খাগড়াছড়িতে মিষ্টি ভুট্টার চাষ করে সফল হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছোট মনি চাকমা। আর্থিকভাবে লাভবান হলে আগামীতে এই ফসলটি আরো বেশি পরিমাণে চাষ করবেন বলে পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন জেলা সদরের খবংপুড়িয়া গ্রামের এই বাসিন্দা।

ছোট মনি চাকমা খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলার লেমুছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক। শিক্ষকতার পাশাপাশি আধুনিক কৃষিতে ঝোঁক রয়েছে তার। তিনি খাগড়াছড়ি পৌরসভার খবংপড়িয়া এলাকার নিজ জমিতে স্ট্রবেরি চাষ করে সফলতা পেয়েছিলেন। ২০১৫-২০১৬ সালে ৪০ শতক জায়গায় প্রায় চার লাখ টাকার স্ট্রবেরি চাষ করেন তিন। উৎপাদিক স্ট্রবেরি বিক্রি করে প্রায় ৫০ হাজার টাকা লাভ করেন তিনি।          

এরপর বিদেশি ফল ড্রাগন চাষ করেও লাভবান হন এই শিক্ষক। তিনি জানান, ২০১৫ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত এই ফলটির চাষ করেছেন তিনি। একবার গাছ লাগালে কয়েক বছর ফল পাওয়া যায়। তার দেড় লাখ টাকার মতো খরচ হয় ড্রাগন গাছের পেছনে। তিনি প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকার ফল ও চারা বিক্রি করেছেন। 

আরো পড়ুন:

তামাকের রাজ্যে পরিণত হচ্ছে দীঘিনালা

‘টমেটো এখন পাখিদের খাদ্য’

একদিন স্কুল থেকে ফেরার সময় দুই কেজি মিষ্টি ভুট্টা কিনে এনেছিলেন ছোট মনি চাকমা। সেই ভুট্টা খাওয়ার পর থেকেই তার মধ্যে ভুট্টা চাষের আগ্রহ দেখা দেয়। খাগড়াছড়ি বাজারের বীজের দোকানগুলোতে মিষ্টি ভুট্টার বীজ না পেয়ে, পরিচিত এক ব্যক্তির মাধ্যমে প্রতিকেজি বীজ চার হাজার টাকায় সংগ্রহ করেন তিনি। পরে নিজের ৪০ শতক জমিতে রোপণ করেন ভুট্টার বীজ। এখন তার ক্ষেতের একেকটি গাছে দুই থেকে তিনটি ভুট্টার সবল মোচা ধরেছে। 

ছোট মনি চাকমা জানান, তিনি বিগত কয়েক বছর ধরে বরই চাষ করছেন। এবারও বরই চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন। গাছগুলো কেটে ফেলা হয়েছে। বরইয়ের পাশাপাশি এবার  শসা, ব্রকোলি, বিট রুট পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করেছেন। অন্য একটি জমিতে মিষ্টি ভুট্টার চাষও করেছেন তিনি। এই ফসলটি বিক্রি করে লাভবান হতে পরলে আগামীতে আরো বেশি পরিমাণ জমিতে ভুট্টা চাষ করবেন।

চোট মনি চাকমার প্রতিবেশী প্রিয় লাল চাকমা বলেন, ‍“তাকে দেখে আমরাও আগামীতে এই মিষ্টি ভুট্টা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছি। বর্তমানে ছোট মনি চাকমা প্রতিকেজি মিষ্টি ভুট্টা ১০০ টাকা দরে বিক্রি করছেন।”

খাগড়াছড়ি কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ বাছিরুল আলম বলেন, “ছোট মনি চাকমা একই উচ্চ বিদ্যালয়ে চাকরি করেন। তার কৃষির প্রতি ভালোবাসা আছে। এ বছর এই শিক্ষক মিষ্টি ভুট্টা চাষ করেছেন। তার ক্ষেতে ভুট্টার ফলন ভালো হয়েছে।” 

তিনি আরো বলেন, “মিষ্টিার ভুট্টার প্রচুর চাহিদা রয়েছে। বাজারে বীজের দাম বেশি হওয়ায় অনেক কৃষক এই ফসলটি চাষ করতে পারেন না। সরকারিভাবে যদি বীজ সরবরাহ করা হয়, তাহলে কৃষকদের মধ্যে মিষ্টি ভুট্টা চাষে আগ্রহ বাড়বে।”

