ইসরায়েলের বিমান হামলায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ৩৪০ ছাড়িয়েছে
Published: 18th, March 2025 GMT
গাজা ভূখণ্ডজুড়ে চালানো ইসরায়েলের বিমান হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা ৩৪০ ছাড়িয়ে গেছে। যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে চালানো এই হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে অনেকেই নারী ও শিশু।
এমনকি এই তাণ্ডব থেকে রক্ষা পায়নি নিজের বাড়িতে থাকা ফিলিস্তিনি অন্তঃসত্ত্বা নারীও। মঙ্গলবার এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল জাজিরা।
চ্যানেলটি তাদের সরাসরি সম্প্রচারিত আপডেটে জানিয়েছে, গাজায় যুদ্ধবিরতির অবসান ঘটিয়েছে ইসরায়েল এবং এরপর অবরুদ্ধ এই উপত্যকা জুড়ে বিমান হামলা শুরু করেছে। বর্বর এই হামলায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৩৪২ জন ফিলিস্তিনির নিহত এবং অন্যান্য আরও অনেকের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
নিহতদের মধ্যে অনেক নারী ও শিশু রয়েছে বলে জানিয়েছে চিকিৎসা সূত্র। এছাড়া এখন পর্যন্ত নিহতদের মধ্যে গাজার উত্তরাঞ্চলেই প্রাণ হারিয়েছেন ১৫৪ জন।
এদিকে গাজার অবরুদ্ধ এবং অরক্ষিত বেসামরিক নাগরিকদের ওপর “বিশ্বাসঘাতকতাপূর্ণ” হামলার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। হামাস বলছে, গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাতিল করার জন্য ইসরায়েল অবরুদ্ধ ও অরক্ষিত বেসামরিক নাগরিকদের ওপর “বিশ্বাসঘাতকতাপূর্ণ” আক্রমণ চালিয়েছে।
এছাড়া আরেক ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী প্যালেস্টানিয়ান ইসলামিক জিহাদও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে “ইচ্ছাকৃতভাবে যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ” করার অভিযোগ করেছে। এই যুদ্ধবিরতি চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি থেকে কার্যকর ছিল।
আল জাজিরা বলছে, গাজার মধ্যাঞ্চলে ইসরায়েলি হামলায় এক গর্ভবতী নারী নিহত হয়েছেন। গাজা থেকে আল জাজিরার মারাম হুমাইদ বলেছেন, আজ ভোরে নিহত তিন শতাধিক ফিলিস্তিনির মধ্যে একজন গর্ভবতী নারী এবং তার শিশুও রয়েছেন।
গাজার মধ্যাঞ্চলের নুসাইরাতের নিজেদের বাড়িতে ইসরায়েলের হামলায় তারা নিহত হয়েছেন বলেও হুমাইদ জানিয়েছেন।
এদিকে ইসরায়েলি এক সামরিক কর্মকর্তা গাজায় স্থল আক্রমণের হুমকি দিয়েছেন। নাম প্রকাশ না করা ওই ইসরায়েলি সামরিক কর্মকর্তা সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ইসরায়েলের আক্রমণ যতদিন প্রয়োজন ততদিন অব্যাহত থাকবে এবং বিমান হামলার বাইরেও বিস্তৃত হবে। যা গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সেনাদের সম্ভাব্য স্থল অভিযানে প্রত্যাবর্তনের ইঙ্গিত দেয়।
এই পরিস্থিতিতে ইসরায়েলকে জবাবদিহি করার জন্য হামাস যুদ্ধবিরতি মধ্যস্থতাকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে এবং আরব লীগ ও ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)-কে গাজা উপত্যকায় আরোপিত অন্যায্য অবরোধ ভাঙতে ফিলিস্তিনিদের সমর্থন করার আহ্বান জানিয়েছে।
একইসঙ্গে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে জরুরি বৈঠক করে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস, যাতে ইসরায়েলকে তার আগ্রাসন বন্ধ করতে বাধ্য করা যায়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আল জ জ র ইসর য় ল ইসর য
