তাসকিনের বিব্রতকর রেকর্ডের দিনে এনামুলের ঝকঝকে ১৪৯
Published: 18th, March 2025 GMT
এনামুল হক সেঞ্চুরি তুলে আলোড়ন করলেন নাকি তাসকিন আহমেদ ১০৭ রান ব্যয় করে…কোনটা বেশি আলোচনায় থাকবে? আলোচনায় যেটাই থাকুক, বিকেএসপিতে ব্যাট-বলে দারুণ লড়াই দেখল ক্রিকেটপ্রেমিরা।
গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ম্যাচে খানিকটা রোমাঞ্চ ছড়াল। উত্তেজনাও তৈরি হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শেষ হাসিটা হেসেছে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স। গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স আগে ব্যাটিং করতে নেমে এনামুলের ১৪৯ রানের ঝকঝকে ইনিংসে ভর করে ৫ উইকেটে ৩৩৬ রান তুলে। জবাব দিতে নেমে মোহামেডান গুটিয়ে যায় ২৭১ রানে। ৬৫ রানের ব্যবধানে ম্যাচ জিতে নেয় গাজী গ্রুপ।
এনামুলের ১৪৩ বলে ১২ চার ও ৪ ছক্কায় সাজানো ১৪৯ রানের ইনিংস ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতে নিয়েছে। তবে তার মুখে হাসি ফোটার দিনে ম্লান হয়েছে তাসকিনের মুখ। মোহামেডানের এই পেসার ১০ ওভার হাত ঘুরিয়ে রান দিয়েছেন ১০৭। যা বাংলাদেশের মাটিতে স্বীকৃত ক্রিকেটে কোনো বোলারের এক ইনিংসে সর্বোচ্চ। গত বছর ঢাকা লিগে ফতুল্লায় পেসার ইকবাল হোসেন ইমন ৯ ওভারে ১০৪ রান দিয়েছিলেন। সেটাই ছিল দেশের মাটিতে সর্বোচ্চ ব্যয়বহুল বোলিং। এবার তাসকিন ছাড়িয়ে গেলেন সবকিছুকে।
তাসকিনের মতোই নিষ্প্রভ ছিল মোহামেডানের বোলিং। নাসুম আহমেদ ১০ ওভারে ৪১ রানে ১ উইকেট পেয়েছেন। তাইজুল, সাইফ উদ্দিন ও মেহেদী হাসান মিরাজ ১০ ওভার হাত ঘুরিয়েও উইকেটের স্বাদ পাননি।
ওপেনিংয়ে নেমে শেষ পর্যন্ত টিকে ছিলেন এনামুল। উদ্বোধনী জুটিতে সাদিকুর ও এনামুল ১৪১ রানের জুটি গড়েন। সাদিকুর ৬০ রানে থেমে গেলেও এনামুল তুলে নেন লিগের প্রথম সেঞ্চুরি। শেষ দিকে তাদের দলের রান বাড়িয়েছেন তোফায়েল আহমেদ। ২৯ বলে ৫ চার ও ৪ ছক্কায় ৬৩ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন এই ব্যাটসম্যান।
মোহামেডান রনি তালুকদার ও তামিম ইকবালের ব্যাটে শুরুটা খারাপ করেনি। ৭২ রানের উদ্বোধনী জুটি পায়। তামিম ফিফটি থেকে ২ রান দূরে থেকে সাজঘরে ফিরলেও রনি মাইলফলক পেরিয়ে যান। তবে সেঞ্চুরি ছোঁয়া হয়নি তারও। ৯০ বলে ৪টি করে চার ও ছক্কায় ৭৪ রান করেন। এছাড়া তাওহীদ হৃদয় ৫২ বলে ৩৬, মুশফিকুর রহিম ৪৬ বলে ৪৯ রান করেন। বাকিরা স্রেফ আসা-যাওয়ার মিছিলে ছিলেন।
গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের সেরা বোলার পেসার আব্দুল গাফফার। ৫৯ রানে ৪ উইকেট নেন তিনি। ২ উইকেট পেয়েছেন আব্দুল হাসেম। লিগের ষষ্ঠ ম্যাচে পঞ্চম জয় তুলে নিয়েছে গাজী গ্রুপ। মোহামেডান সমান ম্যাচে পেয়েছে দ্বিতীয় হারের স্বাদ।
ঢাকা/ইয়াসিন
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
এই নারাইনের রহস্য ভেদ করবে কে
‘বলতে পারেন অনেকটাই। আশা করি, পরেরবার একটা ভালো ক্যাচও নেব।’
বল হাতে নিয়েছেন ৩ উইকেট, ব্যাট হাতে ১৮ বলে ৪৪ রান। চেন্নাই সুপার কিংসকে ১০৩ রানে আটকে দিয়ে কলকাতা নাইট রাইডার্স যে ৮ উইকেটের বড় জয় তুলেছে, তাতে মূল অবদান সুনীল নারাইনেরই। খেলা শেষে ম্যাচসেরার পুরস্কার হাতে তুলে দেওয়ার তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলো, নিখুঁত একটা ম্যাচ খেললেন, তাই না?
