ইউক্রেনের যুদ্ধের অবসান ঘটাতে সম্ভাব্য ভবিষ্যতের শান্তি চুক্তিতে রাশিয়ার অঞ্চল হিসেবে ক্রিমিয়াকে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা বিবেচনা করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন প্রশাসনের বরাত দিয়ে সেমাফোর নিউজ এ তথ্য জানিয়েছে।

ক্রিমিয়া ২০১৪ সালে ইউক্রেনের কাছ থেকে দখল করে নেয় রাশিয়া। বেশিরভাগ দেশই ক্রিমিয়াকে আন্তর্জাতিকভাবে ইউক্রেনের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং কিয়েভ বলেছে যে তারা কৃষ্ণ সাগর উপদ্বীপ ফিরে পেতে চায়।

বিষয়টির সাথে পরিচিত দুই ব্যক্তির বরাত দিয়ে সেমাফোর জানিয়েছে, ওয়াশিংটনে মার্কিন কর্মকর্তারা জাতিসংঘকে একই কাজ করার জন্য অনুরোধ করার সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা করেছিলেন।

রয়টার্স স্বাধীনভাবে এই প্রতিবেদনটি নিশ্চিত করতে পারেনি। 

সেমাফোর জানিয়েছে, এ ব্যাপারে হোয়াইট হাউস মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

সংবাদমাধ্যমটি বলেছে, ট্রাম্প আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো সিদ্ধান্ত নেননি। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে বিভিন্ন বিকল্পের মধ্যে একটি রয়েছে ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার অঞ্চল হিসেবে স্বীকৃতি।

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউক র ন

এছাড়াও পড়ুন:

মসজিদের ভেতরে কোপানের ঘটনায় আরেকজনের মৃত্যু, নিহত বেড়ে ৪ 

মাদারীপুরে বালুর ব্যবসা নিয়ে বিরোধের জেরে মসজিদের ভেতরে কুপিয়ে জখমের ঘটনায় আরো একজনের মৃত্যু হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাজেল হাওলাদার (১৮) নামে ওই যুবক মারা যান। এর ফলে ওই ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে চারজনে দাঁড়িয়েছে।

মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) রাতে মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন নিহতের বড় ভাই রাজু হাওলাদার। 

আরো পড়ুন: প্রতিশোধ নিতে ও প্রভাব বিস্তার করতেই ৩ ভাইকে খুন

আরো পড়ুন:

যুবলীগ-ছাত্রলীগের হামলায় আহত ১০, থানায় অভিযোগ

ঘুমন্ত বিএনপি কর্মীর ঘরে বাইরে থেকে তালা দিয়ে আগুন

নিহত তাজেল মাদারীপুর সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের খোয়াজপুর-টেকেরহাট গ্রামের আজিজুল হাওলাদারের ছেলে।

পুলিশ, পরিবার, এলাকাবাসী জানায়, মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগ দুইভাগে বিভক্ত। এক পক্ষের নেতৃত্ব দিতেন সাবেক নৌ-পরিবহন মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান এবং অপর পক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাসিম।

দীর্ঘদিন ধরে মাদারীপুর সদর উপজেলার খোয়াজপুরে কীর্তিনাশা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছিলেন বাহাউদ্দীন নাসিম সমর্থিত খোয়াজপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল সরদার। তার প্রতিপক্ষ হোসেন সরদার (৬০) ছিলেন শাজাহান খান সমর্থিত আওয়ামী লীগ নেতা। আওয়ামী লীগ ক্ষমতা থাকাকালীন নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সিন্ডিকেট ও খোয়াজপুর-টেকেরহাট বাজারের ইজারা দখল নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়।

এরই  জেরে ২০২৪ সালের ২ ফেব্রুয়ারি দুপুরে খোয়াজপুর বাজারের মধ্যে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হোসেন সরদারের দুই পা ভেঙে দেন সাইফুল সরদার ও তার লোকজন। তারা সম্পর্কে চাচা-ভাতিজা। 

আরো পড়ুন: মাদারীপুরে বালু ব্যবসা নিয়ে সংঘর্ষে ২ ভাই নিহত

গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পা ভাঙ্গার প্রতিশোধ ও পুরো সিন্ডিকেট দখলে নিতে মরিয়া হয়ে ওঠেন হোসেন সরদার। এনিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। শনিবার (৮ মার্চ) খোয়াজপুর সরদারবাড়ি জামে মসজিদের ভেতরে হামলা চালিয়ে সাইফুল ও তার ভাই আতাউর সরদারকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে হোসেন সরদারের লোকজন বলে অভিযোগ ওঠে। 

হামলার ওই ঘটনায় কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়- নিহত সাইফুলের আরেক ভাই অলিল সরদার, চাচাতো ভাই পলাশ সরদার (১৭), স্ত্রী সেতু আক্তার ও তাদের পক্ষের তাজেল হাওলাদারসহ (১৮) আরো আটজনকে। উন্নত চিকিৎসার জন্য অলিল, পলাশ ও তাজেলকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার (৮ মার্চ) পলাশ সরদারের মৃত্যু হয়।

এর আটদিন পর চিকিৎসা শেষে ঢাকা মেডিকেল থেকে তাজেলকে গত ১৫ মার্চ বাড়িতে আনা হয়। দুইদিন পর আবার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা
মেডিকেলে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাজেলকে মৃত্য ঘোষণা করেন।

তাজেলের বড় ভাই রাজু হাওলাদার বলেন, “আট দিন ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা শেষে গত (১৫ মার্চ) শনিবার বাড়ি নিয়ে এসেছিলাম ভাইকে। মঙ্গলবার দুপুরে খাবার খাওয়ার পর সে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে। সেখানে মারা যায় আমার ভাই।”

মাদারীপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) চাতক চাকমা বলেন, “ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আহত তাজেল মারা গেছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি।”

হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গত (৮ মার্চ) রবিবার রাতে ৪৯ জনের নাম উলে­খসহ আরো ৮০/৯০ জনকে নাম না জানা আসামি করে মাদারীপুর সদর থানায় হত্যা মামলা করেছেন নিহত স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সাইফুল সরদারের মা সুফিয়া বেগম। এ মামলার প্রধান আসামিসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ। তারা বর্তমানে মাদারীপুর কারাগারে বন্দী আছেন। 

গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হলেন- হোসেন সরদার, সুমন সরদার, মতি সরদারের স্ত্রী কুলসুম বেগম, খোয়াজপুর গ্রামের রুবেল বেপারী ও সুজন মাহমুদ।

ঢাকা/বেলাল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