যে বাতাসে শ্বাস নেওয়া মানে প্রায় এক দিনে প্রায় ৪৫টি সিগারেট খাওয়ার সমান। ডিসেম্বর মাসের মোট ১৭ দিন বায়ু ছিল দুর্যোগপূর্ণ ও বায়ুর গড় মান ছিল ২৮৮। 

এই অবস্থা শুধু আমাদের ঢাকা শহর নয়, উপমহাদেশের অন্যান্য প্রধান প্রধান শহর যেমন দিল্লি, চন্ডিগড়, কলকাতা, লাহোর, করাচি যেন এক ধরনের দূষণের প্রতিযোগিতায় নেমেছে। গত নভেম্বরে দিল্লির এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স পৌঁছেছিল ১০০০-এর কাছে।

মোটামুটি ধরে নেওয়া হয়, একিউআই ৫০-এর কম হলে তা গুড এয়ার বা সুস্থ বায়ু। একিউআই মান যদি ৫০ থেকে ১০০ এর মধ্যে থাকে তখন বায়ুর গুণমানকে মাঝারি বলে বিবেচিত হয়। ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর। এ সময় সাধারণত সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় ধরে বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়। ১৫১ থেকে ২০০ এর মধ্যে হলে অস্বাস্থ্যকর এবং ২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে হলে খুব অস্বাস্থ্যকর বলে মনে করা হয়। ৩০১ এর বেশি হলে বিপজ্জনক হিসেবে বিবেচিত হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে।

হিসাব অনুযায়ী, ঢাকাবাসীর কপালে একটি দিনও সুস্থ বায়ু জুটছে কি না, সেটাই এখন একটা বিষয়। খোলা জায়গায় ভোরের আলোয় একটু বিশুদ্ধ অক্সিজেন নেওয়ার মত অবস্থা নেই। প্রত্যেক বার শ্বাস নেওয়ার সঙ্গে ঢুকছে বিষ ও নানাবিধ ক্ষতিকর কণা।

কোন পরিসংখ্যানের প্রয়োজন হয় না, ঢাকা শহরের আকাশ খালি চোখে দেখলে আর বাতাসে শ্বাস নিলেই দূষণের মাত্রা টের পাওয়া যায়। 

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাংলাদেশের বায়ু বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বাধিক দূষিত আর রাজধানীগুলোর মধ্যে ঢাকার বায়ু তৃতীয় সর্বাধিক দূষিত। বাংলাদেশের বাতাসে গড় ধোঁয়ার মাত্রা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকার চেয়ে ১৫ গুণেরও বেশি।

শীতকালে বায়ু দূষণ সবার কাছে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। গোটা ঢাকা শহরের উপরে যেন ধুলা-কুয়াশার আচ্ছাদন, কম্বলের মত বিছিয়ে থাকে। এই সময় দূষণ সবচেয়ে মারাত্মক পর্যায়ে রূপ নেয়। বিজ্ঞানীদের মতে, গরমকালে উষ্ণ বাতাস যতখানি উপরে উঠতে পারে, শীতের ঠান্ডা ভারি হাওয়া ততখানি পারে না, যে কারণে শীতকালে দূষিত পদার্থগুলো নিচের দিকেই থাকে। তাই গরমকালে দূষণ একটু কম থাকে। আর বর্ষা মৌসুমে বাতাসের মানের কিছুটা উন্নতি হয়।

নগরায়ণের গতি বৃদ্ধির সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে দূষিত হচ্ছে বাতাস। বায়ু দূষণ এখন সব জায়গায় মারাত্মক। শুধু ঢাকাবাসী নয়, অন্যান্য শহরবাসীদের শ্বাসের সঙ্গে ঢুকছে এই বিষ। 

বায়ু দূষণ একটি মানবসৃষ্ট সর্বজনীন সমস্যা। কেউ বায়ু দূষিত করলে অন্য সবাইকে এই বিষ গ্রহণ করতে হয়। দূষণের ক্ষেত্রে ভারতের দিল্লি এখন নিয়মিত আন্তর্জাতিক সংবাদের শিরোনাম। গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষের কারণেই দিল্লির বাতাস দূষিত হচ্ছে। পার্শ্ববর্তী পাঞ্জাব ও হরিয়ানা রাজ্য সরকার আইন প্রণয়ন করে জমিতে ধানের বীজ বপনের সময় এক মাস পিছিয়ে দেয়। মূলত ভূগর্ভস্থ জল সংরক্ষণের জন্য আইনটি করা ছিল। এর ফলে বীজতলা থেকে ধানের চারা রোপণের প্রচলিত সময় ও ধান কাটার সময় প্রায় এক মাস পিছিয়ে যায়। এখান থেকেই সমস্যার সূচনা। আগে কাটা ধানের গোড়া যা চলতি কথায় ‘নাড়া’ বলে পরিচিত, জমিতে প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে পচে গিয়ে জমি উর্বর করতে সাহায্য করত।  এখন ধান কাটার পরপরই শীতের শস্য গমের বীজ বপনের সময় এসে যায়। হাতে সময় না থাকায় কৃষকরা চালু করল নাড়া পোড়ানোর ব্যবস্থা। নাড়া পোড়ার সেই ধোঁয়া ধেয়ে আসে দিল্লির দিকে আর ধোঁয়াশায় অবরুদ্ধ হয় দিল্লির আকাশ-বাতাস। অনেকগুলো কারণের মধ্যে এই নাড়া পোড়ার ধোঁয়া দিল্লির বায়ুদূষণের প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

