অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা প্রধান তুলসী গ্যাবার্ডের মন্তব্যে আমাদের অর্থনীতিতে বহুপাক্ষিক বা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে প্রভাব পড়বে না।

মঙ্গলবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। সেখানে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি ও অর্থনৈতিক বিষয়ক সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

গার্ডিয়ান পত্রিকার সাংবাদিক হান্না বাংলাদেশ সফর করে গিয়ে লিখেছেন বাংলাদেশ খাদের কিনারায় আছে, উনি কেন এটা বললেন বলে আপনাদের মনে হয়? এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, খাদের কিনারায় ছিল। এখন খাদের কিনারা থেকে আমরা রিটার্ন করে চলে আসছি। ওনারা কত কিছু লেখেন। অর্থনীতির বিষয় তো আমি জানি ভেতরে কী হচ্ছে। কে কি লিখেছেন এতে হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বাহিরের সবাই কি সবকিছু জেনেশুনে লেখেন। তারা মনের মাধুরী মিশিয়ে অনেক কিছু লেখেন। এছাড়া তুলসী গ্যাবার্ডের মন্তব্যে আমাদের অর্থনীতিতে বহুপক্ষীয় বা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে প্রভাব পড়বে না।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি খাদের কিনারায় ছিল। সেখান থেকে আমরা রিটার্ন করে চলে আসছি।

এলডিসি গ্রাজুয়েশন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, এলডিসি ২০২৬ সালে একটা স্মুথ ট্রানজিশন স্ট্রাটেজি নিয়েছি। স্মুথ মানে ধুম করে নামে না, প্লেন যেমন আস্তে আস্তে নামে। আমরা এটা অলরেডি করছি।

তিনি বলেন, আসলে বাংলাদেশের দিকে অন্যান্য দেশ তাকিয়ে আছে। আমরা জানি বাংলাদেশের পারফরমেন্স অভারঅল সন্তোষজনক। ভুলত্রুটি আছে তার মধ্যেও।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ড স ল হউদ দ ন আহম দ ত লস গ য ব র ড

এছাড়াও পড়ুন:

আরব লিগের গাজা পরিকল্পনা নাকচ করে দিতে ট্রাম্পের কাছে কেন তদবির করছে আরব আমিরাত

গাজা উপত্যকায় যুদ্ধপরবর্তী সময়ে বাস্তবায়নের জন্য আরব লিগের অনুমোদিত পরিকল্পনাটি প্রত্যাখ্যান করতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের কাছে তদবির করছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। যুক্তরাষ্ট্র ও মিসরের কর্মকর্তারা মিডল ইস্ট আইকে এ কথা বলেছেন।

গাজা পরিকল্পনার খসড়াটি তৈরি করেছে মিসর। আরব লিগ তা অনুমোদন করেছে। এ পরিকল্পনা অনুযায়ী, গাজা পুনর্গঠনে ৫ হাজার ৩০০ কোটি ডলারের প্রয়োজন হবে। পরিকল্পনাটি বাস্তবায়নে গাজার বাসিন্দাদের বাস্তুচ্যুত করার প্রয়োজন হবে না। এর আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গাজার বাসিন্দাদের মিসর ও জর্ডানে পাঠিয়ে গাজায় উপকূলীয় পর্যটন শহর গড়ে তোলার প্রস্তাব দেন।

আরব লিগে অনুমোদন পাওয়া প্রস্তাবটি নিয়ে বিভাজন ক্রমাগত জোরালো হয়ে উঠছে। যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিকদের আশঙ্কা, প্রস্তাবটি বাস্তবায়িত হলে ওই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হবে। গাজা উপত্যকার ভবিষ্যৎ শাসনব্যবস্থা ও পুনর্গঠন কেমন হবে, হামাসের সেখানে কতটা প্রভাব বজায় রাখা উচিত, এসব বিষয় নিয়ে আরব দেশগুলোও ওঠে–পড়ে লেগেছে।

আমিরাতের চাপের বিষয়টি কায়রোকে দোটানায় ফেলেছে। কারণ, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মিসর—এ দুই দেশই গাজার প্রতিনিধি হিসেবে ফাতাহর নির্বাসিত সাবেক কর্মকর্তা মোহাম্মদ দাহলানকে ব্যাপকভাবে সমর্থন দিয়েছে।

আরব লিগের পরিকল্পনাকে সংযুক্ত আরব আমিরাত অকার্যকর বলে সমালোচনা করছে। তাদের অভিযোগ, কায়রো হামাসকে অত্যধিক প্রভাব বিস্তারের সুযোগ করে দিচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত আরব আমিরাতের দূত ইউসেফ আল ওতাইবা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠজনদের কাছে তদবির করছেন। যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতারা বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের জায়গা দিতে মিসরকে চাপ দিচ্ছে। এ ঘটনা সম্পর্কে জানেন, এমন এক মার্কিন কর্মকর্তা এবং এক মিসরীয় কর্মকর্তা মিডল ইস্ট আইকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

ওতাইবা এর আগে বলেছিলেন, ফিলিস্তিনিদের জোর করে গাজা উপত্যকার বাইরে পাঠিয়ে দিতে ট্রাম্প যে প্রস্তাব দিয়েছেন, তার কোনো বিকল্প তিনি দেখছেন না।

মিসরভিত্তিক সংগঠন মুসলিম ব্রাদারহুডের একটি শাখা হামাস। মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে এ মুসলিম ব্রাদারহুডকে দমাতে চাইছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। মিসরের সেনাবাহিনীর নেতৃত্বাধীন সরকারও মুসলিম ব্রাদারহুডকে দমিয়ে রেখেছে। তবে হামাসের কর্মকর্তারা সেখানে কিছুটা স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারেন। মিসরীয় গুপ্তচরদের সঙ্গে কাসেম ব্রিগেডসহ হামাস সদস্যদের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক রয়েছে। আর সে সম্পর্কের বদৌলতে গাজায় যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতা করছে মিসর।

আরও পড়ুনগাজা নিয়ে বিকল্প প্রস্তাব গ্রহণ করল আরব দেশগুলো০৪ মার্চ ২০২৫

মিসরের গাজা পরিকল্পনার সমালোচনা করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। তারা বলছে, হামাসকে কীভাবে নিরস্ত্র করতে হবে এবং তাদের গাজা উপত্যকা থেকে উৎখাত করতে হবে, তা প্রস্তাবে উল্লেখ করা নেই।

মিসরে কর্মকর্তারা বলছেন, তাঁদের পরিকল্পনাটি পরিষ্কার। আর তা হলো, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষই শাসনকার্য চালাবে। পরিকল্পনাটিতে গাজায় একটি নিরাপত্তা বাহিনী গঠনের কথা বলা হয়েছে। এ বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেবে জর্ডান ও মিসর। এতে গাজা এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের মোতায়েনের সম্ভাবনার দুয়ার খুলে যাবে।

হামাস বলেছে, তারা এই পরিকল্পনা মেনে নিয়েছে। আঞ্চলিক কূটনীতিকেরা বলছেন, ইসরায়েল এভাবে সংঘাতকে আন্তর্জাতিকীকরণের বিরুদ্ধে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