এছাড়াও পড়ুন:
সয়াবিন তেলের ট্রাক লুট, হাত পা বাঁধা চালক-হেলপার উদ্ধার
চট্টগ্রাম থেকে রংপুরে যাওয়ার পথে বগুড়ার মহাস্থান গড়ের ব্রিজ এলাকায় সয়াবিন তেলভর্তি ট্রাক লুট করে ডাকাতরা। পরে লুট করা ওই ট্রাকের চালক ও তার হেলপারকে হাত-পা বাঁধা ও মুখে কসটেপ লাগানো অবস্থায় জয়পুরহাটের কালাই পৌরশহরের পূর্বসড়াইল এলাকায় ধান ক্ষেত থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে স্থানীয় এক কৃষক জরুরি সেবা ৯৯৯ এ কল দিলে কালাই থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করে। পরে তাদের দুজনকে আহত অবস্থায় কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
আহত ট্রাক চালক আব্দুল মালেক (৪৫) রংপুর সদরের বাবুগাঁও গ্রামের মৃত নূরুল ইসলামের ছেলে এবং হেলপার নজরুল ইসলাম একই জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের বাসিন্দা। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদ হোসেন।
প্রত্যক্ষদর্শী, আহত চালক ও থানা পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত রোববার চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সয়াবিন তেলভর্তি ট্রাক নিয়ে রংপুরের উদ্দেশে রওনা হন। ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক হয়ে আসার পথে রোববার দিবাগত রাত তিনটার দিকে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার মহাস্থান গড় ব্রিজ এলাকায় পৌঁছালে ১৫/২০ জনের একদল ডাকাত পেছন থেকে আরেকটি ফাঁকা ট্রাক নিয়ে এসে তাদের পথরোধ করে। তেলভর্তি ট্রাকে ওঠে চালক ও হেলপারকে মারপিট করে তাদের ট্রাকে ওঠিয়ে মুখে কসটেপ লাগিয়ে হাত-পা বেঁধে রাখেন। এরপর দুইটি ট্রাক তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ডাকাতরা রংপুরের দিকে রওনা হন। পথে মোকামতলায় এসে ডাকাতরা রাস্তা পরিবর্তন করে জয়পুরহাটের দিকে রওনা দেয়। ট্রাকের চালক ও সহকারীকে হাত-পা বাঁধা ও মুখে কসটেপ লাগানো অবস্থায় জয়পুরহাট-বগুড়া মহাসড়কের কালাই পৌরশহরের পূর্বসড়াইল এলাকায় ধান ক্ষেতে ফেলে যায়।
সোমবার বিকেলে সড়াইল মহল্লার কৃষক খলিলুর রহমান ধান ক্ষেতে গিয়ে তাদেরকে দেখতে পায়। তিনি জরুরি সেবা ৯৯৯ কল দিয়ে ঘটনাটি জানান। পরে কালাই থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করায়।
হাসপাতালে অসুস্থ অবস্থায় চালক আব্দুল মালেক বলেন, আমাদেরকে মারপিট করেছে ডাকাতরা। রাত তিনটা থেকে আমরা দুজন ধান ক্ষেতের কাঁদা-পানির মধ্যে পড়ে আছি। মুখে টেপ লাগানো ছিল, তাই চিৎকার করতে পারিনি। অনেককে ধান ক্ষেতের আঁইলে যাতায়াত করতে দেখতে পেয়েও কিছু বলতে পারিনি। ডাকাতরা ট্রাক নিয়ে কোনদিকে গেছে তাও বলতে পারি না।
কৃষক খলিলুর রহমান বলেন, বিকেলে ধান ক্ষেতে গিয়ে ওদের দুইজনকে কাঁদামাখা দেখে ভেবেছিলাম দুইটা লাশ পড়ে আছে। পরে তাদের নড়াচড়া দেখে ভয়ে ৯৯৯ এ কল দিয়ে জানাই। পুলিশ এসে তাদের দুইজনকে উদ্ধার করে নিয়ে গেছে।
কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদ হোসেন বলেন, জরুরি সেবা ৯৯৯ এ কল পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে চালক ও হেলপারকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। পরে তাদেরকে কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। তাদের পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে। সুস্থ হলে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে এবং তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।