আমাদের ঢাকা শহরেও বায়ু দূষণের মানবসৃষ্ট বেশ কিছু কারণ রয়েছে। ঢাকা শহরের আশপাশে রয়েছে অনেক ইটভাটা যার ধোঁয়া অনেক সময় ঢাকার আকাশে চলে আসে। তাছাড়া বিভিন্ন কারখানা থেকে নির্গত ধোঁয়া ও রাসায়নিক বর্জ্যও মিশছে বাতাসে। আধুনিক ব্যবস্থাপনা না থাকায় ঢাকা শহর ও আশপাশের এলাকায় উন্মুক্তভাবে গাছপালা, আবর্জনা ও প্লাস্টিক পোড়ানোর দৃশ্য প্রায়ই দেখা যায়। 

বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ শহরগুলোর মধ্যে ঢাকা অন্যতম। দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের আকার বৃদ্ধি সাথে সাথে রাজধানীর ওপর চাপ বেড়েই চলেছে। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার আবাসিক ও অন্যান্য নাগরিক চাহিদা মেটাতে বর্তমান ঢাকা শহরের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং লাভজনক হচ্ছে গৃহনির্মাণ শিল্প। যে কারণে বেড়েই চলেছে কংক্রিটের জঙ্গল। বৈধ ও অবৈধ পন্থায় নতুন বাড়িঘর তৈরি, পুরনো বাড়ি ভেঙে আবার নতুন করে নির্মাণ এবং বাড়িঘরের আধুনিকীকরণ সারা বছর ধরে চলে। 

বিপুল সংখ্যক মানুষের জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের প্রয়োজনও দেখা দিয়েছে এবং তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের অবকাঠামো ও স্থাপনা। নতুন নতুন রাস্তা ঘাট নির্মাণের পাশাপাশি সড়ক প্রশস্তকরণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।   

অন্যদিকে সংস্কার আর উন্নয়নের নামে একই সড়ক বার বার খোঁড়া ও নতুন করে তৈরি ঢাকা শহরের সাধারণ ব্যাপার এবং সারা বছর চলে।  নির্মাণ সামগ্রী যেমন সিমেন্ট, বালু, ইট রাস্তার ওপর খোলা অবস্থায় রাখা হয়। সর্বত্রই যেন ধুলোবালি উড়ছে এবং বাতাসে ছড়িয়ে পড়ছে।
যানবাহনের ধোঁয়া বায়ু দূষণের আর একটি অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমাদের লক্ষ্য থাকা উচিত ছিল, ব্যক্তিগত পরিবহন থেকে গণপরিবহনের দিকে সরে আসা। সেখানে গোটা দেশে চলেছে তার উল্টো। দেশে সৃষ্টি হয়েছে নব্য ধনিক শ্রেণীর ও তাদের অভিজাত সংস্কৃতি। যাদের পরিবারের সবার জন্য আলাদা আলাদা গাড়ির প্রয়োজন হয়। আবার অনেকের রয়েছে একাধিক গাড়ি। তাছাড়া ব্যক্তিগত সুবিধার জন্য দেশে ক্রমেই বেড়েই চলেছে মোটরসাইকেলের সংখ্যা।  

গণপরিবহণগুলোর মধ্যে কিছু সংখ্যক প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহার করে। আর বাকিগুলো জীবাশ্ম জ্বালানি-নির্ভর যেগুলো নির্গত করে চলেছে অতিরিক্ত কালো ধোঁয়া।    

আমাদের দেশে বিশেষ করে ঢাকা শহরে ইংরেজি নববর্ষ উদযাপনের রাত্রে ও শবেবরাতের রাত্রে ব্যাপক হারে আতশবাজির ব্যবহার হয় যা বাতাসকে আরো খারাপ পর্যায়ে নামিয়ে আনে। আতশবাজির ব্যবহার ব্যয়বহুলও বটে। অর্থাৎ অর্থ খরচ করে বায়ু দূষণ। 

