Samakal:
2025-03-17@21:55:35 GMT

ইমিউনিটি কীভাবে বাড়াবেন

Published: 17th, March 2025 GMT

ইমিউনিটি কীভাবে বাড়াবেন

পুষ্টিকর খাবার মানে সুস্থ শরীর। রোজকার ডায়েটে সবই তো রাখা হচ্ছে এখন। তা সত্ত্বেও ইমিউনিটির এত অভাব! খাবার থেকে পুষ্টি আসে, এ কথা ঠিক। তবে ইমিউনিটির সঙ্গে যখন আপস করাই হচ্ছে, তার মানে পুষ্টিতে কমতি রয়েছে, সেটি স্পষ্ট। ভাত, ডাল, তরিতরকারি, মাছ-মাংস, ডিম, দুধ, ফল, পানি এসব খেলে সুস্থ থাকবেন তখনই, যখন তার পরিমাণটা ঠিক ঠিক হবে। আপনার শরীরে যতটা দরকার, মেপে মেপে ঠিক ততটাই দিতে হবে এবং তা যে শরীর ভালোভাবে গ্রহণ করছে সেটিও নিশ্চিত করতে হবে।
ব্যালান্সড ডায়েট মানে কিন্তু শাকসবজি বা লাগজারিয়াস খাবার নয়। বাজারে যা পাওয়া যায়, যা প্রতিনিয়ত খেয়ে আসছি আমরা, সেগুলো দিয়েই ব্যালান্সড ডায়েট চার্ট তৈরি করা সম্ভব। উপকরণের চেয়েও এখানে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো পরিমাণ এবং রান্নার ধরন। 
এমনভাবে রোজকার ডায়েট সাজাতে হবে, যাতে খাবারের মূল যে ছয়টা উপকরণ– প্রোটিন, ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন, মিনারেল এবং পানি– এই প্রতিটিই পরিমিত পরিমাণে থাকে। কার্বোহাইড্রেট বলতে মূলত আমরা বুঝি ভাত-রুটি। রোজকার যে এনার্জি আমাদের দরকার, সেটি কিন্তু কার্বোহাইড্রেট থেকেই আমরা পাই। প্রোটিন জরুরি মাসল বিল্ডিংয়ের জন্য। আমরা যখনই কোনো অসুখে ভুগি, তখন ব্যাপক পরিমাণে মাসল ব্রেকডাউন হয়। যেটা এখন খুব হচ্ছেও সংক্রমণের কারণে। দীর্ঘদিন অসুখে ভুগলে আমরা যে রোগা হয়ে যাই, সেটা মূলত এই মাসল ব্রেকডাউনের কারণেই। সেজন্যই প্রোটিন নিয়ে এত জোরাজুরি এখন। শরীর যাতে সেই পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকে, তাই নিয়মিত প্রোটিন খেতে হবে। ইনস্ট্যান্ট এনার্জি সোর্সের অনেকটা আসে ফ্যাট থেকেও। এ ছাড়া শরীরের অনেক জরুরি প্রক্রিয়াই ফ্যাট ছাড়া অসম্পূর্ণ। অনেকেই ভাবেন, ডায়েট থেকে ফ্যাট বাদ দিয়ে দিলেই তা স্বাস্থ্যকর হয়ে যায়। এই ধারণা ভুল। এমন অনেক ভিটামিন আছে, যা শরীর মানিয়ে নেয় ফ্যাটের সাহায্যে। তাই ফ্যাটও ডায়েটে সমান গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন ও মিনারেল প্রধানত ইমিউনিটির জন্য জরুরি। নানা ধরনের অসুখ থেকে সুরক্ষা দিতে শরীরে ভিটামিন ও মিনারেল দরকার। এ ছাড়া দরকার ফাইবার। খাবার শুধু খেলেই তো হয় না, তা যাতে শরীরে ভালোমতো অ্যাবসর্ব হয়, সেটাও খেয়াল রাখতে হবে। খাবারের যথাযথ ডাইজেশন তাই খুব জরুরি। সে কাজটাই করে ফাইবার। হজমশক্তি এবং বাওয়েল সিস্টেম ভালো রাখতে তাই প্রতিদিনের খাবারে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার রাখতে হবে। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবশ্যই ফ্লুইড বা পানি। শুধু এই সময়ের জন্য নয়, সারা বছরই শরীরে পর্যাপ্ত পানি দরকার। শরীর যাতে ডিহাইড্রেটেড না হয়ে পড়ে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এ সবক’টিই যদি দৈনন্দিন ডায়েটে পরিমিত পরিমাণে থাকে, তাহলে সেটিই হবে ব্যালান্সড ডায়েট। এই উপকরণগুলোর মধ্যে শরীরে যদি কোনো একটারও অভাব হয়, সে ক্ষেত্রে সবার আগে প্রভাব পড়বে এনার্জি লেভেলে। কাজ করায় উৎসাহ পাবেন না, ক্লান্ত লাগবে। তারপর প্রভাব পড়বে ইমিউন রেসপন্সে। শারীরিক বিভিন্ন প্রক্রিয়া অসম্পূর্ণ থেকে যাবে আর বাহ্যিক রোগ-জীবাণুর সঙ্গে লড়াইয়েও শরীর পেরে উঠবে না। পরিমাণের মোটামুটি একটা হিসাব ধরতে হলে রোজকার খাবারে ফ্যাট, প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেটের অনুপাত ৪:৪:৯ হলে আদর্শ। অর্থাৎ, একজন প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ ব্যক্তির দৈনন্দিন যত কিলোক্যালরির দরকার, কার্বোহাইড্রেট লাগবে তার ৫৫-৬৫ শতাংশ, ফ্যাট লাগবে ১৫-৩০ শতাংশ এবং প্রোটিন লাগবে ১০-১৫ শতাংশ। এই পরিমাণটা জেন্ডার, বয়স এবং শরীরভেদে আলাদা হতে পারে। কারও যদি ডায়াবেটিস থাকে, তার যেমন কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কমাতে হতে পারে, তেমনি ওবেসিটিতে ফ্যাটের পরিমাণ হয়তো খানিকটা কমবে। v

