বহিষ্কৃতদের তালিকায় নেই ঢাবি শাখা ছাত্রলীগ সম্পাদক সৈকত
Published: 18th, March 2025 GMT
গণঅভ্যুত্থান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) সহিংসতায় জড়িত ১২৮ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এ তালিকায় নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান ও ঢাবি শাখার সভাপতি মাজহারুল কবির শয়নের নাম থাকলেও নেই এ শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের নাম।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) দুপুরে এর প্রতিবাদে উপাচার্যের কার্যালয়ে সামনে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
প্রকাশিত তালিকা থেকে জানা গেছে, গণঅভ্যুত্থান চলাকালে ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সহিংসতায় জড়িত ১২৮ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। বহিষ্কৃতদের তালিকায় নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মাজহারুল কবির শয়নের নাম রয়েছে। তবে ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতসহ অন্যান্য চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের নাম বহিষ্কৃতদের তালিকায় নেই।
আরো পড়ুন:
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ঢাবির আহত শিক্ষার্থীদের পাশে সাদা দল
নওগাঁ মেডিকেল কলেজ বন্ধ না করার দাবিতে ঢাবিতে বিক্ষোভ
জুলাই-আগস্টে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংগঠিত সহিংসতার ঘটনায় ২০২৪ সালের ৮ অক্টোবর আইন অনুষদের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মাহফুজুল হক সুপণের নেতৃত্বে একটি তথ্য অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সদস্যরা ঢাবির ১২২ জনের বিরুদ্ধে হামলায় জড়িত থাকার প্রমাণ পায়।
সোমবার (১৭ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি এক সিন্ডিকেট সভায় এই তালিকা উপস্থাপন করা হয়। তথ্য অনুসন্ধান কমিটির তালিকা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১২৮ জনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। একই সঙ্গে তাদের বিষয়ে চূড়ান্ত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড.
তালিকায় সাদ্দাম হোসেন ও শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানকে হামলার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়। তারা সশরীরে হামলায় উপস্থিত ছিলেন বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। এছাড়া তালিকায় ছাত্রলীগের বিভিন্ন হল পর্যায়ের নেতাদের নাম রয়েছে। তালিকায় স্থান পেয়েছেন বহিরাগতরাও।
স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান চলাকালে ১৫ জুলাই ছাত্রলীগ ক্যাডারদের হাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ব্যাপক মারধরের শিকার হন। ছাত্রলীগের হাতে মার খেয়ে কেবল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২৯৭ জন শিক্ষার্থী চিকিৎসা নেন। অনেক শিক্ষার্থী রাতে হলে ফিরে মারধরের শিকার হন।
১৬ ও ১৭ জুলাই শিক্ষার্থীদের ওপর আবারও হামলা করা হয়। ১৭ জুলাই বিকেল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে প্রশাসন। এরপর থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ কয়েকবার হামলার ঘটনা ঘটে।
উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভে শিক্ষার্থীরা তথ্যানুসন্ধান কমিটির দেওয়া প্রতিবেদন নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে। তাদের দাবি, বিভিন্ন হল ভিত্তিক চিহ্নিত হামলাকারীদের নাম নেই প্রতিবেদনে।
১২৮ জন ছাত্রলীগের নেতাকর্মী যারা হামলায় জড়িত ছিল তাদের প্রথম তালিকাটি সিন্ডিকেট মিটিংয়ের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে। তালিকায় দুইজন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এবং একজন ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনানের অনুসারী এবং পটুয়াখালী জেলার ছাত্রলীগের পদ প্রত্যাশী ছিলেন।
