নাটোরে সাংবাদিকদের ওপর হামলার মামলায় এসপি ফজলুল হকের জামিন নামঞ্জুর
Published: 18th, March 2025 GMT
নাটোরে আদালত চত্বরে সাংবাদিকদের ওপর হামলার মামলায় বরখাস্ত পুলিশ সুপার (এসপি) এস এম ফজলুল হকের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার দুপুরে নাটোরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আল-আমিন আবেদনটি নামঞ্জুর করেন।
আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আজ দুপুরে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দ্রুত বিচার আইনে করা মামলায় বরখাস্ত পুলিশ সুপার এস এম ফজলুল হকের জামিন আবেদন করেন তাঁর আইনজীবী সোহেল রানা। জামিনের বিরোধিতা করেন জেলার সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) রুহুল আমীন তালুকদারসহ অন্তত ১০ আইনজীবী।
সরকারি কৌঁসুলি আদালতকে বলেন, আসামি একজন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকর্তা হওয়া সত্ত্বেও পুলিশি হেফাজতে থাকা অবস্থায় সন্ত্রাসী কায়দায় সাংবাদিকদের কাজে বাধা দিয়েছেন এবং কিল–ঘুষি মেরে যন্ত্রপাতি ভেঙেছেন ও সাংবাদিকদের আহত করেছেন। এই আসামি জামিনে মুক্তি পেলে নাটোরের সাংবাদিকদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে। শুনানি শেষে আদালত ফজলুল হকের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন।
ফজলুল হক ১১ মার্চ এক মামলায় আদালতে হাজির হয়ে জামিন চাইলে আদালত তা নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আদালত থেকে হাজতখানায় নেওয়ার পথে সাংবাদিকেরা তাঁর ছবি তুলতে গেলে তিনি সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী সাংবাদিক কাউছার আহমেদ সদর থানায় দ্রুত বিচার আইনে মামলা করেন। ওই মামলায় আজ তাঁর পক্ষে জামিনের আবেদন করা হয়। ফজলুল হক বরখাস্ত অবস্থায় বর্তমানে ময়মনসিংহ রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত আছেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী সোহেল রানা বলেন, আসামিপক্ষ আবারও জামিনের আবেদন করবেন। আসামি ন্যায়বিচার পাবেন বলে আশা করেন তিনি।
নাটোর আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) রুহুল আমীন তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, আদালত উভয় পক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্য শোনার পাশাপাশি বাদীর বক্তব্য শোনেন এবং ঘটনার ভিডিও চিত্র দেখেন। সবকিছু বিবেচনা করে তিনি আসামি ফজলুল হকের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। রাষ্ট্রপক্ষ এই আদেশে সন্তুষ্ট হয়েছে।
আরও পড়ুননাটোরে সাংবাদিকদের ওপর বরখাস্ত এসপির চড়াও হওয়ার ঘটনায় থানায় অভিযোগ১২ মার্চ ২০২৫আরও পড়ুননাটোরে আদালতে ছবি তোলায় সাংবাদিকের ওপর হামলা বরখাস্ত পুলিশ সুপারের১১ মার্চ ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ঘুষ-দুর্নীতি বন্ধে শরীয়তপুর আদালত চত্বরে অভিযোগ বাক্স স্থাপন
ঘুষ, দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ হিসেবে ‘অভিযোগ বাক্স’ খুলেছেন শরীয়তপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। আজ সোমবার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবুল বাশার মিঞা এ–সংক্রান্ত একটি পরিপত্র জারি করেছেন। পত্রটি জেলা ও দায়রা জজসহ আদালতের সব বিচারক, আদালত পুলিশ, সরকারি কৌঁসুলি (পিপি), আইনজীবী সমিতি ও প্রেসক্লাবে পাঠানো হয়েছে।
জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দেয়ালে একটি অভিযোগ বাক্স স্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়া মুঠোফোন নম্বর, হোয়াটসঅ্যাপ, ই–মেইলেও অভিযোগ জানাতে পারবেন সংশ্লিষ্টরা।
সম্প্রতি শরীয়তপুর আইনজীবী সমিতির একটি সভায় আদালতের পেশকার, পিয়ন ও কোর্ট পুলিশের ঘুষ দেওয়ার টাকার হার নির্ধারণের সিদ্ধান্ত হয়। গত বৃহস্পতিবার ওই টাকার হার নির্ধারণের জন্য করা একটি সভার রেজল্যুশন (কার্যবিবরণী) আদালতের বিভিন্ন কর্মচারী, আইনজীবী ও আইনজীবীর সহকারীদের দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা ধরনের আলোচনা হচ্ছে। আইনজীবী সমিতির ওই সিদ্ধান্ত নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। যার প্রেক্ষিতে শরীয়তপুর আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
ওই চিঠিতে বলা হয়, বিচারপ্রার্থী জনতা, আইনজীবী ও সর্বসাধারণের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের আওতাধীন যেকোনো আদালত বা শাখায় বিচারিক সেবা গ্রহণের সময় কোনো প্রকার ঘুষ, দুর্নীতি বা অনিয়মের অভিযোগ থাকলে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের বাইরে দেয়ালে স্থাপিত অভিযোগ বক্সে ও নির্ধারিত নম্বরে সরাসরি ফোন করে, হোয়াটসঅ্যাপ ও ই–মেইলে জানানোর আহ্বান জানানো হয়। এ ছাড়া কোনো ধরনের ঘুষ গ্রহণ বা প্রদানের ঘটনা প্রত্যক্ষ করে ভিডিও, অডিও, ছবি ও কোনো প্রমাণ থাকলে সেগুলো জানানোর অনুরোধ করা হয়। প্রতিটি মাধ্যমে গৃহীত অভিযোগ সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শরীয়তপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের প্রশাসনিক কর্মকর্তা সামছুল হক সরকার বলেন, ‘শরীয়তপুরে আদালতের কোনো কর্মচারী ঘুষ-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নয়। আইনজীবী সমিতি আমাদের বদনাম করার জন্য বিভিন্ন ফি নির্ধারণ করেছেন। আমরা দুর্নীতিতে জিরো টলারেন্স নীতিতে আছি। আদালতের কর্মচারীদের নাম ব্যবহার করে কোনো পক্ষ বিচারপ্রার্থীদের হয়রানি করতে পারে। যার কারণে এ–সংক্রান্ত অভিযোগ, ঘুষ, দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ নেওয়া হবে।’