১০০ বা ২০০ রান নয়, একেবারে ৪০০! তা–ও আবার বাংলাদেশের একজন গড়েছে এমন কীর্তি।

জাতীয় স্কুল ক্রিকেটে অবিশ্বাস্য এ ঘটনাই ঘটিয়েছে ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজের মোস্তাকিম হাওলাদার। ১৭০ বলের ইনিংসে চারই মেরেছে ৫০টি, সঙ্গে ২২ ছক্কা। শেষ পর্যন্ত মোস্তাকিম অপরাজিত ছিল ৪০৪ রানে।

বাংলাদেশের স্বীকৃত ক্রিকেটে এটাই সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোর। জাতীয় স্কুল ক্রিকেটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় খেলার মাঠে সেন্ট গ্রেগরি স্কুলের বিপক্ষে এই কীর্তিই গড়েছে মোস্তাকিম।

একই ম্যাচে মোস্তাকিমের সতীর্থ সোয়াদ পারভেজও করেছে ডাবল সেঞ্চুরি। ১২৪ বল খেলে ৪২ চার ও ১৩ ছক্কায় ২৫৬ রান অপরাজিত ছিল পারভেজ। তার সঙ্গে ৬৯৯ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে মোস্তাকিম। সব মিলিয়ে তাদের দল ৫০ ওভারের ম্যাচে ২ উইকেট হারিয়ে তোলে ৭৭০ রান।

এরপর বল হাতে প্রতিপক্ষ সেন্ট গ্রেগরিকে মাত্র ৩২ রানে অল আউট করে দেয় ক্যামব্রিয়ান স্কুল। হাসান হৃদয় পায় ৬ উইকেট ও  পারভেজ নেয় ৪ উইকেট।

৪০০ রানের ইনিংস খেলার পর আজ মিরপুরে সাংবাদিকদের মোস্তাকিম জানায়, ‘আল্লাহ লিখে রাখছে। আর নিজের ওপর আত্মবিশ্বাস ছিল। যখন উইকেটে আসি, চেষ্টা করেছি ব্যাটের সঙ্গে বলের সংযোগটা ভালো করতে। যখন দেখলাম ভালো লাগছে, তখন মনে হয়েছে পারব আজকে।’

ক্রিকেটে মোস্তাকিমের আদর্শ সাকিব আল হাসান হলেও পাওয়ার হিটিংয়ের জন্যই অনুসরণ করে ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটকে।

৬৯৯ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়া বন্ধু সোয়াদ পারভেজের সঙ্গে আগেও খেলেছে মোস্তাকিম। ম্যাচ শেষে বন্ধুর প্রতি কৃতজ্ঞতা মোস্তাকিমের, ‘শেষ দিকে ওভার কম ছিল। ও আমাকে স্ট্রাইক দিয়ে সাহায্য করছিল। ও আর আমি ছোটবেলা থেকেই একসঙ্গে খেলি। অনেক সাহায্য করেছে। আমাদের লক্ষ্য ছিল দুজন মিলেই যেন শেষ করে আসতে পারি।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

গাজা-পশ্চিম তীরে কেমন ছিলেন, জানালেন বাংলাদেশে পড়ুয়া ২ ফিলিস্তিনি তরুণ

অর্ধশতাব্দীর বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনে দখলদারি চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। ফিলিস্তিনের অর্ধেকের বেশি এলাকা দখল করে নিয়েছে তারা। বিভিন্ন যুদ্ধে ফিলিস্তিনি নারী, পুরুষ, শিশুদের হত্যা করা হয়েছে। এসব যুদ্ধের সাক্ষী পুরো বিশ্ব। কোনো কোনো দেশ নীরব থেকেছে, কেউ আবার সরব হয়েছে, যেমন বাংলাদেশ।

কথাগুলো বলছিলেন বাংলাদেশে পড়ুয়া ফিলিস্তিনি দুই তরুণ ইব্রাহিম কিসকো (২৩) ও আইজ্যাক এন নমুরা (২৩)। আজ রোববার বিকেলে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ আয়োজিত ‘বাংলাদেশে অধ্যয়নরত ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীর দৃষ্টিতে ফিলিস্তিনের সংগ্রাম অনুধাবন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তাঁরা। আইজ্যাকের বাড়ি দখলকৃত পশ্চিম তীরের হেবরনে। আর ইব্রাহিমের বাড়ি গাজায়।

ইব্রাহিম কিসকো ও আইজ্যাক এন নমুরা—দুজনই বাংলাদেশে চিকিৎসাশাস্ত্র নিয়ে পড়াশোনা করছেন। আইজ্যাক পড়ছেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে আর ইব্রাহিম ঢাকা মেডিকেল কলেজে। তাঁরা দুজনেই চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। ২০২১ সালে বৃত্তি পেয়ে তাঁরা বাংলাদেশে পড়তে আসেন। বাংলাদেশে এসে একে অপরকে চিনেছেন।

আলোচনা সভায় আইজ্যাক বলেন, ‘২০২১ সালে আমি যখন বাংলাদেশে আসি, তখন পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বাহিনীর প্রায় ১০০ তল্লাশিচৌকি ছিল। সেখান থেকে শিশু, নারী, পুরুষদের হেনস্তা করত এবং তাঁদের ওপর নির্যাতন চালাত ইসরায়েলি বাহিনী। তাদের ইচ্ছেমতো আমাদের ধরে কারাবন্দী করে রাখা হতো।’

ইসরায়েলি বাহিনী ফিলিস্তিনের অসংখ্য শিশু, নারী, পুরুষকে কারাগারে বন্দী করে রেখেছে—অভিযোগ এনে আইজ্যাক বলেন, ‘কারাগারে আমার ফিলিস্তিনি ভাইবোনদের বন্দী করে রাখা হয়েছে। তারা সেখানে অনাহারে দিন পার করছে। প্রতিনিয়ত নারীদের ধর্ষণ ও নির্যাতন করা হচ্ছে। এসব থেকে মুক্তি চাই। ইনশা আল্লাহ, একদিন মুক্ত হব।’

আলোচনা সভার আগে আইজ্যাক এন নমুরার সঙ্গে কথা হয় প্রথম আলোর। তিনি জানান, ছেলেবেলায় মহাকাশচারী হতে চেয়েছিলেন। তাঁর পরিবারে ছয় ভাই ও পাঁচ বোন রয়েছে। তিনিই একমাত্র ফিলিস্তিন থেকে দূরে। তাঁর প্রিয় খাবার ‘মাকলুবা’ (বিরিয়ানির মতো একধরনের খাবার)। বাংলাদেশের তেহারি খেতে খুবই পছন্দ করেন। মিষ্টান্নের মধ্যে প্রিয় রসমালাই। পুরান ঢাকা ঘুরতে এবং পুরান ঢাকার খাবার খেতে ভালো লাগে তাঁর।

‘বাংলাদেশে অধ্যয়নরত ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীর দৃষ্টিতে ফিলিস্তিনের সংগ্রাম অনুধাবন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় কথা বলেন ফিলিস্তিনি তরুণ ইব্রাহিম কিসকো ও আইজ্যাক এন নমুরা

সম্পর্কিত নিবন্ধ