এআই কি সত্যিই সফটওয়্যারের শতভাগ কোড লিখে দেবে
Published: 18th, March 2025 GMT
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ধীরে ধীরে সফটওয়্যার তৈরির ধরন বদলে দিচ্ছে। প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের অনেকে মনে করছেন, আগামী দিনে সফটওয়্যারের কোড লেখার কাজটি এআইয়ের কারণে পুরোপুরি অটোমেটেড হয়ে যাবে। তবে এ নিয়ে মতবিরোধও রয়েছে। কেউ একে যুগান্তকারী পরিবর্তন হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ এটিকে বাড়তি প্রচারণা ছাড়া কিছু মনে করছেন না।
সম্প্রতি এক আলোচনায় এআই গবেষণাপ্রতিষ্ঠান অ্যানথ্রপিকের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডারিও আমোডেই দাবি করেছেন, ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ ৯০ থেকে ১০০ শতাংশ সফটওয়্যার কোডই স্বয়ংক্রিয়ভাবে লিখে দেবে এআই। এর ফলে ভবিষ্যতে সফটওয়্যার প্রকৌশলীদের ভূমিকা কমে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমের নির্মাতা লিনাস টরভাল্ডস এআই নিয়ে চলমান উন্মাদনাকে ‘৯০ শতাংশ মার্কেটিং ও ১০ শতাংশ বাস্তবতা’ বলে মন্তব্য করেছেন। প্রযুক্তিবিষয়ক সংবাদমাধ্যম টিএফআইআরকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘এআই অবশ্যই আকর্ষণীয়, তবে আমি আপাতত এ নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছি না।’ তাঁর মতে, সফটওয়্যার–শিল্পে সত্যিকার অর্থে কার্যকর পরিবর্তন আসতে আরও অন্তত পাঁচ বছর সময় লাগবে। যদিও তিনি স্বীকার করেছেন, ভাষাগত মডেল ও গ্রাফিক ডিজাইন সফটওয়্যার ইতিমধ্যে বাস্তব ক্ষেত্রে কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে।
মেটার প্রধান এআই বিজ্ঞানী ইয়ান লেকুন জানিয়েছেন, বর্তমান জেনারেটিভ এআই ও বৃহৎ ভাষার মডেল (এলএলএম) আগামী পাঁচ বছরের মধ্যেই অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়বে। তিনি বলেন, বর্তমান এআই প্রযুক্তির প্রধান সীমাবদ্ধতা হলো ফিজিক্যাল অ্যাওয়ারনেস, কন্টিনিউয়াস মেমোরি, যৌক্তিক বিশ্লেষণ ও জটিল পরিকল্পনার সক্ষমতার অভাব। তাঁর মতে, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে নতুন ধরনের এআই প্রযুক্তি আসবে, যা আরও উন্নত ও কার্যকর হবে। ভবিষ্যতে রোবোটিকস ও স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তির ক্ষেত্রে নতুন যুগের সূচনা হতে পারে বলে মনে করেন তিনি।
সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সফটওয় য র
এছাড়াও পড়ুন:
৪১৫৬৭ অসহায় ও দুস্থ অনুদানের অপেক্ষায়
টাকার অভাবে কেউ ওষুধ কিনতে পারছেন না; কারও থেরাপি নেওয়া বন্ধ। কারও চিকিৎসাই বন্ধ। ক্যান্সার, কিডনি, লিভার সিরোসিস, পক্ষাঘাতগ্রস্ত, জন্মগত হৃদরোগ ও থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত ৪১ হাজার ৫৬৭ রোগী পড়েছেন বিপাকে। সমাজসেবা অধিদপ্তরের আর্থিক সহায়তা কার্যক্রমের অনুদান তারা পাচ্ছেন না।
সমাজসেবা অধিদপ্তরের তথ্যমতে, দেশে প্রতিবছর ৩ লক্ষাধিক লোক ক্যান্সার, কিডনি, লিভার সিরোসিস, স্ট্রোকে প্যারালাইজড, জন্মগত হৃদরোগ ও থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। অর্থের অভাবে এসব রোগে আক্রান্তরা ধুঁকে ধুঁকে মারা যায়। অনেকের পরিবার চিকিৎসা ব্যয় বহন করে নিঃস্ব হয়ে পড়ে।
‘হাসপাতাল সমাজসেবা কার্যক্রমে’র মাধ্যমে দুস্থ ও অসহায় রোগীদের আর্থিক সহায়তা দেয় সমাজসেবা অধিদপ্তর। ২০১০ সাল থেকে তিন মাস অন্তর টাকা দেওয়া হয়। বর্তমানে এককালীন ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। এ জন্য অনলাইনে আবেদন করতে হয়। গত জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি-মার্চের টাকা চলতি এপ্রিল মাসের অর্ধেক পার হলেও তারা পাননি। কবে পাবেন, তা তারা জানেন না।
চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার বাসিন্দা রাশেদা বেগম (৪৫) জানান, তিনি স্তন ক্যান্সারে ভুগছেন। ভ্যানচালক স্বামী এবং ছেলেমেয়ে নিয়ে তাঁর পরিবার। অভাবের কারণে তিনি চিকিৎসার খরচ বহন করতে হিমশিম খাচ্ছেন। উপায়ান্তর না পেয়ে এলাকার মানুষের পরামর্শে সমাজসেবা অধিদপ্তরে আবেদন করেন। আর্থিক সাহায্য পেলে তিনি চিকিৎসা করাতে পারবেন।
খুলনা সদরের মহেষ্যপাশার মানিকতলার বাসিন্দা ইয়াসমিন জাহান মাঈশা (২৫) জানান, দুরারোগ্য ব্রেন ক্যান্সারে আক্রান্ত তিনি। সমাজসেবা অধিদপ্তরে সাহায্যের আবেদন করেছেন। তাঁর স্বামী ইজিবাইক চালক। সংসারে রয়েছে দুই কন্যা। চিকিৎসার খরচ জোগাতে তিনি ঘুরছেন দ্বারে দ্বারে।
রাজশাহীর তানোর উপজেলার বেলী বেগম (৪৫) জানান, তিনি ক্যান্সার আক্রান্ত। স্বামী আলমগীর হোসেন তেমন কোনো কাজ করেন না। ছোট্ট একটি ফার্মেসির উপার্জন দিয়ে চলছে তাঁর সংসার। চিকিৎসার টাকা জোগাতে তারও হিমশিম খেতে হচ্ছে। শেষ ভরসা হিসেবে সমাজসেবায় জমা দিয়েছেন সহায়তার আবেদন।
জানতে চাইলে সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাইদুর রহমান খান সমকালকে বলেন, বছরে চারবার এই টাকা দেওয়া হয়। সর্বশেষ ডিসেম্বরে টাকা দেওয়া হয়েছে। শিগগির এবারের টাকা ছাড় দেওয়া হবে।
সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালক (সামাজিক নিরাপত্তা) মো. মোশাররফ হোসেন বলেন, ৭৫ শতাংশ অর্থ ৬৪ জেলায় জনসংখ্যার আনুপাতিক হারে বিভাজন করে পাঠানো হয়। যারা আর্থিক সহায়তার জন্য আবেদন জমা দিয়েছেন, তাদের প্রক্রিয়াগত কার্যক্রম সম্পন্ন করার পর দ্রুত টাকা দেওয়ার চেষ্টা চলছে।