গাজীপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নারী শ্রমিক নিহতের প্রতিবাদে বিক্ষোভ, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত ১০
Published: 17th, March 2025 GMT
গাজীপুর সদর উপজেলার বাঘের বাজার এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় সাবিনা আক্তার (২৮) নামের এক নারী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে শ্রমিক ও স্থানীয় বাসিন্দারা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। এ সময় পুলিশ তাঁদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ছয় পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
সোমবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত সাবিনা আক্তার ময়মনসিংহের ফুলপুর থানার খালসাইদফুনা গ্রামের বাসিন্দা রাব্বি মিয়ার স্ত্রী।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সোমবার ইফতারের পর বাঘের বাজার এলাকার গোল্ডেন রিপিট নামের একটি কারখানায় যাচ্ছিলেন সাবিনা আক্তারা। বাঘের বাজার এলাকায় মহাসড়ক পার হওয়ার সময় একটি মাইক্রোবাস তাঁকে ধাক্কা দিলে তিনি গুরুতর আহত হন। স্থানীয় লোকজন প্রথমে তাঁকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই তাঁর মৃত্যু হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দুর্ঘটনায় নারী শ্রমিকের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে সহকর্মী শ্রমিক ও স্থানীয় লোকজন ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় উত্তেজিত শ্রমিক ও এলাকাবাসী কারখানায় ভাঙচুরের চেষ্টা চালান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে শ্রমিকদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে তাঁরা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এতে ছয় পুলিশ সদস্য আহত হন।
সংঘর্ষের সময় উত্তেজিত শ্রমিকেরা মহাসড়কে বেশ কয়েকটি গাড়িতে ভাঙচুর চালান। পরে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে এসে পুলিশের সঙ্গে যোগ দিলে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সাউন্ড গ্রেনেড, রাবার বুলেট ও লাঠিপেটা করে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। একপর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল হালিম বলেন, শ্রমিক নিয়ন্ত্রণের সময় বহিরাগতরা সুযোগ নিয়ে কারখানায় ভাঙচুরের চেষ্টা চালান। পুলিশ বাধা দিলে তাঁরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এতে থানা–পুলিশের তিনজন ও শিল্প পুলিশের তিনজনসহ মোট ১০ জন আহত হয়েছেন। পরে সেনাবাহিনীর সহায়তায় অভিযান চালিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয় এবং যান চলাচল শুরু হয়।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ডেঙ্গুতে দু’জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ২২ রোগী
দেশে গত চব্বিশ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে ৫ এপ্রিল একজনের মৃত্যুর তথ্য দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ নিয়ে চলতি বছরে রোগটিতে ১৬ জনের মৃত্যু হলো। শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত চব্বিশ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২২ জন। তাদের মধ্যে ১০ জনই বরিশাল বিভাগের। এ ছাড়া ঢাকা সিটি করপোরেশন এলাকার ছয়, ঢাকা বিভাগে চার ও চট্টগ্রাম বিভাগে দু’জন রয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২ হাজার ৭৪ জন। তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৪৬৬ জন বরিশালের, এর পর চট্টগ্রামে ৩৯৭, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় ৩৬২, উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় ২৫৫, ঢাকা বিভাগে ৩৫৩, খুলনায় ১১৬, রাজশাহীতে ৬২, ময়মনসিংহে ৫১, রংপুর ও সিলেট বিভাগে ছয়জন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ আটজনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার হাসপাতালে। এর পর বরিশাল ও খুলনা বিভাগে দু’জন করে চারজন। চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, ঢাকা বিভাগ ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় একজন করে মোট চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১০২ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি ২৯ জন, আর ৭৩ জন ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর ভর্তি রোগীদের মধ্যে ১ হাজার ৩৬১ জন ঢাকার বাইরের রোগী। ঢাকার দুই মহানগর এলাকার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৭১৩ জন।
২০২৩ সালে ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হন। সবচেয়ে বেশি ১ হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যুও হয় ওই বছর।