প্রতি বছর পুলিশ-প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই আতশবাজির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয় ও পদক্ষেপ নেওয়া হয়। কিন্তু এর ব্যাপকতা কোনভাবেই কমানো সম্ভব হচ্ছে না।

বায়ু দূষণের এমন খারাপ অবস্থা এক ধরনের অশনি সংকেতও বটে। বিষবাষ্প বুকে নিয়ে কোনও ক্রমে বেঁচে থাকা ছাড়া অন্য উপায় নেই। ঢাকার হাসপাতালগুলো এখন বায়ুদূষণ সংশ্লিষ্ট রোগে আক্রান্ত রোগীর চাপে ভারাক্রান্ত। সূত্র মতে, বাংলাদেশ সম্মিলিতভাবে বছরে ২৬৩ মিলিয়ন কর্মদিবস হারাচ্ছে। একদিকে যেমন উচ্চতর স্বাস্থ্যসেবা ব্যয় বেড়ে চলেছে অন্যদিকে হ্রাস পাচ্ছে উৎপাদনশীলতা। 

ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউএইচও) মতে, বায়ু দূষণের কারণে প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। বায়ুদূষণ স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ফুসফুসের ক্যান্সার, হাঁপানি, তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণসহ দীর্ঘ মেয়াদে বড় ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা তৈরি করছে।

বিশ্বজুড়ে ধূমপানের প্রবণতা কমছে অথচ যারা কখনো ধূমপান করেননি, তাদের মাঝে ক্যানসারের প্রাদুর্ভাব বেড়ে চলেছে। বিশ্বের অন্যতম সেরা স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সাময়িকী ল্যানসেটের গবেষণা প্রবন্ধে জানা গেছে, বায়ু দূষণের প্রভাবে অধূমপায়ীরাও নিয়মিত ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বাসিন্দাদের মাঝে এই রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যাচ্ছে। ২০২২ সালে সারা বিশ্বে ২৫ লাখ মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে।

ভারত উপমহাদেশের প্রায় প্রতি ১০ জনের মধ্যে একজনের মৃত্যুর কারণ এই বায়ু দূষণ। বাংলাদেশেও বায়ু দূষণের কারণে অসংখ্য মৃত্যু ঘটছে। অসংখ্য মায়ের অকাল প্রসব হচ্ছে এবং কম ওজনের শিশু জন্মগ্রহণ করছে। 

এয়ার কোয়ালিটি লাইফ ইনডেক্স-২০২৪ প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, বায়ু দূষণের কারণে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত দেশগুলোর মানুষের গড় আয়ু ২ দশমিক ৭ বছর হ্রাস পেয়েছে। তবে উক্ত প্রতিবেদন অনুসারে, বাংলাদেশে নাগরিকদের গড় আয়ু হ্রাস পেয়েছে ৪ দশমিক ৮ বছর। 

বায়ুদূষণ শুধু মানুষের শরীরেই প্রভাব ফেলছে না, বরং বিপর্যস্ত করে তুলছে মানসিক স্বাস্থ্যকেও। মানুষের মধ্যে ডিমেনশিয়া, ডিপ্রেশন ও অ্যাংজাইটি সাইকোসিস-এর ঝুঁকি বেড়েই চলেছে।

আমাদের দেশের সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন পর্যায়ের প্রতিনিধিরা দল বেঁধে রাষ্ট্রের ও দেশের অর্থ খরচ করে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলনে  যোগদান করে কার্বন নিঃসরণ, জলবায়ু পরিবর্তনসহ বিভিন্ন বিষয়ে নানা কথা বলে আসেন। অথচ পরিবেশের যে সমস্যাগুলো আমাদের চোখের সামনে রয়েছে, সে ব্যাপারে কারোর কোন নজর নেই।

ঢাকার বাতাস যখন অনেক দূষিত হয়ে ওঠে তখন সরকারের দপ্তর থেকে বলা হয়, ঘরের জানালা-দরজা বন্ধ করে ঘরের ভেতরে অবস্থান করা, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে না যাওয়া ও সব সময় মুখে মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়। তবুও প্রতি দিন মানুষকে বাইরে যেতে হয় এবং বাতাসে ভাসমান ক্ষতিকর কণার বিপজ্জনক মাত্রার মুখোমুখি  হতে হয়। 

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্ব নেওয়ার পর সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বায়ু দূষণের উৎস নিয়ন্ত্রণ, বায়ু মান মনিটরিং ব্যবস্থা উন্নত করা এবং আইন প্রয়োগের প্রক্রিয়া শক্তিশালীসহ বেশ কিছু কর্মপরিকল্পনার কথা বলেছিলেন। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ের স্বল্পতা ও দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে এ সব কিছুর বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। 

