দীর্ঘদিন ধরেই নিজের ছায়া হয়ে ছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। রান পাচ্ছিলেন না ঠিকঠাক মতো। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের শুরুর পাঁচ ম্যাচেও ছিলেন নিষ্প্রভ। ২০, ০, ৩৭ ও ১২ করেছিলেন চার ইনিংসে। এক ম্যাচে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পাননি। তার রানে ফেরা নিয়ে উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছিল।

সব উৎকণ্ঠা দূর করে বিকেএসপিতে আজ সেঞ্চুরির ফুল ফোটালেন আবাহনী লিমিটেডের অধিনায়ক। তার সেঞ্চুরিতে তারকাবহুল দল লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জকে হারিয়েছে আবাহনী লিমিটেড।

আরো পড়ুন:

১০৭ রান দিয়ে বাংলাদেশের মাটিতে সবচেয়ে ব্যয়বহুল বোলিংয়ের রেকর্ড তাসকিনের

সেঞ্চুরিতে দলকে জেতালেন সাদমান

আগে ব্যাটিংয়ে নেমে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ৬ উইকেটে ২৯২ রান করে। জবাব দিতে নেমে আবাহনী লিমিটেড ৪ উইকেট হাতে রেখে লক্ষ্যে পৌঁছে যায়। আবাহনীর জয়ের নায়ক শান্ত ১০৮ বলে ১২ চার ও ২ ছক্কায় ১০১ রান করেন। তিনে নেমে দৃষ্টিনন্দন ইনিংস উপহার দিয়ে দলকে জেতান তিনি।

এছাড়া ওপেনিংয়ে জিসান আলম ৪৩, মোহাম্মদ মিঠুন ৩৪ এবং মুমিনুল হক ৩৫ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। শেষ দিকে ২৫ বলে ২টি করে চার ও ছক্কায় আবাহনীর জয়ের কাজটা আরো সহজ করে দেন মাহফুজুর রাব্বী।

এই জয়ে আবাহনী ৬ ম্যাচে ৫ জয় নিয়ে এখন টেবিল টপার। সমান ম্যাচে সমান জয় গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সেরও। রান রেটে এগিয়ে গাজী গ্রুপকে পেছনে ফেলেছে আবাহনী।

লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের ব্যাটিং খারাপ হয়নি। তবে আরো বড় পুঁজি পাওয়ার সুযোগ ছিল। ইনিংসের মধ্যভাগে ধারাবাহিকভাবে একাধিক উইকেট হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে যায় তারা। দলের হয়ে সাইফ হাসান সর্বোচ্চ ৬৭ রান করেন। তার সঙ্গী ওপেনার তানজিদ হাসান তামিমের ব্যাট থেকে আসে ২৪ রান।

এছাড়া ফিফটি পেয়েছেন মাহমুদুল হাসান জয়। ভালো করতে পারেননি সৌম্য ও আফিফ। তারা ধারাবাহিকভাবে করেন ২৭ ও ২৬ রান। জাকের আলী ও শেখ মাহেদী শেষ দিকে দ্রুত রান করে দলের রান তিনশর কাছাকাছি নিয়ে যান। জাকের ৩৫ বলে ৩৫ রান করেন ৩ চার ও ১ ছক্কায়। মাহেদী ১৯ বলে ৪ বাউন্ডারিতে করেন ২৮ রান।

আবাহনীর হয়ে বল হাতে ২টি করে উইকেট নেন নাহিদ রানা ও মোসাদ্দেক। নাহিদ ২ উইকেট পেলেও ১০ ওভারে ৭১ রান খরচ করেন। এছাড়া ১টি করে উইকেট নেন এসএম মেহরব ও রাকিবুল হাসান।

রূপগঞ্জের এটি ছয় ম্যাচে তৃতীয় হার। পয়েন্ট টেবিলে পাঁচে তাদের অবস্থান।

ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র পগঞ জ র ন কর উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