ঢাকা/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফসল ছ ট মন চ ষ কর কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

সম্মেলনে ৩১০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে: বিডা চেয়ারম্যান

ঢাকায় চার দিনের সম্মেলনে ৩ হাজার ১০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ বোর্ডের নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী।

রবিবার (১৩ এপ্রিল) রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান তিনি।

তিনি বলেন, খরচের হিসাব দিয়ে সামিটকে মূল্যায়ন করা যাবে না। বিনিয়োগের সব ক্রেডিট এই সামিটের নয়, এটা আগে থেকে চলতে থাকা আলোচনার ভিত্তিতে হয়েছে। সামিটে এসেই বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়ে দেবেন, বিষয়টি এমন নয়। তাই এটাকে সামিটের সফলতা হিসেবে দেখার সুযোগ নেই।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ৪ দিনের ওই সম্মেলনের আয়োজন করে। সংবাদ সম্মেলনের বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন, বিডার বিজনেস ডেভেলপমেন্ট বিভাগের প্রধান নাহিয়ান রহমান রোচি, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপ প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।

বিডা চেয়ারম্যান বলেন, এই সম্মেলনের মাধ্যমে ৩ হাজার কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ এসেছে। সরকারি খরচ হয়েছে দেড় কোটি টাকা। তবে খরচের হিসাব দিয়ে সামিটকে মূল্যায়ন করা যাবে না। বিনিয়োগের সব ক্রেডিট এই সামিটের নয়, এটা আগে থেকে চলতে থাকা আলোচনার ভিত্তিতে হয়েছে। চারদিনের সামিটে এসে কেউ ১০০ কোটি টাকার চেক লিখে ফেলবে, বিষয়টি এমন নয়। তাই এটাকে সামিটের সফলতা হিসেবে দেখার সুযোগ নেই। সামিটের খরচ দিয়ে বিনিয়োগের পরিমাণ বিচার করলে হবে না।

তিনি বলেন, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ফ্যাক্টরি ভিজিট করিয়েছি। ফ্যাক্টরি করতে হলে কোথায় যেতে হবে, তাদের দেখানো হয়েছে। সম্মেলনে এসে বিনিয়োগকারীরা খুব খুশি হয়েছেন, তাদের মধ্যে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আগ্রহ তৈরি হয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য খাবারের ম্যানু থেকে আমরা যেন আগেই বাদ না পড়ে যাই। আমরা একইসাথে সংস্কারের কাজ করব, আর বিনিয়োগের পাইপলাইন বিল্ডিং-এর কাজ করে রাখব।

বিডার চেয়ারম্যান আরো বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি ১০-এ ১০ পাওয়ার মতো সামিট হয়নি। যত সফলতা আছে তা সবার। ব্যর্থতা বিডা ও বেজার। প্রতিবছর এ ধরনের সামিট হতে পারে। এ ধরনের সিমিলার ইভেন্ট পরবর্তীতে বা পরবর্তী সরকার করবে বলে প্রত্যাশা করি।

তিনি আরো জানান, বিনিয়োগের পাইপলাইন ঠিক রাখতে বিনিয়োগ সম্মেলনে আসা সবাইকে থ্যাংক ইউ মেইল পাঠানো হবে। তাদের সাথে যোগাযোগ রাখা হবে।

বিডার বিজনেস ডেভেলপমেন্ট বিভাগের প্রধান নাহিয়ান রহমান রোচি বলেন, উদ্বোধনী সামিটে ৭৫০ জন অংশ নেয়। এর মধ্যে ৪১৫ জন বিদেশি ছিল। পুরো সম্মেলনে সাড়ে তিন হাজারের বেশি মানুষ অংশ নেয়। স্পিকার ও প্যানেলিস্ট ছিল ১৩০ জন।

ঢাকা/হাসান/এনএইচ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মুড়ি ভর্তা বিক্রি করে আয় অর্ধ লাখ টাকা
  • কোম্পানি-বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে সংশোধন হচ্ছে লভ্যাংশ আইন
  • সম্মেলনে ৩১০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে: বিডা চেয়ারম্যান