আস্তাকুঁড় নেই, বর্জ্য ফেলা হচ্ছে সড়কের পাশে ও নদীতে
Published: 17th, March 2025 GMT
গুরুদাসপুর পৌরসভার কোথাও আস্তাকুঁড় কিংবা ডাম্পিং স্টেশন নেই। শহরের বর্জ্য ফেলা হচ্ছে ব্যস্ততম সড়ক, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা ও নদীর তীরে। এতে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি দুর্গন্ধে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন পথচারী, শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দারা। নদীর তীরে বর্জ্যের স্তূপে সংকুচিত হয়ে গেছে এক সময়ের স্রোতস্বিনী নন্দকুঁজা নদী।
স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েকজন আক্ষেপ করে বলেন, সড়কের মোড়ে মোড়ে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে-পেছনে, বাজারসংলগ্ন জায়গায়, এমনকি লোকজনের বাসাবাড়ির সামনেও দিনের পর দিন বর্জ্য পড়ে থাকে। উৎকট দুর্গন্ধে বাতাস ভারী হয়ে থাকে; মশা-মাছিসহ নানা রকমের পোকামাকড়ের অবাধ বংশবিস্তার চলছে। ময়লা-আবর্জনায় নদী ভরাট ও দূষিত হচ্ছে। এ জন্য সাধারণ মানুষ নয়, খোদ পৌর কর্তৃপক্ষই দায়ী বলছেন তারা।
১৯৯১ সালে গুরুদাসপুর ‘পৌরসভা’ হিসেবে স্বীকৃতি পায়। ২০০৫ সালে এটিকে প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত করা হয়। ১১ বর্গকিলোমিটারের এ পৌরসভার আওতায় উত্তরাঞ্চলের বৃহৎ চাঁচকৈড় হাট, গুরুদাসপুর বাজারসহ ছোট ছোট বিভিন্ন বাজার ও কলকারখানা রয়েছে। এসব এলাকার পাড়া-মহল্লার আনাচেকানাচে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে ময়লা-আবর্জনা, সেগুলোর সিংহভাগই গৃহস্থালি ও হোটেল-রেস্তোরাঁর পচনশীল বর্জ্য পদার্থ।
সরেজমিন দেখা গেছে, নন্দকুঁজা নদী ছাড়াও শহরের গুরুদাসপুর বাজার ভূমি অফিসের
সামনে, খামারনাচকৈড় বাদুরতলা ঘাটে, চাঁচকৈড় প্রফেসর পাড়ার পাকা সড়ক ঘেঁষে, চলনালী হরিজন পল্লির পাশের পাকা সড়ক, দুখা ফকিরের মোড়, চাঁচকৈড় নাজিম উদ্দিন স্কুলের সামনের সড়কের ওপর বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। এসব ব্যস্ততম এলাকায় খেয়ালখুশি মতো বর্জ্য ফেলায় স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। দুর্গন্ধের পাশপাশি নানাভাবে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন পথচারীরা।
চাঁচকৈড় হাটের ব্যবসায়ী বাবুল হোসেন, আকতার আলী, আব্দুস সামাদসহ অনেকেই বলেন, চাঁচকৈড় হাটের উত্তরাংশে নদীর তীর দখল করে আধা কিলোমিটারজুড়ে রয়েছে পাকা সড়ক। সড়কের ওপরই বসে বাঁশ-কাঠ, ধান, রসুন, মাংসসহ গরু-ছাগলের হাট। রয়েছে মুরগি বাজার, মাছের আড়ত, পৌর শৌচাগারও। শুধু পৌর শহর আর মহল্লার বর্জ্য নয়, এসব হাটবাজারের বর্জ্যও হরহামেশাই ফেলা হয় নন্দকুঁজার বুকে। অথচ নন্দকুঁজা নদীকে কেন্দ্র করেই নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে ওঠে চাঁচকৈড় হাট।
শিক্ষার্থীরা জানায়, দুর্গন্ধময় পচা আবর্জনায় ভরা রাস্তাঘাটে চলতে গিয়ে তাদের বমি আসে, মাথা ঘোরায়। এমনকি আবর্জনার দুর্গন্ধে বাসাবাড়িতে থাকাও কষ্টকর হয়ে উঠেছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.
বর্জ্য ফেলার কারণে পরিবেশ দূষণের সঙ্গে সঙ্গে মানুষ পানিবাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এসব বর্জ্য অপসারণ করে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলার ব্যবস্থা করতে হবে।
উপজেলা নদী বাঁচাও আন্দোলন কমিটির সভাপতি মজিবুর রহমান মজনু সমকালকে বলেন, নদী এবং নদীর আশপাশে বর্জ্য না ফেলে ছোট ডাস্টবিন অথবা ডাম্পিং স্টেশন স্থাপন করলে এ সমস্যা হতো না।
গুরুদাসপুর পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহমিদা আফরোজ বলেন, পরিবেশবান্ধব বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য পৌরসভার পক্ষ থেকে জমি কেনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। জায়গা পেলেই বর্জ্য অপসারণ করা হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: বর জ য ফ ল নদ র ত র র বর জ য সড়ক র প রসভ
এছাড়াও পড়ুন:
নতুন শিল্পে গ্যাসের মূল্য ৩৩% বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের
নতুন শিল্পে গ্যাসের মূল্য ৩৩ শতাংশ বৃদ্ধির নিন্দা জানিয়ে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন। এই সিদ্ধান্ত দেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার, বিনিয়োগের পরিবেশ ও সাধারণ মানুষের জীবনমানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করে সংগঠনটি।
আজ সোমবার রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, করোনা মহামারি থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের রাজনৈতিক পটপরিবর্তন পর্যন্ত বাংলাদেশের অর্থনীতি ধারাবাহিক সংকটে জর্জরিত। এ সময় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ব্যবসায়ীরা। সরকার ‘সার্বিক বিনিয়োগ বাড়ানোর’ অঙ্গীকার করলেও গ্যাসের দাম বাড়িয়ে শিল্প খাতকে চাপের মুখে ফেলেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) স্বীকার করেছে, তারা মূল্যবৃদ্ধির পক্ষে কোনো স্পষ্ট অর্থনৈতিক বা রাজস্বভিত্তিক যুক্তি উপস্থাপন করতে পারেনি। কমিশনের চেয়ারম্যানের বক্তব্য অনুযায়ী, ‘রাজস্ব চাহিদা’ বিবেচনা না করে মন্ত্রণালয়ের পরামর্শে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এটি জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সরকারের প্রতিশ্রুত স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক শাসনব্যবস্থার পরিপন্থী।
এ অবস্থায় রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন বেশ কিছু দাবি জানিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—শিল্প খাতসহ সব অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করে সহনীয় মূল্যকাঠামো নির্ধারণ করা, জ্বালানি খাতের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং দুর্নীতি ও অপচয় রোধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া, ‘নতুন’ ও ‘পুরোনো’ শিল্পের মধ্যে বৈষম্য দূর করে একই মূল্যনীতি চালু করা এবং ভবিষ্যতে কোনো নীতি প্রণয়নের আগে সব স্তরের অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা ও তাদের সম্মতি নিশ্চিত করা।
আরও পড়ুননতুন শিল্পে গ্যাসের দাম বাড়ল ৩৩ শতাংশ, পুরোনো শিল্পে বাড়তি ব্যবহারে নতুন দাম১৩ এপ্রিল ২০২৫