আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘স্বামীর আসনে’ প্রতিদ্বন্দ্বিতার ইঙ্গিত দিলেন নিখোঁজ বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনা। বিএনপির চেয়ারপারসনের এই উপদেষ্টা বলেছেন, ‘আমরা যদি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হতে পারি, তাহলে এম ইলিয়াস আলীর স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করব। আমি আপনাদের সুখে-দুঃখে সব সময় পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।’

গতকাল সোমবার বিকেলে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়ন বিএনপি এবং অঙ্গ–সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত ইফতার ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তাহসিনা রুশদীর এ কথা বলেন। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক সুস্থতা, এম ইলিয়াস আলী, তাঁর গাড়িচালক আনসার আলীসহ পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান কামনা করে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

সিলেট-২ আসনে টানা তিনবার নির্বাচন করে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস আলী বিজয়ী হন দুবার। বিএনপির প্রভাবশালী নেতা হওয়ার কারণেই আসনটি স্থানীয়ভাবে ‘ইলিয়াস আলীর আসন’ নামেই পরিচিতি পায়। ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল ঢাকার বনানী থেকে গাড়িচালক আনসার আলীসহ নিখোঁজ হন ইলিয়াস। বিএনপির অভিযোগ, তাঁকে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার গুম করেছে।

ইলিয়াস আলী নিখোঁজের পর বিএনপি একবারই অর্থাৎ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়। ওই নির্বাচনে সিলেট-২ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পান ইলিয়াস-পত্নী তাহসিনা রুশদীর লুনা। তবে সে সময় তাহসিনার প্রার্থিতা আদালতে স্থগিত হওয়ায় তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন গণফোরাম নেতা মোকাব্বির খান।

এদিকে গতকাল ইফতার মাহফিল-পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তাহসিনা রুশদীর বলেন, ‘যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের দমন-পীড়নের শিকার হয়েছেন, তাঁদের আমাদের দল সর্বদা অগ্রাধিকার দেবে—এমনটাই বিশ্বাস করি। সাধারণ মানুষ বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বললেও স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার তাঁদের ওপর অত্যাচার-নিপীড়ন চালাত।’ তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি দ্রুত অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানান।

সিলেট-২ (বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগর) আসনের বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরে উন্নয়নবঞ্চিত বলে মন্তব্য করেন তাহসিনা রুশদীর। তিনি বলেন, ‘১৬ বছর ধরে আওয়ামী সরকার বাকশাল কায়েম করে দেশের জনগণের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে। এমনকি এম ইলিয়াস আলীর মতো নেতাকেও গুম করেছে। এ ইউনিয়নের কৃতী সন্তান এম ইলিয়াস আলী গাড়িচালক আনসার আলীসহ অসংখ্য বিএনপি নেতা-কর্মীও স্বৈরাচারী সরকারের হাতে গুম হয়েছেন।’

ইফতার মাহফিল-পূর্ব সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন খাজাঞ্চী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবুল বশর মো.

ফারুক। ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শহীদ আহমদ, উপজেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক আমিরু উদ্দিন ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব আশিকুর রহমানের রানার সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গৌছ আলী, সাধারণ সম্পাদক লিলু মিয়া, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঈনুল হক, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মোনায়েম খান, যুক্তরাজ্য ওল্ডহাম বিএনপির সভাপতি জামাল উদ্দিন প্রমুখ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ল গ সরক র ব এনপ র স সরক র র আওয় ম উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

গাজার হাসপাতালে মিসাইল হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল

ফিলিস্তিনের গাজা সিটির প্রধান আল-আহলি ব্যাপটিস্ট হাসপাতালে মিসাইল হামলা চালিয়েছে দখলদার ইসরায়েল। অনলাইনে প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা গেছে, হাসপাতালের দোতলা ভবনে মিসাইল ছোড়ার পর সেখান থেকে আগুনের বিশাল কুণ্ডলি ছড়িয়ে পড়ছে।

এতে হাসপাতালটির আইসিইউ এবং অস্ত্রোপচার বিভাগ ধ্বংস হয়ে গেছে। ওই সময় হাসপাতালের বিছানায় থাকা বেশ কয়েকজন রোগী দ্রুত সরে যাওয়ার চেষ্টা করতে থাকেন। সূত্র: বিবিসি

হামাস এই হামলাকে ‘ভয়াবহ অপরাধ’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

স্থানীয় এক সাংবাদিক জানিয়েছেন, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক চিকিৎসকে ফোন করে জানায়, তারা হাসপাতালে হামলা চালাবে। তাই দ্রুত হাসপাতালের সবাইকে সরিয়ে নিতে হবে।

স্থানীয় ওই সাংবাদিক আরও জানিয়েছেন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকের কাছে ফোন করেন, হুমকি দিয়ে বলেন, সব রোগী এবং বাস্তুচ্যুত মানুষকে অবশ্যই নিরাপদ স্থানে সরে যেতে হবে। আপনাদের হাতে আছে মাত্র ২০ মিনিট।

সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে, রাতের বেলা রোগীরাও হাসপাতাল থেকে বের হয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া হাসপাতালের সামনে যেসব নারী ও শিশু আশ্রয় নিয়েছিলেন তারাও সরে যান।

দখলদার ইসরায়েল গাজা সিটির সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল-শিফাকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে। এরপর আল-আহলি হাসপাতালটি সেখানকার প্রধান হাসপাতালে পরিণত হয়। রোববার রাতে এই হাসপাতালটিতেও হামলা চালিয়েছে তারা। এর আগে ২০২৩ সালের অক্টোবরে একই হাসপাতালে হামলা চালিয়ে কয়েকশ মানুষকে হত্যা করেছিল দখলদার ইসরায়েল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