গাজাজুড়ে ফের ভয়াবহ হামলা ইসরায়েলের, নিহত ২৩২
Published: 18th, March 2025 GMT
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ফের ভয়াবহ হামলা শুরু করেছে দখলদার ইসরায়েলী বাহিনী। আজ মঙ্গলবার ভোরে গাজা উপত্যকার বিভিন্ন জায়গায় ইসরায়েলি বিমান ও ট্যাংক হামলায় অন্তত ২৩২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র খলিল আল দেকরান নিহতের এ সংখ্যা জানিয়েছেন। খবর আল জাজিরার।
সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) গাজার কেন্দ্রীয় শহর দেইর আল-বালাহ, গাজা সিটি, খান ইউনিস ও রাফাহ অঞ্চলের একাধিক স্থাপনায় ব্যাপক আকারে বিমান ও ট্যাংক হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে আবাসিক ভবনসহ বেশ কিছু অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্তের পাশাপাশি হতাহত হয়েছেন অসংখ্য মানুষ, যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু।
গত ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর থেকে এটি গাজায় সবচেয়ে বড় হামলা। গাজা যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর আলোচনা কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছে।
আরো পড়ুন:
গাজার বাসিন্দাদের বাস্তুচ্যুত করার পরিকল্পনা থেকে সরে আসার ইঙ্গিত ট্রাম্পের
গাজায় এবার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করলো ইসরায়েল
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, তারা বেশ কয়েকটি জায়গাকে লক্ষ্যবস্তু করেছে। যতক্ষণ প্রয়োজন ততক্ষণ পর্যন্ত এ হামলা অব্যাহত থাকবে এবং তা শুধু বিমান হামলার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক বিবৃতি অনুসারে, মঙ্গলবার সকালে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ এই হামলার নির্দেশ দিয়েছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হামাস আমাদের জিম্মিদের মুক্তি দিতে বারবার অস্বীকৃতি জানানোর পাশাপাশি মার্কিন প্রেসিডেন্টের দূত স্টিভ উইটকফ এবং মধ্যস্থতাকারীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত সমস্ত প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার পর এটি করা হয়েছে।
ইসরায়েল এখন থেকে ক্রমবর্ধমান সামরিক শক্তির সঙ্গে হামাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে, এতে আরোবলা হয়েছে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, হামলার পরিকল্পনা আইডিএফ সপ্তাহান্তে উপস্থাপন করেছে এবং রাজনৈতিক নেতৃত্ব কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে।
হোয়াইট হাউজের একজন মুখপাত্র ফক্স নিউজকে জানিয়েছেন, হামলা চালানোর আগে ইসরায়েল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের সঙ্গে পরামর্শ করেছিল।
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস বলেছে, ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভন্ডুল করেছে। আর এর মধ্য দিয়ে গাজায় এখনো আটক থাকা ৫৯ জন জিম্মির ভাগ্য অনিশ্চিত করে তুলেছে তারা।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল ইসর য় ল ইসর য
এছাড়াও পড়ুন:
মারমাদের মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব যে কারণে হয়, যেভাবে এল
মারমা জনগোষ্ঠীর সাংগ্রাইং উৎসবের এক গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হয়ে আছে ‘মৈতা রিলং পোয়ে’ বা মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব। এই উৎসবে পরস্পরের দিকে পানি ছিটিয়ে মৈত্রীর বন্ধনে আবদ্ধ হন মারমারা। ‘সাংগ্রাইংমা ঞি ঞি ঞা ঞা রিকোজাই পামে’(এসো হে সাংগ্রাইংয়ে সবাই মৈত্রী পানিবর্ষণে) গানটিও দীর্ঘদিন ধরে হয়ে আছে এই উৎসবের ‘থিম সং’।
গবেষক ও মারমা জনগোষ্ঠীর প্রবীণ ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাংলাদেশে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবের শুরু গত শতকের সত্তরের দশকে। কিছু তরুণ মিয়ানমারে সাংগ্রাইং উৎসবে এ ধরনের আয়োজন দেখে দেশেও এর প্রচলন করেন। আর ‘সাংগ্রাইংমা ঞি ঞি ঞা ঞা রিকোজাই পামে’ উৎসবের থিম সং হয়েছে ১৯৮৪ সালে।
মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবকে অনেকেই ‘জলকেলি’ ও ‘পানি খেলা’ বলে থাকেন। তবে এসব নাম আপত্তিকর বলে মনে করেন মারমা সমাজের অনেকেই। তাঁদের দাবি, এর মধ্য দিয়ে ধর্মের যোগ থাকা অনুষ্ঠানটি ভুলভাবে উপস্থাপন হয়।
এবারের সাংগ্রাইং উপলক্ষে আজ বুধবার থেকে বান্দরবান জেলা শহরে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব শুরু হয়েছে। তবে জেলার অন্যান্য জায়গায় গতকাল মঙ্গলবার এই উৎসব শুরু হয়। খাগড়াছড়িতে কোথাও কোথাও সোমবার শুরু হয়েছে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব।
মারমা জনগোষ্ঠীর প্রবীণদের একজন শিক্ষাবিদ থোয়াইংচ প্রু। তিনি প্রথম আলকে বলেন, সাংগ্রাইং আখ্যেয়া বা মূল সাংগ্রাই দিনে বুদ্ধমূর্তি স্নানের আগে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব হয় না। এটা প্রথাসিদ্ধ রীতি। তাই মৈত্রী পানিবর্ষণের সঙ্গে ধর্মের যোগ বেশ স্পষ্ট। তিনি বলেন, পানিকে মারমারা পবিত্র মনে করে। তাই সাংগ্রাইং উৎসবে বন্ধুত্বের বন্ধন এবং পরস্পরের প্রতি মৈত্রী ভাবনা নবায়ন ও সুদৃঢ় করার জন্য একে-অপরের দিকে পানি ছোড়েন। পানি ছিটানোর পর কেউ বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখালে বোঝা যাবে, বন্ধুত্বের সম্পর্কে ও বন্ধনে টানাপোড়েন আছে। এটিই মৈত্রী পানিবর্ষণের মূল্যবোধ। এ কারণে অনেক সময় অযাচিত কাউকে পানিবর্ষণ করলে আগে সালিসের মুখোমুখিও হতে হতো।
মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবে মেতেছেন মারমা সম্প্রদায়ের তরুণ-তরুণীরা। গতকাল বান্দরবানের ডলুপাড়ায়