যুক্তরাষ্ট্রের রোড আইল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের এক চিকিৎসকের মুঠোফোনে হিজবুল্লাহর সাবেক নেতার প্রতি ‘সহানুভূতিশীল ছবি ও ভিডিও’ পাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র থেকে তাঁকে লেবাননে ফেরত পাঠানো হয়েছে। গত সপ্তাহে এ ঘটনা ঘটেছে বলে গতকাল সোমবার মার্কিন কর্তৃপক্ষ জানায়।

ওই চিকিৎসকের মুঠোফোনের ডিলিটেড আইটেম ফোল্ডারে এসব ছবি ও ভিডিও পাওয়া গেছে।

রাশা আলাউইহ বলেছেন, লেবাননে থাকাকালে গত মাসে নিহত হিজবুল্লাহপ্রধান হাসান নাসরুল্লাহর জানাজায় অংশ নিয়েছিলেন তিনি। একজন মুসলিম হিসেবে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে তিনি হাসান নাসরুল্লাহকে সমর্থন করতেন।

বোস্টনের এক ফেডারেল বিচারক ওই চিকিৎসককে তাৎক্ষণিকভাবে লেবাননে ফেরত পাঠানো ঠেকাতে গত শুক্রবার একটি আদেশ জারি করেছিলেন। মার্কিন বিচার বিভাগ ওই বিচারককে উল্লিখিত বিবরণ পাঠিয়ে তাঁকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেছে যে মার্কিন শুল্ক ও সীমান্ত সুরক্ষা সংস্থা (সিবিপি) তাঁর আদেশ ইচ্ছাকৃতভাবে অমান্য করেনি।

রাশা আলাউইহ নামের ৩৪ বছর বয়সী ওই চিকিৎসক লেবাননের নাগরিক। তাঁর এইচ-১বি ভিসা ছিল। পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে লেবাননে গিয়েছিলেন তিনি। সেখান থেকে ফেরার পর গত বৃহস্পতিবার বোস্টনের লোগান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটক করা হয় তাঁকে। এ ঘটনায় তাঁর চাচাতো ভাই তাঁকে ফেরত পাঠানো স্থগিত করতে একটি মামলা করেন।

ওই চিকিৎসককে এমন সময় যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে, যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন সীমান্ত পেরিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে এবং অবৈধ অভিবাসীদের গ্রেপ্তার বাড়ানোর চেষ্টা করছে।

রাশা আলাউইহর বিষয়ে বিচার বিভাগ জানিয়েছে, কিডনি প্রতিস্থাপন বিশেষজ্ঞ ও ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সহকারী অধ্যাপকের ফোনে সিবিপি যা পেয়েছে এবং বিমানবন্দরে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন, তার ভিত্তিতে তাঁকে যুক্তরাষ্ট্রে পুনঃপ্রবেশ করতে দেওয়ায় অস্বীকৃতি জানানো হয়েছে।

আরও পড়ুনঅভিবাসীবিষয়ক ‘দ্রুত অপসারণ’ নীতির আওতা বাড়ানোর ট্রাম্পের পদক্ষেপ আটকাতে মামলা২৩ জানুয়ারি ২০২৫

রয়টার্সের পর্যালোচনা করা সেই সাক্ষাৎকারের একটি প্রতিলিপি অনুসারে, রাশা সিবিপিকে বলেছিলেন, তিনি হিজবুল্লাহকে সমর্থন করেন না। তবে ধর্মীয় কারণে নাসরুল্লাহকে তিনি অনেক বেশি শ্রদ্ধা করেন। তিনি বলেন, ‘আমি রাজনৈতিক ব্যক্তি নই। আমি একজন চিকিৎসক। এটি মূলত বিশ্বাসের বিষয়।’

যুক্তরাষ্ট্র ও দেশটির পশ্চিমা মিত্ররা লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বলে মনে করে থাকে। এ গোষ্ঠীকে অনানুষ্ঠানিকভাবে ইরানের সমর্থনপুষ্ট প্রতিরোধ বাহিনী বা এক্সিস অব রেজিস্ট্যান্সের অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

