খাবারদাবারের বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মানুষ বেশ শৌখিন। এর প্রভাব পড়েছে ইফতারেও। এখানকার মানুষের ইফতারে প্রচলিত পুরোনো পদ ছোলা, পেঁয়াজু, বেগুনি, আলুর চপ, মুড়ি ও খেজুরের সঙ্গে যোগ হয়েছে গরুর মাংসের হালিম, কাবাব, চিকেন ফ্রাই, বুন্দিয়া, শাশলিকসহ নানা মুখরোচক পদ।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া মূলত এক রাস্তার শহর। কাউতলী থেকে ঘাটুরা পর্যন্ত সড়কটি জেলার একমাত্র প্রধান সড়ক। সড়কের দুই পাশে সব হোটেল ও রেস্তোরাঁ অবস্থিত। পবিত্র রমজান মাসজুড়ে প্রতিদিনই শহরের এই প্রধান সড়কসংলগ্ন রেস্তোরাঁর সামনে দোকানিরা বিভিন্ন মুখরোচক খাবারের পসরা সাজিয়ে বসেন।

এক বিকেলে দেখা গেল, জেলা শহরের টি এ রোডের শাহি বেকারি অ্যান্ড কনফেকশনারিতে অর্ধশত পদের ইফতারির পসরা সাজানো হয়েছে। এখানে শুধু পবিত্র রমজান মাসে গরুর মাংসের হালিম, চিকেন ফ্রাই, শাশলিক, কাবাব, বুন্দিয়া, বোরহানি ও রেশমি জিলাপির চাহিদা বেশি। প্রতি কেজি গরুর মাংসের হালিম বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকায় ও বোরহানি প্রতি লিটার ২৪০ টাকায়। চিকেন ফ্রাই ছোটটি ৬৫ টাকা ও বড়টি ৯০ টাকা, রেশমি জিলাপি ২০০ টাকা কেজি, বুন্দিয়া ২০০ টাকা কেজি, কাবাব প্রতিটি ২০ টাকা এবং শাশলিক ১০০ টাকা করে পাওয়া যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির দাবি, এটি জেলার ৫০ বছর পুরোনো প্রতিষ্ঠান। ৫০ বছর ধরে তারা ইফতারি বিক্রি করে আসছে।

আধুনিকতার সঙ্গে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মানুষের খাবার রুচিও পরিবর্তন হয়েছে। বিভিন্ন মুখরোচক খাবার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে কিনতে ক্রেতারা ভিড় জমান।মো.

আল আমিন, সহকারী অধ্যাপক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ

পরিবারের সদস্যদের জন্য ইফতারি কিনতে এখানে এসেছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া ইউনাইটেড কলেজের পরিচালক শাহীন মৃধা ও হারুন অর রশিদ। তাঁরা বলেন, এখানকার গরুর মাংসের হালিম ও চিকেন ফ্রাইয়ের স্বাদ অসাধারণ। শহরের পুরোনো প্রতিষ্ঠান হওয়ায় জেলাবাসীর কাছে এটি আস্থাভাজন প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।

শাহি বেকারি অ্যান্ড কনফেকশনারির স্বত্বাধিকারী মো. মোসলে উদ্দিন বলেন, প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০ কেজি হালিম ও ৪০০টি সবজি পরোটা বিক্রি হয়। ১৯৭৫ সাল থেকে ইফতারি বিক্রি শুরু হয়েছে এখানে। শহরের মানুষের জন্য সমুচা, নারকেল সমুচা, চিকেন সমুচা, ফিশ কাবাব, শামি কাবাব, কলা কাবাব, সফট রোল, শাহি জিলাপি, আমিত্তি, রেশমি জিলাপি, বুন্দিয়া, ডিম চপ, চিকেন, বোরহানি, হালিম ও চিকেন ফ্রাই থেকে শুরু করে নানা মুখরোচক পদ আছে এখানে।

শাহি বেকারি অ্যান্ড কনফেকশনারিতে প্রতিদিন ৪০০টি সবজি পরোটা বিক্রি হয়

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব র হ মণব ড় য় শহর র ইফত র

এছাড়াও পড়ুন:

বালু তোলা নিয়ে সংঘর্ষে যুবক নিহত, গুলিবিদ্ধসহ আহত ২

ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার দক্ষিণাঞ্চল পাগলা থানার নিগুয়ারী ইউনিয়নের তললী গ্রামে নদীর বালু উত্তোলন নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে মেহেদি হাসান রাকিব নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন তার চাচা জিয়া ও একই গ্রামের মো. সাবিদ।

গতকাল সোমবার রাতে নিগুয়ারী ইউনিয়নের পল্টন মোড়ে এই ঘটনা ঘটে। নিহত যুবক রাকিব তললী নামাপাড়া গ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, স্থানীয় ইয়াসিন খানের সঙ্গে নিহত মেহেদি হাসান রাকিবের নদীর বালু উত্তোলন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। গত সোমবার সন্ধ্যায় উভয় পক্ষের লোকজন পাতলাসী বাজারে একসঙ্গে ইফতার করে নিগুয়ারী পল্টন মোড়ে আসার সময় রাকিবের সঙ্গে ইয়াসিনের কথা-কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এর জেরে রাত ১০টার দিকে ইয়াসিন ও তার লোকজন পল্টন মোড়ে রাকিবের ওপর হামলা করে। এ সময় সংঘর্ষ শুরু হলে ইয়াসিন ও তার লোকজন রাকিবকে ধরে নিগুয়ারী পল্টন মোড়ে ইয়াসিনের অফিসে নিয়ে মারধর করে। পরে রাকিবকে অফিসের পেছনে নিয়ে পিটিয়ে, কুপিয়ে এবং ইট দিয়ে মাথা থেঁতলিয়ে দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান রাকিব। এ ঘটনায় সাবিদ (২৪) নামে একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। রাকিবের চাচা জিয়াকে পিস্তল দিয়ে মাথায় আঘাত করলে সেও আহত হন। তাকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়। গুলিবিদ্ধ সাবিদকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে।

নিহত রাকিবের বাবা মজিবুর রহমান বলেন, ইয়াসিন ক্ষমতা পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এই এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। 

নাম না বলার শর্তে তিনি জানান, স্থানীয় নেতার ছত্রছায়ায় ইয়াসিন খান এই ইউনিয়নের মাছের খামার, ইটভাটা, বালুর ব্যবসা সব কিছু দখলে নিয়ে চাঁদাবাজি চালিয়ে যাচ্ছে। রাকিব এসব অপকর্মে বাধা দিতো বলেই পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে।

নিহত রাকিবের চাচাতো ভাই মোমেন বলেন, ‘বালু উত্তোলনের উদ্বোধনের কথা বলে আমার ভাই রাকিবকে নিয়ে তারা পাতলাশী বাজারে ইফতার করে। পরে রাস্তায় আসার সময় রাকিবের সঙ্গে তর্কাতর্কি ও মারামারি করে। এরপর পল্টন মোড়ে পিটিয়ে, ইট দিয়ে তার মাথা থেঁতলিয়ে মেরে ফেলে। এমনভাবে রাকিবকে মারা হয়েছে, তাকে আর চিনার কোনো উপায় নাই।’

পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ফেরদৌস আলম জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনি পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