ইরাকে প্রবাসীরা যে কারণে মাতৃভূমিতে রমজান কাটাতে পছন্দ করেন
Published: 18th, March 2025 GMT
পঞ্চাশোর্ধ্ব নাফি আল-ফারতুসি স্বদেশে রমজান কাটান মায়ের আদেশ পালনের জন্য। তিনি বলেন, ‘মা মনে করেন, রমজানে পরিবারের সবাই একত্র হওয়া জরুরি, তাতে যদি আমি আমেরিকাতেও থাকি। পশ্চিমাদের থ্যাঙ্কসগিভিং দিবসের মতোই আমাদের কাছে রমজান। তাই আমি ও আমার রোমানিয়ায় অধ্যয়নরত বোন রমজানে ইরাকে ফিরে আসি।’
বাড়ি ফিরে নাফি পুরনো বাড়িতে ভাই-বোন এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে মিলিত হন। একসঙ্গে ইফতার আয়োজন করেন। দেখেন যে, তার মা গ্রীষ্ম থেকে বামিয়া (ঢেঁড়স ) সংরক্ষণ করে রেখেছেন, যাতে রোজায় খেতে পারেন। নাফি মাছ পছন্দ করেন বলে তার মা বন্দর শহর ফাও থেকে জুবাইদি (এক ধরনের জনপ্রিয় মাছ) নিয়ে এসেছেন।
রমজান ইরাকে পুনর্মিলনের মাস। বাড়ির সবাই মিলে গল্প করেন, পুরোনো স্মৃতি রোমন্থন করেন এবং প্রবাস জীবনের কষ্ট শেয়ার করেন। দ্রুতই রমজানের ত্রিশ দিন শেষ হয়ে যায়, প্রবাসীরা যার যার কাজে জীবনের স্বাভাবিক রুটিনে ফিরে যান, এই প্রত্যাশা নিয়ে যে, আবার আগামী বছর প্রিয়জনের কাছে ফিরে আসবেন, মাতৃভূমির বুকে সুন্দর রাতগুলো একসঙ্গে কাটাবেন।
আরও পড়ুনরমজানে সোমালিয়ার সংস্কৃতি ও সংহতি০৩ মার্চ ২০২৫ঐতিহ্যবাহী ইরাকি পোশাক এবং রমজানের লণ্ঠন (আল জাজিরা).উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: রমজ ন
এছাড়াও পড়ুন:
কিশোরগঞ্জে নলি বিলে মাছ ধরার উৎসব
বর্ষার সময় বিভিন্ন পদ্ধতিতে মাছ ধরা হলেও অল্প পানিতে দলবদ্ধ হয়ে মাছ শিকার কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জের নলি বিল এলাকায় এক ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। গত শুক্রবার এই বিলে উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয় মাছ ধরার এক ব্যতিক্রমী আয়োজন।
সকালের আলো ফুটতেই স্থানীয় শত শত মানুষ ঠেলা জাল, টেঁটা, ঝাঁকি জালসহ নানা উপকরণ নিয়ে নেমে পড়েন বিলে। কেউ আবার কাদাপানিতে হাত ডুবিয়ে ধরেন দেশি প্রজাতির মাছ। আশপাশের গ্রাম ছাড়াও দূরদূরান্ত থেকে অনেকে এসে যোগ দেন এ আয়োজনে। দেশি প্রজাতির মাছের চাহিদা বেশি থাকায় নলি বিলে মাছ শিকারে অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যাও ছিল চোখে পড়ার মতো।
সরেজমিনে দেখা যায়, উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে হাঁটুসমান পানিতে নানা বয়সী মানুষ দেশি প্রজাতির মাছ ধরছেন। নানা রকমের জাল ছাড়াও অনেকে কাদাপানিতে হাতড়ে ধরেন দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন মাছ। প্রচণ্ড রোদ উপেক্ষা করেও সবার মধ্যে ছিল উৎসবের আমেজ। এ সময় শিকারিদের অনেকেই বলেন, গ্যাস ট্যাবলেট দিয়ে উৎসবের আগেই মাছ ধরে নিয়েছেন বিলের ইজারাদাররা। সে জন্য ছোট মাছ মিললেও বড় মাছ তেমন পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা মাসুদ মিয়া বলেন, ‘নলি বিলে মাছ ধরার দিনটি এখন আমাদের এলাকার মানুষের কাছে এক উৎসবে পরিণত হয়েছে।’ মাছ ধরতে আসা ফজলু মিয়া জানান, লোকমুখে খবর পেয়ে সকালে ঝাঁকি জাল নিয়ে চলে আসেন বিলে। দুপুর পর্যন্ত মাছ ধরলেও বড় মাছ তেমন পাননি। তবে এতে তাঁর কোনো আফসোস নেই, বরং এমন ঐতিহ্যে অংশ নিতে পেরে আনন্দিত।
নেত্রকোনা থেকে ধান কাটতে আসা আবুল কাশেমও শখের বসে মাছ ধরায় অংশ নেন। তিনি বলেন, এত মানুষের একসঙ্গে মাছ শিকার দেখে শখের বসে তিনিও ধান কাটা রেখে মাছ শিকারে নেমে পড়েন। কয়েকটি তাজা বাইন মাছ ধরেছেন। পার্শ্ববর্তী খয়রত গ্রামের আবদুল হাই নামের আরেকজন বলেন, একসঙ্গে মাছ শিকারে একটি উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে। কয়েক গ্রামের শৌখিন মাছশিকারিরা একসঙ্গে মাছ শিকার করেন।