রোবটিক ফিজিওথেরাপি কেন্দ্র হচ্ছে দেশেই
Published: 18th, March 2025 GMT
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের দেশেই উন্নত চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের লক্ষ্যে রিহ্যাবিলিটেশন ও রোবটিক ফিজিওথেরাপি সেন্টার স্থাপন করতে যাচ্ছে চীন। রাজধানীর শাহবাগে অবস্থিত বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (সাবেক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) এই সেন্টার স্থাপন করা হবে। এরই মধ্যে চীনের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল এ বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করে গেছে। ফিজিওথেরাপি সেন্টার গড়ে তুলতে কিছু যন্ত্র বিনামূল্যে দিচ্ছে দেশটি। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী জুনের মধ্যে সেবাদানে প্রস্তুত হবে এ চিকিৎসা কেন্দ্র। প্রথমে জুলাই যোদ্ধাদের সেবা নিশ্চিত করা হবে। ধীরে ধীরে অন্য রোগীরাও এ কেন্দ্রে সেবা নিতে পারবেন। চীনা দূতাবাস ও বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আহত হয়েছে ২২ হাজারের বেশি মানুষ। তবে গণঅভ্যুত্থান-সংক্রান্ত বিশেষ সেলের তালিকায় ১১ হাজার ৩০৬ জন আহত স্থান পেয়েছে। এদের অধিকাংশ গুলিতে আহত। ক্ষত অনেক গভীর হওয়ায় দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা প্রয়োজন। কারও কারও উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। এরই মধ্যে উন্নত চিকিৎসার জন্য ৩৮ জনকে বিদেশে পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে ১২ জনকে রোবটিক ফিজিওথেরাপি যন্ত্রের মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে, যা অনেক ব্যয়বহুল। এ ছাড়া সঙ্গে যাওয়া অ্যাটেনডেন্টদের খাবার, বাসস্থান, অভ্যন্তরীণ যাতায়াত ও চিকিৎসা বাবদ অনেক টাকা ব্যয় হচ্ছে। তাই পক্ষাঘাতগ্রস্ত জুলাই যোদ্ধাদের উন্নত চিকিৎসা দিতে সরকার চীনের সহায়তায় একটি রোবটিক ফিজিওথেরাপি সেন্টার স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। এতে এদিকে যেমন চিকিৎসা খরচ কমবে, অন্যদিকে বাঁচবে সময়।
এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা.
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এরই মধ্যে যন্ত্রপাতি আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। চলছে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য তালিকা তৈরির কাজ। প্রথমে বাংলাদেশের জনবলকে যন্ত্রপাতি পরিচালনার জন্য ১০ দিন প্রশিক্ষণ দেবে চীনের বিশেষজ্ঞ টিম। এই সেন্টার স্থাপনে চীনের একটি বিশেষজ্ঞ টিম মার্চের শুরুতে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের বেজমেন্ট, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ব্লকের ৪ তলা এবং বেতার ভবন পরিদর্শন করে গেছে। কিছুদিনের মধ্যে জায়গা নির্বাচন করে আধুনিক যন্ত্রপাতি স্থাপনের কাজ শুরু হবে। তবে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালটি যেহেতু কোরিয়ান অর্থায়নে করা, তাই সেখানে এ সেন্টার করা যাবে কিনা, সে বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তাই এই সেন্টার বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে হতে পারে।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম সমকালকে বলেন, জুলাই গণআন্দোলনে সংকটাপন্ন ফাহিম হাসানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ড পাঠানো হয়েছে। সেখানে রোবটিক ফিজিওথেরাপি যন্ত্রের সাহায্যে তার চিকিৎসা চলছে। ফাহিমের মতো অনেকের এমন চিকিৎসা প্রয়োজন। তবে সবাইকে বিদেশে চিকিৎসা করাতে অনেক টাকা লাগবে। এই চিকিৎসা দেশে চালু করার জন্য চীনসহ বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আমাদের প্রস্তাবে চীন সাড়া দিয়েছে। এখন শুধু বাস্তবায়নের সময় লাগবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আহত তিন শতাধিক পক্ষাঘাতগ্রস্ত ব্যক্তি এখনও দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাদের দীর্ঘমেয়াদি সুচিকিৎসা নিশ্চিতে রোবটিক ফিজিওথেরাপি সেন্টার তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এই স ন ট র র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
নড়াইলের কালিয়ায় দু’পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১
নড়াইলের কালিয়া উপজেলার বাবরা-হাচলা ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে ফরিদ মোল্যা (৫০) নামে একজন নিহত হয়েছে। নিহত ফরিদ মোল্যা কাঞ্চনপুর গ্রামের মৃত সুরত মোল্যার ছেলে।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় কালিয়া উপজেলার বাবরা-হাচলা ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামে এ সংঘর্ষ ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয়দের থেকে জানা যায়, সংঘর্ষের পর গুরুতর আহত অবস্থায় ফরিদ মোল্যাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাত সাড়ে ১০টার দিকে মারা যান।
এ সংঘর্ষে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য নড়াইল আধুনিক সদর হাসপাতাল ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। আহতদের মধ্যে বশির মুন্সি নামে আরেকজনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
জানা যায়, উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের মিলন মোল্যা ও আফতাব মোল্যার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে গ্রাম্য আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। ইতোপূর্বে একাধিক সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে দু’পক্ষের মধ্যে। এ নিয়ে থানায় উভয়পক্ষের একাধিক মামলাও রয়েছে। ঈদের দিন থেকেই গ্রামটিতে উত্তেজনা বিরাজ করছিলো। নিহত ফরিদ মোল্যা আফতাব মোল্যা গ্রুপের সমর্থক ছিলেন।
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বিকালে মিলন মোল্যা পক্ষের সানোয়ার রহমান নড়াইল আদালত থেকে হাজিরা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে তাকে একা পেয়ে আফতাব মোল্যার লোকজন মারপিট করে। এ ঘটনার জের ধরে শুক্রবার সন্ধ্যায় কাঞ্চনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে মিলন মোল্যা পক্ষের লোকজন আফতাব মোল্যার বাড়িতে হামলা করে। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে উভয়পক্ষ স্কুল মাঠে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ঘণ্টাব্যাপি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়।
আফতাব মোল্যা পক্ষের আহতদের মধ্যে রয়েছেন- করিম মুন্সি (৪৯), হুসাইন শেখ (১৮), আশরাফ মোল্যা (৫০), বশির মুন্সি (৪৫), করিম মুন্সী (৩৭), জালাল মুন্সি (৪৭), নাহিদ মোল্যা (২৫), করিম মোল্যা (১৬), সহিদ মুন্সি (৪০)।
মিলন মোল্যা পক্ষের দের মধ্যে রয়েছেন- তৌহিদ মোল্যা (৫০), আলমিস শেখ (৩৫) নিরব মোল্যা (১২), হাসিব মোল্যা (১৫), কিবরিয়া শেখ (২৮), ওসমান মোল্যা (১৫), কামাল কাজী (৪০), তরিক শেখ (২৪), জাকারিয়া শেখ (২৫) ও দিদার শেখ (১৮), হুমায়ন কাজী (৩৫), ওহাব কাজী (৪৫), পিয়ার মোল্যা (৩৪)।
ঘটনার পরপরই সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়ে ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করে কালিয়া থানায় হন্তান্তর করে।
শনিবার (১২ এপ্রিল) সকালে কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাশিদুল ইসলাম বলেন, “এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। এ ঘটনায় আইনুগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
ঢাকা/শরিফুল/টিপু