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন য পর ম ণ দরক র

এছাড়াও পড়ুন:

পোশাক খাতে অভ্যন্তরীণ উৎপাদনে নজর যুক্তরাষ্ট্রের

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘মেড ইন আমেরিকা’ নীতির কারণে দেশটির খুচরা ব্যবসায়ীরা দেশীয়ভাবে উৎপাদন বাড়াতে আগ্রহ প্রকাশ করছেন। বিশেষ করে তৈরি পোশাক, জুতা ও স্যুট-কোট ব্যবসায়ীরা দেশীয়ভাবে তাদের উৎপাদন সম্প্রসারণ করার চিন্তা করছেন। তবে তা করতে গিয়ে তারা নানা সংকটের কথা জানিয়েছেন। তাদের বক্তব্য, ট্রাম্পের শুল্কনীতির কারণে পণ্য ও উপকরণ আমদানি কঠিন হয়ে পড়েছে। এ জন্য বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশ থেকে সস্তায় আমদানি কমার আশঙ্কা নেই।   

রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সীমিত সুযোগ-সুবিধার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক উৎপাদনে সাফল্য পাওয়া  অত্যন্ত কঠিন; এমনকি অসম্ভব বলা যায়। কারণ, এখানে শ্রমিকের মজুরি বেশি, পাশাপাশি আমদানি করা উপকরণের শুল্ক বেশি হওয়ায় তৈরি পোশাকের দাম অনেক বেশি পড়ে যায়। বোতাম, কাপড় ও জিপারের মতো উপকরণ আমদানি করতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ট্রাম্পের শুল্কনীতি। চীনের বিরুদ্ধে মার্কিন শুল্ক আরোপের কারণে গামবার্টের বোতামের দাম ১৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। 

