২০ রমজানের মধ্যে শ্রমিকদের ঈদ বোনাস এবং ঈদের ছুটির আগে বেতনসহ অন্যান্য পাওনা পরিশোধ করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি। একই সঙ্গে তারা ঈদে শ্রমিকদের জন্য বিশেষ পরিবহন সেবা চালু এবং ছাঁটাই-নির্যাতন বন্ধের দাবি জানিয়েছে।

রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় এক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ থেকে এসব দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির নেতা-কর্মীরা। সংগঠনটির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।

সমাবেশে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপ্রধান তাসলিমা আখ্তারের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহিম চৌধুরী, সহসভাপ্রধান অঞ্জন দাস, দপ্তর সম্পাদক আসাদুল ইসলাম, নারীবিষয়ক সম্পাদক সাবিনা ইয়াসমিন প্রমুখ। সঞ্চালনা করে কেন্দ্রীয় সহসাধারণ সম্পাদক প্রবীর সাহা।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ২০ রোজার মধ্যে শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধ করতে বলেছে সরকার। অতীত অভিজ্ঞতার কারণে এবারও ঈদের আগে বেতন-বোনাস পরিশোধ নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দিচ্ছে। মিরপুর, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন শ্রমিক অঞ্চলে শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করা হচ্ছে না। মজুরি-বোনাস না দিয়ে উল্টো শ্রমিকদের ছাঁটাই করা বা কারখানা বন্ধ করা হচ্ছে।

শ্রমিকনেতারা আরও বলেন, ঈদ এলেই পরিবহন খাতে সিন্ডিকেট তৈরি করে ভাড়া দ্বিগুণ-তিনগুণ বৃদ্ধি করা হয়। ভাড়া বৃদ্ধির সিন্ডিকেট প্রতিরোধ করে ঈদ উপলক্ষে বিশেষ পরিবহন সেবা চালু করতে সরকারের প্রতি দাবি জানান তাঁরা।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, শ্রমিক ও শিল্পের স্বার্থে ঈদের আগে বোনাস ও বেতন নিশ্চিত করা জরুরি। শ্রমিকেরা যাতে ছুটির প্রস্তুতি নিতে পারেন, সে জন্য ২০ রোজার মধ্যে শ্রমিকদের পুরো বোনাস এবং ঈদের ছুটির আগে চলতি মাসের পূর্ণ বেতন ও অন্যান্য বকেয়া পরিশোধ করতে হবে। তা না হলে শ্রমিকদের ঈদের আনন্দ বিষাদে পরিণত হবে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

২ এপ্রিল থেকে ট্রাম্পের উচ্চ শুল্ক আরোপের হুমকির বিষয়ে পরিষ্কার নয় ভারত

ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পণ্যে আগামী ২ এপ্রিল থেকে উচ্চ শুল্ক আরোপ করবেন বলে হুমকি দিয়ে রেখেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু ভারতের কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ধারণা, সেটা হলে কিছু ক্ষেত্রে ভারতের সুবিধা হবে। অর্থাৎ বিষয়টি কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভারতের জন্য শাপেবর হতে পারে।

ভারতের কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় মনে করছে, কিছু দেশের পণ্যে শুল্ক ভারতের জন্য রপ্তানির নতুন সুযোগ তৈরি করতে পারে। তাই ট্রাম্পের হুঁশিয়ারিতে চ্যালেঞ্জের সঙ্গে সম্ভাবনাও দেখছে তারা। বাণিজ্যসচিব সুনীল বার্থওয়াল বলেন, ভারত সরকার ইতিবাচক ও নেতিবাচক—সব প্রভাবই খতিয়ে দেখছে। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়া।

সম্প্রতি ট্রাম্প আবার বলেছেন, ২ এপ্রিল থেকে ভারতের মতো দেশে উচ্চ শুল্ক আরোপ করা হবে। এটা পাল্টা পদক্ষেপ, অর্থাৎ তারা মার্কিন পণ্যে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করে বলে যুক্তরাষ্ট্রও পাল্টা তাদের পণ্যে শুল্ক আরোপ করবে।

কিন্তু ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের যুক্তি, আমেরিকা ঠিক কী নীতি গ্রহণ করছে, তা স্পষ্ট নয়। ভারত যদি যুক্তরাষ্ট্রের বৈদ্যুতিক গাড়িতে চড়া শুল্ক বসিয়ে থাকে, তার পাল্টা জবাবে ট্রাম্প কি ভারতের সব পণ্যে পাল্টা শুল্ক বসাবেন, নাকি শুধু গাড়িতে আরোপ করবেন, নাকি শুধুই বৈদ্যুতিক গাড়িতে করবেন, তা বোঝা যাচ্ছে না। তাতে আদৌ লোকসান হবে কি না, সেটাও প্রশ্ন। কারণ, ভারতের বাজারে যুক্তরাষ্ট্রের যে পণ্যে শুল্ক চড়া, তেমন অনেক পণ্য ভারত যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করে না।

দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ভারতের চড়া শুল্ক নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসন যে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে, তার প্রতিবেদন ১ এপ্রিল প্রকাশিত হওয়ার কথা। ৩০ আগস্টের মধ্যে শিল্পকে মতামত দিতে হবে। ফলে ২ এপ্রিল থেকে কীভাবে শুল্ক আরোপ করা হবে, তা স্পষ্ট নয়।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরুর সিদ্ধান্ত হয়েছিল। বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে দেনদরবারও করে এসেছেন। দুই দেশের বাণিজ্য ২০ হাজার কোটি ডলার থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে ৫০ হাজার কোটি ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্য আছে।

ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উচ্চ শুল্ক নিয়ে কথা না বলে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে দর-কষাকষির মধ্যেই বিষয়টি রাখা হচ্ছে। আলোচনায় অগ্রগতিও হচ্ছে, বাকিটা যুক্তরাষ্ট্রের নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয়।

এদিকে ভারতের গবেষণাপ্রতিষ্ঠান এসবিআই রিসার্চের গবেষণায় দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ শুল্কের কারণে ভারতের রপ্তানি কমতে পারে ৩ থেকে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ। দেশটি যেভাবে রপ্তানির বহুমুখীকরণ করছে তাতে যুক্তরাষ্ট্রের শাস্তিমূলক শুল্কের প্রভাব তারা কাটিয়ে উঠতে পারবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