শাস্তির মুখোমুখি জাবির ২৯৮ শিক্ষক-শিক্ষার্থী
Published: 18th, March 2025 GMT
জুলাই আন্দোলনকারীদের ওপর হামলায় মদদ দেওয়ায় নয়জন শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) প্রশাসন। একইসঙ্গে হামলায় জড়িত ২৮৯ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
সোমবার (১৭ মার্চ) প্রায় চৌদ্দ ঘণ্টাব্যাপি চলা সিন্ডিকেট সভা শেষে রাত ৩টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন জাবি উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান।
সিন্ডিকেট সভা সূত্রে জানা গেছে, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ি ১৫-১৭ জুলাই জাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় মদদ দেওয়ায় নয়জন শিক্ষককে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে ১৪-১৭ জুলাই আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িত থাকায় ২৮৯ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কৃত এসব শিক্ষার্থীদের সবাই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতি করতেন বলে জানা গেছে।
আরো পড়ুন:
ক্যাম্পাসে সাংবাদিকরা সবচেয়ে বেশি ট্যাগিংয়ের শিকার হয়: জাবি উপাচার্য
জাবির সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের স্থায়ী ভবন দাবি
সাময়িক বরখাস্ত হওয়া শিক্ষক ও সাময়িক বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের বিষয়ে অধিকতর তদন্তের জন্য একটি স্ট্রাকচার্ড কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি ওই হামলার ঘটনায় আরো ১০ জন শিক্ষকের সংশ্লিষ্টতা ও অপরাধের মাত্রা বিবেচনায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত প্রদান করবেন।
বহিষ্কৃতদের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িতদের সনদপত্র স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া স্নাতক বা স্নাতকোত্তর পরীক্ষা দিয়েছেন এমন শিক্ষার্থীদের ফলাফল স্থগিত এবং বিশেষ ক্ষেত্রে সনদপত্র স্থগিত করা হবে বলে জানানো হয়েছে। আর নিয়মিত শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষতা ও শৃঙ্খলা অধ্যাদেশ এর আওতায় অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মকর্তারা না পড়লেও বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে দায়ের কারণে অবসরপ্রাপ্তদের সংশ্লিষ্টতা যেখানে আছে, সেখানে সিদ্ধান্ত গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট। এরই পরিপ্রেক্ষিতে জুলাই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার দায়ে জাবির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মো.
জুলাই হামলার সংশ্লিষ্টতার ঘটনায় দুইজন কর্মকর্তা ও একজন কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
ঢাকা/আহসান/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মেঘনা আলমের মুক্তিসহ বিশেষ ক্ষমতা আইন বিলোপের দাবি
১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে আটক মেঘনা আলমের মুক্তির দাবি জানিয়েছে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি। একইসঙ্গে এই আইন বিলোপেরও দাবি জানানো হয়েছে। শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই দাবি জানানো হয়। কমিটির পক্ষে এই বিবৃতি পাঠান সংগঠনের সদস্য অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।
বিবৃতিতে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মেঘনা আলমের আটকের ঘটনাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিচার বিভাগের স্বৈরাচারি আচরণের বহিঃপ্রকাশ বলে উল্লেখ করা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বিশেষ ক্ষমতা আইন, ১৯৭৪ একটি ফ্যাসিবাদী আইনের ধারা, যার বিরুদ্ধে বর্তমান সরকারের বেশ কয়েকজন উপদেষ্টা আগে বিভিন্ন সময় প্রতিবাদ করেছেন। অথচ এই আইন ব্যবহার করেই সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূতের অন্যায় আচরণ ও প্রতারণা ঢাকতে একজন নারীকে বাড়িতে হামলা করে তুলে নিয়ে তাকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। গত ১৫ বছর শেখ হাসিনার শাসনামলে বহু গুম ও স্বেচ্ছাচারি আটকের ভিত্তি তৈরি করে নাগরিকের মানবাধিকারকে নিষ্পেষিত করা হয়েছিল। জুলাইয়ে শিক্ষার্থী শ্রমিক জনতার বিপুল রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তর যখন জনগণের আকাঙ্খা হয়ে উঠেছে, তখন এ রকম আইনের ব্যবহার পুনরায় ফ্যাসিবাদী তৎপরতার প্রকাশ ঘটিয়েছে।’
মেঘনা আলমের বিরুদ্ধে পুলিশের আনা ‘মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে কূটনীতিক সম্পর্ক নষ্ট করার’ অভিযোগকে বিভ্রান্তিকর ও অগ্রহণযোগ্য হিসেবে আখ্যা দিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, রাষ্ট্র যদি একজন কূটনীতিকের ব্যক্তিগত বিদ্বেষের জের ধরে রাষ্ট্রীয় বাহিনী ব্যবহার করে নাগরিকের অধিকার হরণ করে, তাহলে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব প্রশ্নবিদ্ধ হয়। একইসঙ্গে কূটনৈতিক প্রশ্নে দ্ব্যর্থহীন নতজানুতা প্রকাশ পায়।
বিবৃতিতে অবিলম্বে মেঘনা আলমের মুক্তি এবং বিশেষ ক্ষমতা আইন (১৯৭৪) বিলোপের দাবি জানায় গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি। একইসঙ্গে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনারও দাবি জানানো হয়।