সাবেক এমপি আক্তারুজ্জামান বাবুর জমি জব্দ ও ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ
Published: 18th, March 2025 GMT
খুলনা-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. আক্তারুজ্জামান বাবুর ঢাকার মোহাম্মদপুরের ২ একর জমি, খুলনার দুটি বাড়ি ও কেসিসি মার্কেটে তিনটি দোকানসহ মোট ৪.৩৬ বিঘা বা প্রায় ১৩ বিঘা জমি জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তার ১৪টি ব্যাংক হিসাবও অবরুদ্ধ করা হয়েছে, যেখানে ৩১ লাখ ৮ হাজার ৮৭৩ টাকা রয়েছে।
মঙ্গলবার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত এ আদেশ দেন। দুদকের পক্ষে উপপরিচালক জয়নাল আবেদীন আবেদন করেন। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
দুদকের আবেদনে উল্লেখ করা হয়, সাবেক এই সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, তিনি তার নামে ঠিকাদারি ব্যবসাসহ বিভিন্ন অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন।
বিশ্বস্ত সূত্রের বরাতে দুদক জানায়, অভিযুক্ত ব্যক্তি ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্টরা তাদের সম্পদ হস্তান্তরের চেষ্টা করছেন, যা তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। এ কারণে সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচার নিশ্চিতে এসব সম্পদ জব্দ ও ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়েছে।
দুদকের অনুসন্ধান দল ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে এবং তদন্ত শেষে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
চেক ডিজঅনার মামলায় শফিউল্লাহ মল্লিকের কারাদণ্ড
নারায়ণগঞ্জের চিহ্নিত প্রতারক শফিউল্লাহ মল্লিকের বিরুদ্ধে এক বছরের কারাদণ্ড ও ৫৫ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছে আদালত। বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলমগীর খান চঞ্চলের দায়ের করা চেক ডিজঅনার মামলায় নারায়ণগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট 'ক' অঞ্চলের বিচারক এই রায় প্রদান করেন।
রায় প্রদানকালে প্রতারক শফিউল্লাহ মল্লিক পলাতক ছিলেন। তাকে গ্রেফতার করে রায় কার্যকরের নির্দেশ প্রদান করেন বিচারক।
মামলা সূত্রে জানা যায়, আবাবিল নিট কম্পোজিট ফ্যাক্টরির ম্যানেজিং ডিরেক্টর শফিউল্লাহ মল্লিকের সাথে ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিল কালার ভ্যালি অটো প্রিন্ট ইন্ডাস্ট্রির ডিরেক্টর আলমগীর খান চঞ্চলের।
ব্যবসায়িক লেনদেনের এক পর্যায়ে আলমগীর খান চঞ্চল শফিউল্লাহ মল্লিকের কাছ থেকে অনেক টাকা পাওনা হয়ে যায়। পাওনা টাকা পরিশোধ করতে না পারায় সফিউল্লাহ মল্লিক ২০২০ সনের ২৩ জুলাই তারিখে আলমগীর খান চঞ্চলের নামে পূবালী ব্যাংকের নারায়ণগঞ্জ শাখার একটি চেক প্রদান করেন।
চেকে টাকার পরিমাণ ছিল ৫৫ লক্ষ টাকা। চেক নাম্বার ছিল ঈঅ৫০-গ-০৬৬৭৫০৭ এবং অ্যাকাউন্ট নাম্বার ০০৩৭৯০১০৩৭১০৪ শফিউল্লাহ মল্লিকের কাছ থেকে ৫৫ লক্ষ টাকার চেক পেয়ে তা ব্যাংকে উপস্থাপন করলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় চেকটি ডিজঅনার করা হয়।
এরপর ২০২০ সালের ২৭ জুলাই তারিখে আলমগীর খান চঞ্চল একজন আইনজীবীর মাধ্যমে ৩০ দিন সময় দিয়ে একটি লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণ করেন। নিজেদের একাউন্টে টাকা নাই জেনেও চেক প্রদান করায় এবং লিগ্যাল নোটিশ পাওয়ার পরেও পাওনা পরিশোধ না করায় শফিউল্লাহ মল্লিকসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন আলমগীর খান চঞ্চল। মামলা নাম্বার দায়রা ৫৫০/২১ সিআর ৭৪৫/২০।
দীর্ঘ পাঁচ বছর মামলার শুনানি শেষে বিজ্ঞ আদালত মামলার প্রধান আসামি শফিউল্লাহ মল্লিককে এক বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫৫ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডের রায় প্রদান করেন এবং বাকি আসামীদের খালাস প্রদান করেন প্রধান আসামি পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন এবং আসামিকে গ্রেফতার করে বিচারের রায় কার্যকর করার জন্য নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানা কে নির্দেশ প্রদান করেন বিচারক।
স্থানীয় সূত্রে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জের মাসদাইর বাজার এলাকার বসবাসরত প্রতারক শফিউল্লাহ মল্লিকের বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত নেই।
তার জন্মদাতা পিতা এবং সহোদর ভাইদের সম্পত্তি আত্মসাৎ এর গুরুতর অভিযোগ পাওয়া যায় শফিউল্লাহ মল্লিকের বিরুদ্ধে। তার পিতা শফিউদ্দিন মল্লিক বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় শফিউল্লাহ মল্লিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিলেন এবং সে মামলায় শফিউল্লাহ মল্লিক গ্রেপ্তার হয়ে দীর্ঘদিন কারাবাস করেন।
এছাড়াও বিভিন্ন সময় মানুষের টাকা পয়সা এবং জায়গা সম্পত্তি আত্মসাতে অভিযোগে পাওয়া যায় শফিউল্লাহ মল্লিকের বিরুদ্ধে। এলাকায় তিনি মামলাবাজ হিসেবেও পরিচিত। তিনি সম্পত্তি আত্মসাৎ এর জন্য তার নিজ ভাইদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন অনেকগুলো।
এই প্রতারক শফিউল্লাহ মল্লিক বর্তমানে পলাতক আছেন তাকে গ্রেপ্তার করে উপযুক্ত শাস্তি প্রদানের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।