শ্রমিক সংকটে বিপদে কৃষক বন্যার শঙ্কা বাড়াচ্ছে উদ্বেগ

বন্যার আশঙ্কা মাথায় নিয়ে হবিগঞ্জ জেলায় চলছে ধান কাটার কাজ। ব্যস্ত হাতে মাঠের ফসল ঘরে তোলায় কাজ করে যাচ্ছেন স্থানীয় বোরোচাষিরা। শ্রমিক সংকটের কারণে ব্যাহত হচ্ছে কার্যক্রম।
ধান কাটা মৌসুমের শুরুতেই এবার বন্যার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। যার কারণে দ্রুত মাঠের কাজ শেষ করতে শ্রমিকের খোঁজ শুরু করেন কৃষকরা। তবে সংকটের কারণে হতাশ হতে হচ্ছে তাদের। এতে করে ব্যাহত হচ্ছে ধান কাটা। হাওরে জমির ধান পেকে গেলেও শ্রমিক সংকটের কারণে তা কাটতে পারছেন না কৃষকরা। যদিও কম্বাইন হারভেস্টারসহ স্থানীয় শ্রমিকের মাধ্যমে কিছু কিছু জমির ধান কেটে ফসল ঘরে তোলায় ব্যস্ত সময় পার করছেন তাদের কেউ কেউ। এরই মধ্যে আবার আগামী কয়েক দিন হবিগঞ্জসহ সিলেট বিভাগে ভারী বর্ষণ ও উজানের পানি নেমে আসার আশঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা। এমনটা হলে তলিয়ে যেতে পারে হাওরের নিচু এলাকা। শ্রমিক সংকট কাটাতে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেছেন তারা। 
সরেজমিন জেলার সবক’টি হাওরে দেখা গেছে একই দৃশ্য। পাকা ধানে ভরপুর ফসলের মাঠ। মৌসুমের শুরুতে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার জেলার হাওরাঞ্চলে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। তাই দ্রুত সময়ে গোলায় ধান তুলতে ব্যস্ত কৃষকরা। শ্রমিক সংকটের কারণে তা ব্যাহত হচ্ছে। মাঠে কাজ করতে থাকা কৃষকরা এমনটাই জানিয়েছেন। সময়মতো ধান ঘরে তুলতে না পারার দুশ্চিন্তা তাদের মনে। এদিকে বন্যার কবলে পড়ার আশঙ্কায় অনেকে অতিরিক্ত টাকা ব্যয় করে কম্বাইন হারভেস্টার দিয়ে জমির ধান কাটছেন। 
হবিগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, এবার জেলার ৯টি উপজেলায় ১ লাখ ২৩ হাজার ৮৮৪ হেক্টর জমিতে তিন ধরনের বোরো ধান আবাদ হয়েছে। তার মধ্যে ৫০ হাজার ৮৮৫ হেক্টর হাইব্রিড, উফশী জাতের ৭২ হাজার ৮০১ হেক্টর এবং স্থানীয় জাতের ধান আবাদ হয় ৫০ হেক্টর জমিতে। হাইব্রিড জাতে হেক্টরপ্রতি ৪ দশমিক ৬৮ টন, উফশীতে ৬ দশমিক ৯৩ টন ও স্থানীয় জাতের ধান প্রতি হেক্টর থেকে ১ দশমিক ৯ টন চাল উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।
এই হিসাব অনুযায়ী, হবিগঞ্জে ৫ লাখ ২৬ হাজার ৩৪৯ টন চাল উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ধানের হিসাবে গেলে তা বেড়ে দাঁড়াবে ৭ লাখ ৮৬ হাজার ৫১৮ টনে।
শ্রমিক সংকট নিয়ে লাখাই উপজেলার করাব গ্রামের রফিকুল ইসলাম বলেন, হাওরে ধান পেকে গেছে। শ্রমিক না পাওয়ায় তা কাটাতে পারছি না। স্থানীয় শ্রমিকরা একদিকে যেমন মজুরি বেশি চাইছেন অন্যদিকে আবার তাদের সময়মতো পাওয়া যাচ্ছে না। যে কারণে ধান কাটা ব্যাহত হচ্ছে। একই এলাকার কৃষক ফয়সল ইসলাম বলেন, অতিরিক্ত মজুরি দিয়েও শ্রমিক পাচ্ছি না। কৃষি উপকরণের দাম বেশি হওয়ায় উৎপাদন খরচ না ওঠার শঙ্কায় আছি।
বানিয়াচং উপজেলার মুরাদপুর গ্রামের কৃষক তাহের মিয়া বলেন, প্রতিবছরই জেলার বাইরে থেকে ধান কাটার শ্রমিক আসে। এবার এখন পর্যন্ত পর্যাপ্ত শ্রমিক আসেনি। যে কারণে সংকট তীব্র হয়েছে। শ্রমিক না পেয়ে বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে হারভেস্টার মেশিনের মাধ্যমে ধান কাটাতে হচ্ছে।  
হবিগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, রাজশাহী, কুমিল্লাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে শ্রমিক আসতে শুরু করেছে। তারা এলে শ্রমিক সংকট কেটে যাবে। শ্রমিকের পাশাপাশি হারভেস্টার মেশিন দিয়ে ধান কাটা হচ্ছে। 
হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ফরিদুর রহমান জানান, বন্যা ও শ্রমিক সংকট মোকাবিলায় জেলায় অতিরিক্ত ধান কাটার যন্ত্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাকা ধান দ্রুত কাটার জন্য কৃষকদের বলা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