স্কুলপড়ুয়া ছেলেকে মোটরসাইকেলের পেছনে বসিয়ে শিক্ষকের বাসায় পড়াতে নিয়ে যাচ্ছিলেন বাবা। আজ মঙ্গলবার সকাল নয়টার দিকে রাজধানীর ডেমরার মিরপাড়া এলাকায় মোটরসাইকেলটিকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয় বেপরোয়া গতির একটি বাস।

বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেলটি একটি প্রাইভেট কারের ওপর গিয়ে পড়ে। এতে মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে রাস্তায় পড়ে বাবা-ছেলে গুরুতর আহত হন।

দুজনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে বাবা ওবায়দুল ইসলাম মুন্সিকে (৪৫) মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। আর ছেলে লাবিব ইসলাম (১৬) ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

ওবায়দুল সপরিবার রাজধানীর মাতুয়াইলের দক্ষিণপাড়ায় থাকতেন। তিনি জমি বেচাকেনায় মধ্যস্থতা করতেন। তাঁর ছেলে লাবিব মাতুয়াইল বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র।

ওবায়দুলের বড় ভাই আতিকুল ইসলাম মুন্সি ও ডেমরা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো.

মুরাদ হোসেন এসব তথ্য জানান।

আতিকুল ইসলাম ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রথম আলোকে বলেন, ওবায়দুলের শ্বশুরবাড়ি মিরপাড়ায়। সেখান থেকে তিনি ছেলে লাবিবকে মোটরসাইকেলের পেছনে বসিয়ে রওনা দেন। লাবিবকে শিক্ষকের বাসায় পড়াতে নিয়ে যাচ্ছিলেন ওবায়দুল। পথে তাঁরা দুর্ঘটনার শিকার হন।

মিরপাড়া সিএনজি পাম্পের সামনে দুর্ঘটনাটি ঘটে বলে জানান ডেমরা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মুরাদ হোসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ওয়াসিম পরিবহনের একটি বাস পেছন থেকে মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ওয়াসিম পরিবহনের বাসটি ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার থেকে রামপুরায় যাচ্ছিল। বাসটি নিয়ে চালক পালিয়ে গেছেন। চালককে আটক ও বাসটি জব্দের চেষ্টা চলছে।

আহত লাবিব ইসলাম

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

মারমাদের মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব যে কারণে হয়, যেভাবে এল

মারমা জনগোষ্ঠীর সাংগ্রাইং উৎসবের এক গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হয়ে আছে ‘মৈতা রিলং পোয়ে’ বা মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব। এই উৎসবে পরস্পরের দিকে পানি ছিটিয়ে মৈত্রীর বন্ধনে আবদ্ধ হন মারমারা। ‘সাংগ্রাইংমা ঞি ঞি ঞা ঞা রিকোজাই পামে’(এসো হে সাংগ্রাইংয়ে সবাই মৈত্রী পানিবর্ষণে) গানটিও দীর্ঘদিন ধরে হয়ে আছে এই উৎসবের ‘থিম সং’।

গবেষক ও মারমা জনগোষ্ঠীর প্রবীণ ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাংলাদেশে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবের শুরু গত শতকের সত্তরের দশকে। কিছু তরুণ মিয়ানমারে সাংগ্রাইং উৎসবে এ ধরনের আয়োজন দেখে দেশেও এর প্রচলন করেন। আর ‘সাংগ্রাইংমা ঞি ঞি ঞা ঞা রিকোজাই পামে’ উৎসবের থিম সং হয়েছে ১৯৮৪ সালে।

মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবকে অনেকেই ‘জলকেলি’ ও ‘পানি খেলা’ বলে থাকেন। তবে এসব নাম আপত্তিকর বলে মনে করেন মারমা সমাজের অনেকেই। তাঁদের দাবি, এর মধ্য দিয়ে ধর্মের যোগ থাকা অনুষ্ঠানটি ভুলভাবে উপস্থাপন হয়।

এবারের সাংগ্রাইং উপলক্ষে আজ বুধবার থেকে বান্দরবান জেলা শহরে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব শুরু হয়েছে। তবে জেলার অন্যান্য জায়গায় গতকাল মঙ্গলবার এই উৎসব শুরু হয়। খাগড়াছড়িতে কোথাও কোথাও সোমবার শুরু হয়েছে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব।

মারমা জনগোষ্ঠীর প্রবীণদের একজন শিক্ষাবিদ থোয়াইংচ প্রু। তিনি প্রথম আলকে বলেন, সাংগ্রাইং আখ্যেয়া বা মূল সাংগ্রাই দিনে বুদ্ধমূর্তি স্নানের আগে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব হয় না। এটা প্রথাসিদ্ধ রীতি। তাই মৈত্রী পানিবর্ষণের সঙ্গে ধর্মের যোগ বেশ স্পষ্ট। তিনি বলেন, পানিকে মারমারা পবিত্র মনে করে। তাই সাংগ্রাইং উৎসবে বন্ধুত্বের বন্ধন এবং পরস্পরের প্রতি মৈত্রী ভাবনা নবায়ন ও সুদৃঢ় করার জন্য একে-অপরের দিকে পানি ছোড়েন। পানি ছিটানোর পর কেউ বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখালে বোঝা যাবে, বন্ধুত্বের সম্পর্কে ও বন্ধনে টানাপোড়েন আছে। এটিই মৈত্রী পানিবর্ষণের মূল্যবোধ। এ কারণে অনেক সময় অযাচিত কাউকে পানিবর্ষণ করলে আগে সালিসের মুখোমুখিও হতে হতো।

মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবে মেতেছেন মারমা সম্প্রদায়ের তরুণ-তরুণীরা। গতকাল বান্দরবানের ডলুপাড়ায়

সম্পর্কিত নিবন্ধ