ঢাবি প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, “এটা বহিষ্কারের তালিকা নয়। এটা সত্যানুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের যে দুইজনের নাম দিয়েছে, এ বিষয়ে আমরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অবহিত করব ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য। পটুয়াখালীর যে ছিলেন, আমরা তাদের বিরুদ্ধে ওখানকার প্রশাসনের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করব।”
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবস থ কম ট র
এছাড়াও পড়ুন:
সুরে-গানে-তালে বৈশাখকে বরণ করল রাবি
বাংলা বছরের প্রথম দিনকে স্বাগত জানাতে বাঙালি মেতে উঠেছে নানা আয়োজনে। বাঙালি জাতিসত্তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার অন্যতম দিনটিকে কেন্দ্র করে সর্বত্রই বইছে উৎসবের আমেজ। জাতি-গোত্র-বর্ণ সব ভেদাভেদ ভুলে সকলে একযোগে দিনটি উদযাপন করেছে।
বৈশাখের আগমনকে নতুন সুরে, গানে, তালে বরণ করে নিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষক শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকাল ৯টায় চারুকলা চত্বরে মুক্তমঞ্চে বর্ষবরণের কর্মসূচি উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব। পরে বেলা ১০টায় চারুকলা চত্বর থেকে শুরু হওয়া বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে।
আরো পড়ুন:
নববর্ষে থাকবে রাবি অধ্যাপকের ৩০০ ফুটের স্ক্রলচিত্র প্রদর্শনী
রাবি শিক্ষার্থীদের বিজু উৎসব উদযাপন
শোভাযাত্রায় উপাচার্য, উপ-উপাচার্যসহ বিপুল সংখ্যক শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অংশ নেন।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনও নিজ নিজ কর্মসূচির মাধ্যমে বর্ষবরণ উদযাপন করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, লোক প্রশাসন বিভাগ, ফলিত গণিত বিভাগ, মার্কেটিং বিভাগসহ একাধিক বিভাগ নতুন বছরকে বরণ করে নিতে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
এবারের আয়োজনে ছিলো নানা ধরনের ব্যানার আর ফেস্টুন। শোভাযাত্রায় ২৪ এর গণঅভ্যুত্থান, বাঙালির ঐতিহ্য, কৃষ্টি-কালচার তুলে ধরতে তৈরি করা হচ্ছে বিভিন্ন মোটিফ। তবে আগের বছরগুলোর তুলনায় এবার আয়োজনের ব্যাপ্তি কিছুটা কমেছে বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা কেউ শখের হাড়ির ভাস্কর্য, আবার কেউ বাঙালির ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে রঙ তুলিতে ফুটিয়ে তুলেছেন। কেউ ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের চেতনাকে ধারণ করে এঁকেছেন নানা চিত্র। মাঠজুড়ে বিরাজ করছে বাঁশের ফালি দিয়ে শখের হাঁড়ি ও পালকি। আবার কেউ কেউ মধ্যপ্রাচ্যের মানবতার বিপর্যয়কে প্রতীকী করে শলাকা দিয়ে মিসাইল বোমা ও ড্রোন বানিয়েছেন।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ফারিহা সাঈদ নিশা বলেন, “এটা আমার জীবনের প্রথম বৈশাখ পালন। আগে কখনো এত বড় করে পালন করা হয়নি। সবার সঙ্গে অনেক আনন্দ করলাম, অনেক ভালো লাগলো। বৈশাখের আনন্দ সবার মধ্যে ছড়িয়ে পড়ুক, এই কামনা করছি।”
রাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসেন বকুল বলেন, “শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে নতুন বর্ষকে আমরা বরণ করে নিলাম। আমার শিক্ষার্থীরা গত এক সপ্তাহ ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করে ব্যানার ফেস্টুন তৈরি করেছে। সেসব নিয়ে সবাই উল্লাসে মেতেছে আজ। নববর্ষে এমন আয়োজন করতে সত্যি খুশি লাগছে। এর জন্য আমার শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তারা অনেক পরিশ্রম করেছে।”
বর্ষবরণের কর্মসূচিতে ক্যাম্পাস জুড়ে বিভিন্ন বিভাগ ও সংগঠনের উদ্যোগে দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বৈশাখী মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী