নিউইয়র্ক শহরের পথে পথে আমার অশ্রু ঝরেছে: অভিনেত্রী লতা
Published: 18th, March 2025 GMT
আশির দশকের জনপ্রিয় অভিনেত্রী লুৎফুন নাহার লতা। বিটিভিতে প্রচারিত হুমায়ূন আহমেদের লেখা ধারাবাহিক নাটক ‘বহুব্রীহি’, ‘এইসব দিনরাত্রি’; ‘চর আতরজান’ নাটকে অভিনয় করেই জনপ্রিয়তা অর্জন করেন লতা। ‘একাত্তরের লাশ’ নামে একটি ছবিতে অভিনয় করেও প্রশংসিত হয়েছিলেন তিনি। আশি থেকে নব্বইয়ের দশকে টিভি নাটকের ব্যস্ততম অভিনয়শিল্পী ছিলেন তিনি। মঞ্চেও ছিল তাঁর সরব উপস্থিতি। কিন্তু সবকিছুকেই বিদায় জানিয়ে ১৯৯৭ সালে পাড়ি জমান সুদূর যুক্তরাষ্ট্রে। হারিয়ে গেলেন বিনোদনজগৎ থেকে।
বেশ কিছুদিন আগে বাংলাদেশে এসেছিলেন লতা। সে সময় বেসরকারি টেলিভিশন এনটিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জীবনের নানা চড়াই-উতরাইয়ের গল্প বললেন জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী।
সাক্ষাৎকারে নিউইয়র্ক শহরে থিতু হওয়ার বিষয়ে অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি নিউইয়র্ক শহরে একেবারে আনন্দ করতে করতে চলে গেছি, তা কিন্তু নয়। জীবন কিন্তু সোনার পালঙ্ক নয়। এই নিউইয়র্ক শহরের পথে পথে আমার অশ্রু ঝরেছে। আমার এমন দিন গেছে, যেদিন আমি মাটির ব্যাংকে আমাদের দেশে যেমন টাকা জমিয়ে রাখি, তেমন আমার একটি বড় কাপের ভেতরে খুচরো টাকা রাখা থাকত। এমন দিন গেছে যে আমার ঘরে খাবার নেই। আমার সঙ্গে পাঁচ বছরের ছোট বাচ্চা। আমার ওই কয়েন ভাঙিয়ে একটু চাল-আলু এনে সেদ্ধ করে তাকে খাওয়ানো হচ্ছে, খাইয়েছি। কিন্তু কিছুই এসে–যায় না। জীবন তারও চেয়ে অনেক বড়। আমার ভাবনা, আমার চিন্তা, আমার চেতনা ওই এক বেলার খাবারের কাছে আমি আটকে দেব? কেন? আজকে কষ্ট আছে, পরের দিনেই ব্যবস্থা হবে। একটা সময় আসবে। দুঃখ তো চিরদিন থাকে না। তার জন্য কর্মী হিসেবে দাঁড়াতে হয়। পা দুটিকে শক্ত করে দাঁড়াতে হয়। মনোবল হচ্ছে সবচেয়ে বড় বল।’
অভিনেত্রী লুৎফুন নাহার লতা.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
৪৩ দেশের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পরিকল্পনা ট্রাম্প প্রশাসনের
বিশ্বের ৪৩টি দেশে বিভিন্ন মাত্রায় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরিকল্পনা করছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। এই বিষয়টি সম্পর্কে জ্ঞাত ও অভ্যন্তরীণ মেমোর বরাত দিয়ে শনিবার (১৫ মার্চ) এই তথ্য জানিয়েছে নিউইয়র্ক টাইমস।
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসনের এবারের এই নিষেধাজ্ঞা তার প্রথম মেয়াদে আরোপিত বিধিনিষেধের চেয়েও ব্যাপক হতে পারে।
নিউইয়র্ক টাইমস ৪৩টি দেশের কথা উল্লেখ করলেও রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞায় ৪১টি দেশ পড়তে যাচ্ছে।
আরো পড়ুন:
দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করলো যুক্তরাষ্ট্র
গাজার বাসিন্দাদের বাস্তুচ্যুত করার পরিকল্পনা থেকে সরে আসার ইঙ্গিত ট্রাম্পের
খবরে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞায় পড়তে যাওয়া এসব দেশকে তিনটি ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। রয়টার্স বলছে, প্রথম ভাগের দেশগুলোর ওপর সম্পূর্ণ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। এই তালিকায় রয়েছে ১০টি দেশ। এসব দেশের মধ্যে রয়েছে আফগানিস্তান, ইরান, সিরিয়া, কিউবা, উত্তর কোরিয়া।
তবে নিউইয়র্ক টাইমসের তথ্য অনুযায়ী, এই পাঁচ দেশ ছাড়াও সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞায় পড়তে পারে ভুটান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান, ভেনিজুয়েলা ও ইয়েমেন।
রয়টার্স জানিয়েছে, নিষেধাজ্ঞার দ্বিতীয় ভাগে রয়েছে পাঁচটি দেশ। ইরিত্রিয়া, হাইতি, লাওস, মিয়ানমার, দক্ষিণ সুদানের ওপর আংশিক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। এতে করে এসব দেশের পর্যটক, শিক্ষার্থীর ওপর প্রভাব পড়বে।
তবে নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, এই ভাগে আরও থাকছে বেলারুশ, পাকিস্তান, রাশিয়া, সিয়েরা লিওন ও তুর্কমিনিস্থান।
এ ছাড়া তৃতীয় ধাপের দেশগুলোকে ৬০ দিনের সময় দেওয়া হবে ট্রাম্প প্রশাসনের উদ্বেগ দূর করতে। রয়টার্স বলছে, এই ধাপে রয়েছে ২৬টি দেশ এবং নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, এই তালিকায় রয়েছে ২২টি দেশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব দেশের নাগরিকদের মার্কিন ভিসা আংশিকভাবে স্থগিত করা হতে পারে। তবে দেশগুলো যদি ৬০ দিনের মধ্যে ভিসা যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ার ঘাটতি দূর করতে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়, তাহলে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বিবেচনা করা হবে।
এক মার্কিন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এই তালিকা পরিবর্তন হতে পারে। এটি এখনো মার্কিন প্রশাসনের সর্বোচ্চ পর্যায়ে অনুমোদন দেওয়া হয়নি। এর জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সম্মতিও প্রয়োজন।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরও এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি।
ঢাকা/ফিরোজ