সম্প্রতি ওয়ালমার্ট কোম্পানির প্রধান ডগ ম্যাকমিলনসহ মার্কিন কোম্পানির সিইওদের সঙ্গে বৈঠক করেন ট্রাম্প। বৈঠকে তিনি কোম্পানিগুলোর করপোরেট কর ২১ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।  

নিউইয়র্কভিত্তিক পুরুষদের শার্ট প্রস্তুতকারী কোম্পানি গামবার্ট শার্টমেকার্সের মালিক ও প্রধান নির্বাহী মিক গামবার্ট বলেন, ‘আমরা (যুক্তরাষ্ট্রের খুচরা) ব্র্যান্ডগুলোর কাছ থেকে প্রচুর (উৎপাদনের) অনুরোধ পাচ্ছি।’ গামবার্টের প্রতিষ্ঠান খুচরা বিক্রেতা চেইন শপ নর্ডস্ট্রমের তিনটি শোরুমে বোতামযুক্ত সুতি শার্ট সরবরাহ করে। গামবার্ট জানান, নর্ডস্ট্রম আগামী জুনের শেষের মধ্যে সরবরাহ বাড়িয়ে ৫০টি স্টোরে পণ্য পৌঁছানোর অনুরোধ করেছে।

ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক নারীদের পোশাক বিক্রয় কোম্পানি রিফর্মেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ক্যাথলিন ট্যালবট বলেন, তিনিও দেশীয় উৎপাদন বাড়াতে বিনিয়োগে বিশ্বাসী। লস অ্যাঞ্জেলেস, নিউইয়র্ক ও নেভাদায় তিনি নারীদের পোশাক সরবরাহ করার পরিকল্পনা করছেন। তবে সাফল্য আসতে সময় লাগবে বলে তিনি মনে করেন। 

তবে আমেরিকান অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি স্টিভ লামার বলেন, ‘আমাদের কাছে বৃহৎ পরিসরে পোশাক ও জুতা তৈরির জন্য পর্যাপ্ত শ্রম, দক্ষতা, উপকরণ এবং অবকাঠামো নেই।’ 

আমেরিকানরা কম দামের চীনা ও এশিয়ান তৈরি পোশাক কিনতে অভ্যস্ত। যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি হওয়া পোশাক ও জুতার প্রায় ৯৭ শতাংশ আমদানি করা হয়। চীন মার্কিন পোশাক আমদানির সবচেয়ে বড় উৎস, যদিও গত ১৫ বছরে ভিয়েতনাম ও বাংলাদেশ থেকে পোশাক আমদানি বাড়িয়েছে তারা। 

ওহাইওর মায়ামি বিশ্ববিদ্যালয়ের সরবরাহ শৃঙ্খল ব্যবস্থাপনার সহযোগী অধ্যাপক ইয়াও জিন বলেন, ১৯৯০ সাল থেকে মার্কিন পোশাক উৎপাদন খাত সংকুচিত হয়েছে। কারণ ব্র্যান্ড ও খুচরা ব্যবসায়ীরা চীন, ভিয়েতনাম, বাংলাদেশসহ কম মজুরির দেশগুলোর কারখানা থেকে পণ্য পাচ্ছে। এ জন্য তৈরি পোশাকের ব্যবসা যুক্তরাষ্ট্রে দাঁড় করানো কঠিন হবে। 

ন্যাশনাল কাউন্সিল অব টেক্সটাইল অর্গানাইজেশনের সভাপতি কিম গ্লাস জানান, তিনি মেক্সিকো ও কানাডার ওপর শুল্ক আরোপের বিপক্ষে। কারণ কাপড়, তুলা, পশম ও সুতা আমদানিতে শুল্ক বাড়ালে ব্যবসায়ীরা অসহায় হয়ে পড়েন। আর দেশীয় বিনিয়োগে দীর্ঘমেয়াদি নিশ্চয়তা না পেলে ব্যবসায় ভালো করা অসম্ভব।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজায় বেঁচে থাকার জন্য লড়াই করছে ১০ লাখ শিশু
  • পোশাক খাতে অভ্যন্তরীণ উৎপাদনে নজর যুক্তরাষ্ট্রের