এদিকে রাশাকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে অপসারণের কয়েক ঘণ্টা পর তাঁর কিছু সহকর্মীসহ কয়েক শ বিক্ষোভকারী রোড আইল্যান্ড স্টেট হাউসের লনে জড়ো হয়ে তাঁর প্রতি সমর্থন জানান। তাঁদের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘তাঁর ভিসা বৈধ। তিনি কিছুই ভুল করেননি। এখনই গণ-অপসারণ বন্ধ করুন।’

আরও পড়ুনট্রাম্পের অভিবাসন নীতি নিয়ে বাংলাদেশিদের উদ্বেগের কারণ নেই ২১ জানুয়ারি ২০২৫আরও পড়ুনপ্রথম দিনেই অভিবাসী তাড়ানোর হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের২০ জানুয়ারি ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ল ল হক ল ব নন

এছাড়াও পড়ুন:

১৯০ বিঘা খাস জমি দখলে নিতে সংঘর্ষ, নিহত ১

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলায় খাস খতিয়ানের ১৯০ বিঘা জমির দখল ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন। এ সময় শতাধিক বাড়িঘর ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।

নিহত মো. মদিন মোল্লা (৫৫) উপজেলার রূপবাটি ইউনিয়নের বড় ধুনাইল গ্রামের মৃত ছকির মোল্লার ছেলে। তাঁর লাশ উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জে মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

সরেজমিন জানা গেছে, বড় ধুনাইল গ্রামের ১৯০ বিঘা খাস খতিয়ানের জমি নিয়ে এবং আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় হালিম ও জাফরের পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছে। এরই জেরে গত শনিবার দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। শাহজাদপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার অনুরোধ জানান।

রোববার সকালে উভয় পক্ষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ফের সংঘর্ষে জড়ায়। এতে মদিন মোল্লা নিহত হন। আহত হয়েছেন আব্দুর রাজ্জাক (৪৫), ইনজামুল হক (২৬), আলতাব (৫৭), বাবলু মোল্লাসহ (৪৫) অন্তত ১০ জন। তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

জাফরের পক্ষের মদিন মোল্লার মৃত্যুর খবরে হালিম পক্ষের লোকজন গ্রাম ছেড়ে চলে যান। এ সুযোগে জাফর পক্ষের লোকজন বিভিন্ন বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার বিষয়ে জানার চেষ্টা করেও দু’পক্ষের কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। গ্রামের অধিকাংশ বাড়ি পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে।

খতিয়ানের জমি দখল ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে হালিম ও জাফর পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন শাহজাদপুর থানার ওসি মো. আছলাম আলী। 

তিনি বলেন, শনিবারের সংঘর্ষ পুলিশ নিয়ন্ত্রণে আনলেও রোববারের সংঘর্ষে মদিন মোল্লা নামে একজন নিহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঐতিহ্যের উজ্জ্বল কান্ডারি
  • নতুন আইটেম গানে প্রশংসিত তামান্না কত টাকা নিলেন?
  • দু’পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত বিএনপির ২ নেতার পদ স্থগিত
  • চাঁদাবাজির প্রতিবাদকারীর নামে মামলা দিলেন জবি ছাত্রদল নেতা
  • চাল না পেয়ে জেলেদের ইউপি পরিষদ ঘেরাও
  • ১৯০ বিঘা খাস জমি দখলে নিতে সংঘর্ষ, নিহত ১
  • তারাগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স: মারধরের প্রতিবাদে দ্বিতীয় দিনে চলছে চিকিৎসকদের কর্মবিরতি
  • ভোলা জেনারেল হাসপাতাল: হামলা ও হুমকির প্রতিবাদে চিকিৎসক ও নার্সদের কর্মবিরতি
  • কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ওষুধ চুরির অভিযোগে দুজন আটক
  • তারাগঞ্জে চিকিৎসককে মারধরের অভিযোগ, কর্মবিরতি, রোগীদের দুর্ভোগ