তখনই ‘ভালো ক্যাচের ঘাটতি’র কথা নারাইনের মুখে। বিজয় শঙ্করের ক্যাচ মিস করেছিলেন, ইঙ্গিত করেছিলেন সেদিকেই। ক্যাচ মিসের ঘটনাটি বাদ দিলে চিপকে চেন্নাইয়ের বিব্রতকর হারের মূল অনুঘটকই নারাইন। তবে মহেন্দ্র সিং ধোনির দল একটু সান্ত্বনা নিতেই পারে। এই নারাইন শুধু চেন্নাইকে নয়, বছরের পর বছর বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলে দিচ্ছেন সব দলকেই। যার বড় প্রমাণ দুটি নতুন রেকর্ডে।
চেন্নাইয়ের বিপক্ষে নারাইন ৩ উইকেট নিয়েছেন ৪ ওভারে ১৩ রান দিয়ে। আইপিএলে ম্যাচ ৪ ওভার বোলিং করে ১৫ রানের কম দিলেন এ নিয়ে ১৩ বার। আইপিএলের দেড় যুগের ইতিহাসে এটি কিপটে বোলিংয়ে নতুন রেকর্ড। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১২ বার এমন বোলিংয়ের কীর্তি আছে স্পিনার রশিদ খানের।
রশিদ আফগানিস্তানের খেলোয়াড়, আইপিএল অভিষেকও নারাইনের বেশ পরে (২০১৭ সালে, নারাইনের ২০১২)। তবে ৩৬ বছর বয়সী এই ক্যারিবীয় ক্রিকেটার একই ম্যাচে পেছনে ফেলেছেন ভারতের রবিচন্দ্রন অশ্বিনকেও।
আইপিএলের প্রথম আসর থেকে খেলে চলা অশ্বিন এখন পর্যন্ত ম্যাচে ৪ ওভার বল করে একটিও বাউন্ডারি হজম করেননি ১৫ বার। যে রেকর্ডে ভাগীদার ছিলেন নারাইন। গতকাল চিপকে অশ্বিনের দলের কোনো ব্যাটসম্যান নারাইনকে একটি বাউন্ডারিও মারতে না পারায় রেকর্ডটি এখন শুধুই তাঁর—আইপিএল ১৬ বার বাউন্ডারিশূন্য ৪ ওভারের বোলিং।
নতুন দুটি রেকর্ড গড়া নারাইন এখন স্বীকৃত টি–টোয়েন্টিতে বিশ্ব রেকর্ড গড়ার পথে। টি–টোয়েন্টিতে একটি দলের হয়ে সবচেয়ে বেশি উইকেটের রেকর্ডটা এখন সামিত প্যাটেলের, যিনি নটিংহামশায়ারের হয়ে নিয়েছেন ২০৮ উইকেট। ১৩ বছর ধরে কলকাতা নাইট রাইডার্সে খেলা নারাইনের উইকেট ২০৩টি।
দরকার মাত্র ৬ উইকেট। নারাইন যা করে ফেলতে পারেন এ মৌসুমেই।