হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলায় দ্রুতগতির ট্রাকচাপায় মুজিবুর রহমান (২৩) নামে এক যুবক পা হারিয়েছে।  যুবকটি তারকা ফুটবলার দেওয়ান হামজা চৌধুরীকে স্বাগত জানানোর শোডাউনে গিয়ে এই দুর্ঘটনায় পড়েন বলে জানিয়েছে পুলিশ। ট্রাকের চাপায় তরুণের পা দিখণ্ডিত হয়ে গেছে। একই দুর্ঘটনায় তারেক মিয়া (২২) নামেও আরেকজন আহত হন।

এই দুই যুবক মোটরসাইকেলে  হামজা চৌধুরীকে স্বাগত জানানোর শোডাউনে গিয়েছিলেন।

সোমবার (১৭ মার্চ) বিকেল ৩টার দিকে বাহুবল উপজেলার দিগাম্বর বাজারের নিকটে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। 

আহত মুজিবুর বাহুবলের ইজ্জতপুর গ্রামে ইদ্রিস আলীর ছেলে। তার সাথে যাওয়া স্নানঘাট এলাকার আজমান আলীর ছেলে তারেক মিয়াও (২২) একই দুর্ঘটনায় আহত হন।

স্থানীয়রা জানান, সোমবার ফুটবলার দেওয়ান হামজা চৌধুরী সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সড়কপথে বাহুবলে আসেন। মোটরসাইকেলে ওই দুই যুবক তাকে স্বাগত জানানোর শোডাউনে গিয়েছিলেন। দিগাম্বর বাজারের পাশে কালিবাড়ি নামক স্থানে যাওয়ার পর দ্রুতগতির একটি ট্রাকের ধাক্কায় তারা আহত হন। এর মধ্যে মুজিবুরের ডান পা দিখণ্ডিত হয়ে গেছে। পরে স্থানীয়রা আহত দুজনকে উদ্ধার করে বাহুবল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মুজিবুরকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। তারেককে বাহুবলেই চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

বাহুবল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জাহিদুর রহমান জানান, দুর্ঘটনার পর ট্রাক নিয়ে চালক পালিয়ে গেছেন। তবে পুলিশ ওই দুই যুবকের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করেছে।

ঢাকা/মামুন/টিপু

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ব গত জ ন দ র ঘটন য় ব হ বল

এছাড়াও পড়ুন:

অপহরণের ৫২ ঘণ্টা পরও উদ্ধার হয়নি নববিবাহিত যুবক

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে নয়ন চন্দ্র দাস (২৬) নামে এক নববিবাহিত যুবককে অপহরণের ৫২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত তাকে উদ্ধার করা যায়নি। অপহরণকারীরা তার মুক্তির জন্য ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে এবং বিষয়টি পুলিশ বা অন্য কারও কাছে জানালে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দিয়েছে। বাজার থেকে প্রকাশ্যে একজন ব্যবসায়ীকে অপহরণের ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।

রোববার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার ফান্দাউক ইউনিয়নে নয়নকে অপহরণ করা হয়। আজ মঙ্গলবার অপহরণের ৫২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও তাকে উদ্ধার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

অপহরণকারীদের দাবি, সোমবার সকাল ১০টার মধ্যে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিলে নয়নকে নিরাপদে ফেরত দেওয়া হবে। তবে তাদের দেওয়া নির্দিষ্ট সময় পার হয়ে গেলেও অপহরণকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। সন্তানকে ফিরে পেতে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে অর্থ জোগাড় করলেও অপহরণকারীদের মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। এরই মধ্যে পেরিয়ে গেছে ৫২ ঘণ্টা। নয়ন দাসের পরিবারের এখন সময় কাটছে অজানা শঙ্কা আর উদ্বেগের মধ্যে। শুধু নয়নের পরিবারই নয়, প্রতিবেশীসহ আশপাশের অনেকেই আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী বিষ্ণু দেব জানান, নয়ন প্রতিদিনের মতো সকাল ৯টার দিকে দোকান খুলে পূজা করছিলেন। সকাল ১০টার দিকে দুই ব্যক্তি বাজারে ঘোরাফেরা করছিলেন। তাদের কোমরে ওয়াকিটকি জাতীয় কিছু একটা ছিল।

বাজারের ব্যবসায়ী জুয়েল দাস বলেন, নয়নকে প্রকাশ্যে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ৩০ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও তার কোনো সন্ধান মেলেনি। আমরা সবাই আতঙ্কের মধ্যে আছি।

নয়নের পাশের দোকানি অপূর্ব দেবনাথও অপহরণের ঘটনার সাক্ষী। এরপর থেকেই পুরো বাজারের ব্যবসায়ীরা আতঙ্কগ্রস্ত। ব্যবসায়ী হরিমন রায় জানান, নয়নের অপহরণের পর থেকে অনেক ব্যবসায়ী দোকান বন্ধ রেখেছেন। কেউ আসলেও সকালে না এসে দুপুরের দিকে আসছেন।

অপহরণ হওয়া নয়ন দাসের মা রত্না রানী দাস বলেন, গত রোববার সকালে আমার ছেলে দোকানে যেতে বের হয়েছিল, তারপর থেকেই তাকে খুঁজে পাচ্ছি না। রাতে কিছু লোক ফোন করে জানায়, সোমবার সকাল ১০টার মধ্যে ১০ লাখ টাকা প্রস্তুত রাখতে। কেউ কিছু জানতে পারলে নয়নকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। অনেক কষ্ট করে টাকা জোগাড় করেছি, কিন্তু অপহরণকারীদের কোনো ফোন পাইনি। আমার ছেলেটা বেঁচে আছে কি না, তাও জানি না।

নয়নের চাচা সুভাষ চন্দ্র দাস বলেন, আমরা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি, কিন্তু এখনো তাকে উদ্ধার করা যায়নি। আমরা দুশ্চিন্তায় আছি, দ্রুত নয়নের সন্ধান চাই।

নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খায়রুল আলম সমকালকে জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে নয়ন দাস নিখোঁজ হওয়ার সংবাদ পেয়েছেন তারা। কয়েকটি সূত্র ধরে অপহরণকারীদের খোঁজার চেষ্টা চলছে। ডিবি ও র‍্যাবের মাধ্যমে নয়নকে উদ্ধার ও অপহরণকারীদের ধরতে অভিযান চলছে।

প্রসঙ্গত, নাসিরনগর উপজেলার ফান্দাউক ইউনিয়নের ফান্দাউক বাজার থেকে গত রোববার (১৬ মার্চ) সকালে নয়ন দাসকে অপহরণ করা হয়। তিনি রামু চন্দ্র দাসের ছেলে। মাত্র ১০ দিন আগে বিয়ে করেছিলেন তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