বেঞ্চ নির্ধারণ করে দিলেন প্রধান বিচারপতি, শুনানি অবকাশের পর
Published: 18th, March 2025 GMT
‘সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ–২০২৫’–এর চারটি ধারার বৈধতা নিয়ে রিট শুনতে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ নির্ধারণ করে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। রিট শুনানি ও নিষ্পত্তির জন্য বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি কে এম রাশেদুজ্জামান রাজার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
অবকাশের পর আগামী ২২ এপ্রিল সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে রিটের ওপর শুনানি হবে বলে জানিয়েছেন রিট আবেদনকারীর জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম।
ওই অধ্যাদেশের ৩, ৪, ৬ ও ৯ ধারার বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো.
পরে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে আজ রিটটি শুনানির জন্য ওঠে। আদালত অবকাশের পর শুনবেন বলেছেন। ২২ এপ্রিল শুনানির জন্য দিন রাখা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের অবকাশ ২০ মার্চ শুরু হচ্ছে, অবকাশ শেষে ২০ এপ্রিল নিয়মিত আদালত বসবেন।
এর আগে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগে বিচারক নিয়োগের লক্ষ্যে উপযুক্ত ব্যক্তি বাছাই করে প্রধান বিচারপতি কর্তৃক রাষ্ট্রপতিকে পরামর্শ দিতে ‘সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ–২০২৫’ শিরোনামে অধ্যাদেশ গত ২১ জানুয়ারি গেজেট আকারে জারি করে আইন মন্ত্রণালয়।
অধ্যাদেশের কয়েকটি ধারা সংশোধনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানিয়ে ২৩ জানুয়ারি আইনি নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আজমল হোসেন। এ বিষয়ে তিন দিনের মধ্যে পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানানো হয়। আইনি নোটিশের জবাব না পেয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি করেন তিনি। অধ্যাদেশের ৩, ৪, ৬ ও ৯ ধারার বৈধতা নিয়ে রিটটি করা হয়। অধ্যাদেশের ৩ ধারায় কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা, ৪ ধারায় কাউন্সিল সচিব, ৬ ধারায় কাউন্সিলের ক্ষমতা ও কার্যাবলি এবং ৯ ধারায় আপিল বিভাগের বিচারক নিয়োগবিষয়ক সুপারিশ সম্পর্কে বলা রয়েছে।
রিটের আবেদনে দেখা যায়, ওই ধারাগুলো কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, এ বিষয়ে রুল চাওয়া হয়েছে। রুল হলে তা বিচারাধীন অবস্থায় অধ্যাদেশটির কার্যক্রম স্থগিত চাওয়া হয়েছে। রিটে আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিবকে বিবাদী করা হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ ন ন র জন য আইনজ ব অবক শ
এছাড়াও পড়ুন:
নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনে ইসির গণবিজ্ঞপ্তি প্রশ্নে রুল
নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রকাশিত গণবিজ্ঞপ্তি প্রশ্নে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি কে এম রাশেদুজ্জামান রাজার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার রুলসহ আদেশ দেন।
নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের জন্য আবেদনপত্র আহ্বান করে ১০ মার্চ ওই গণবিজ্ঞপ্তি দেয় নির্বাচন কমিশন। গণবিজ্ঞপ্তির বৈধতা নিয়ে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হাসনাত কাইয়ূম ১৬ মাার্চ রিটটি করেন। আজ আদালতে রিটের পক্ষে তিনি নিজেই শুনানি করেন, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী আবেদা গুলরুখ।
রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনে ওই গণবিজ্ঞপ্তির কার্যক্রম রিট আবেদনকারীর দলের (রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন) ক্ষেত্রে স্থগিত করা হয়েছে বলে জানান আইনজীবী হাসনাত কাইয়ূম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সংবিধানে উল্লেখিত রাজনৈতিক দলের সংজ্ঞার চেতনা ও নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ ব্যর্থ করতে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯০খ-এর আলোকে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের ওই গণবিজ্ঞপ্তি কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া রুলে।
ইসির গণবিজ্ঞপ্তির ভাষ্য, ১৯৭২ সালের গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯০ক-এর অধীন রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন করতে ইচ্ছুক এবং ২০০৮ সালের রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালায় উল্লিখিত শর্ত পূরণে সক্ষম রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকা অনুসারে বিধিমালায় সংযোজিত ফরম-১ পূরণ করে ২০ এপ্রিলের মধ্যে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করার আহ্বান জানানো যাচ্ছে।
আর গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯০ক অনুযায়ী, কোনো রাজনৈতিক দল ৯০খ উল্লিখিত শর্তাবলি পূরণ সাপেক্ষে কমিশনে দলের নাম নিবন্ধন করতে পারবে। ৯০খ ধারায় জেলা, উপজেলা পর্যায়ে কার্যালয় ছাড়াও নিবন্ধনের জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু শর্ত উল্লেখ রয়েছে। যেমন কেন্দ্রীয় কমিটিসহ সক্রিয় কেন্দ্রীয় অফিস থাকা, অনূর্ধ্ব এক-তৃতীয়াংশ প্রশাসনিক জেলায় জেলা অফিস এবং অন্যূন ১০০টি উপজেলা বা ক্ষেত্রমতে মেট্রোপলিটন থানায় অফিস প্রতিষ্ঠা, যার প্রতিটিতে সদস্য হিসেবে ন্যূনতম ২০০ ভোটারের তালিকাভুক্তি ইত্যাদি।
রিট আবেদনকারীর ভাষ্য, রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের জন্য কমপক্ষে ১০০ উপজেলা ও ২২ জেলায় দলের কমিটি থাকতে হবে বলে আইনে উল্লেখ রয়েছে। অথচ পার্বত্য তিন জেলায় ২০টি উপজেলা রয়েছে। যে কারণে পাহাড়ি জনগোষ্ঠী আগ্রহী হলেও রাজনৈতিক দল নিবন্ধন করতে পারবে না। স্বৈরতান্ত্রিক সরকারের সময় ২০১১ সালে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে ওই শর্ত যুক্ত করা হয়। ৫ শতাংশ উপজেলায় এবং ১০ শতাংশ জেলা কমিটি থাকাসহ সর্বমোট ৫ হাজার সদস্য থাকলে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন দেওয়ার সুপারিশ করেছে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন। এ অবস্থায় তড়িঘড়ি করে পুরোনো আইনে ওই গণবিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। সংবিধানে রাজনৈতিক দলের যে সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, এই গণবিজ্ঞপ্তি সেই চেতনার পরিপন্থী—মূলত এসব যুক্তিতে রিটটি করা হয়।