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার প্লাস্টিকের উৎপাদন ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে প্রথম থেকে বেশ সচেষ্ট অথচ দেশের বিরাজমান পরিস্থিতির কারণে সেটারও যথাযথ বাস্তবায়ন হচ্ছে না।  দোকান-বাজারে নিষিদ্ধ প্লাস্টিকের ব্যবহার কমার কোন লক্ষণ নেই। কিছু সরকারি অফিসে কিছু সচেতনতার ছাপ দেখা গেলেও অন্য স্থানে একেবারে নেই বললে চলে।

যে কারণে আগামীতে নির্বাচিত সরকার আসলে বায়ু দূষণ প্রতিরোধে স্থায়ী জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বাংলাদেশে বায়ু দূষণ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য জাপানের সাথে সম্প্রতি একটি চুক্তিও সই করা হয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশে বায়ু দূষণ পরিমাপ ও বিশ্লেষণ করা হবে। এর আগে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাতাসের মানোন্নয়নের বেশ কয়েকটি প্রকল্পও হাতে নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু এগুলো থেকে প্রত্যাশিত ফল পাওয়া যায়নি। বরং, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে প্রকল্প-তহবিল তছরুপের অভিযোগও এসেছে। 

বায়ু দূষণের প্রধান উৎসগুলো বন্ধ ও তাদের প্রভাব কমিয়ে এখনই লাগাম টেনে ধরার উদ্যোগ নেওয়া খুবই প্রয়োজন। দূষণ প্রতিরোধের জন্য  দেশে নির্দিষ্ট কিছু আইনও আছে, সেগুলো মানতে ও প্রয়োগে সবাইকে সচেষ্ট হতে হবে।

বায়ু দূষণ প্রতিরোধের কাজে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া, গবেষক ও বিশেষজ্ঞদের দিয়ে একটি সামগ্রিক পরিকল্পনা ও অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি  করা এবং সেই অনুযায়ী কাজ করা এখন সময়ের দাবি। শুধু প্রকল্প নয়, পরিবেশ অধিদপ্তর ও প্রশাসনের অধিক সক্রিয় তৎপরতা ও নিরবচ্ছিন্ন প্রচেষ্টা বিশেষভাবে প্রয়োজন ।
 
সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ করলে ও সবাই সরব হলে পরিস্থিতি দ্রুত পাল্টে ফেলা সম্ভব। চীন এরমধ্যে সেই কাজটা করে সবাইকে তাক লাগিয়েছে। বিষয়টি মনে রাখা প্রয়োজন, ঢাকা শহরের একিউআই যখন মারাত্মক পর্যায় পৌঁছায় তখন নিউ ইয়র্ক, ওয়াশিংটন ডিসি এবং বেইজিংয়ের  একিউআই থাকে ৫০ এর অনেক নিচে থাকে।

বিপদ এখন দোরগোড়ায়, শুধু সরকার নয় প্রত্যেক নাগরিককে সচেতন হতে হবে। বায়ুদূষণকে সবার আলোচনার বিষয়বস্তুতে পরিণত হওয়া ও বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ এখন সময়ের দাবি।

লেখক: গণমাধ্যমকর্মী

ঢাকা/এনএইচ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবহ র ব যবস থ প রকল প পর য য় পর ব শ র জন য আম দ র অন য য় র সময় সরক র ধরন র শহর র সবচ য় অবস থ সমস য গ রহণ

এছাড়াও পড়ুন:

পত্রিকার বিজ্ঞাপনের হার পুনর্নির্ধারণ ও মিডিয়ার তালিকা হালনাগাদ হবে: তথ্য উপদেষ্টা

তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম জানিয়েছেন, পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের হার পুনর্নির্ধারণ ও মিডিয়ার তালিকা হালনাগাদ করা হবে। মঙ্গলবার চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর (ডিএফপি), গণযোগাযোগ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ড, বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট ও তথ্য অধিদপ্তর পরিদর্শনকালে তিনি এ কথা বলেন।

এদিন উপদেষ্টা চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের শুটিং ফ্লোর, সাউন্ড থিয়েটার, ফিল্ম ল্যাব, ক্যামেরা সেন্টার, প্রোডাকশন রুম পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি স্থাপনাগুলোকে কীভাবে সংস্কার করা যায়, সে বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেন। এ ছাড়া বিদ্যমান আইন-বিধি মেনে সেবা সহজীকরণ ও কাজের গুণগত মান বাড়াতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান।

উপদেষ্টা দপ্তর ও সংস্থার মান উন্নয়নে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। এ সময় তথ্য উপদেষ্টা চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের প্রকাশনাগুলো দেখেন। কীভাবে আরও ভালো ভালো প্রকাশনা বের করা যায়, সে বিষয়ে পরামর্শ দেন তিনি।

পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (চলতি দায়িত্ব) খালেদা বেগম, গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ফায়জুল হক, চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল জলিল ও সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ আবদুল্লাহ।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