নারীর প্রতি সহিংসতার প্রতিবাদে সুহৃদ সমাবেশের মানববন্ধন
Published: 17th, March 2025 GMT
বড় বোন হামিদা আক্তারের সঙ্গে দারুণ সম্পর্ক ছিল ছোট বোন শিশু আছিয়ার। মায়ের মতো প্রায়ই আছিয়াকে খাবার মুখে তুলে খাইয়ে দিতেন তিনি। বিয়ের পর সেই আদরের ছোট বোনটির ওপর নির্মম ও পাষণ্ড আচরণ কোনভাবেই মেনে নিতে পারছেন না বড় বোন হামিদা। স্বামী ও শ্বশুরসহ অপরাধীদের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন তিনি।
হামিদার মতো সমকাল সুহৃদ সমাবেশের ঈশ্বরদী ইউনিটের সদস্যরাও সমভাবে ব্যথিত আছিয়ার জন্য। মাগুরায় আট বছরের শিশু আছিয়াকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় দেশজুড়ে ধিক্কার ও প্রতিবাদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে জড়িতদের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন ঈশ্বরদীর সুহৃদরা।
আছিয়া হত্যাকাণ্ডসহ সারাদেশে নারীর প্রতি নির্যাতন ও সহিংসতার প্রতিবাদ জানিয়ে সমকাল সুহৃদ সমাবেশ ঈশ্বরদী ইউনিটের উদ্যোগে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
সোমবার শহরের রেলগেট জিরো পয়েন্ট এলাকায় এই মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। আয়োজিত এ কর্মসূচিতে সাম্প্রতিক সময়ে শিশু আছিয়াকে পাশবিক নির্যাতন করে হত্যার প্রতিবাদ ও দেশের বিভিন্ন এলাকায় সংঘটিত নির্যাতন ও সহিংসতার তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। মানববন্ধন কর্মসূচি চলাকালে পথসভায় সভাপতিত্ব করেন সমকাল সুহৃদ সমাবেশ ঈশ্বরদী ইউনিটের সভাপতি আর কে বাবু। অনুষ্ঠানের সঞ্চালন করেন সাধারণ সম্পাদক মাসুদুল ইসলাম মাসুদ।
এ সময় বক্তব্য দেন সমকালের ঈশ্বরদী প্রতিনিধি সেলিম সরদার, উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা এমদাদুল হক আমান, স্বর্ণকলি বিদ্যাসদনের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক মনিরুল ইসলাম বাবু, সুহৃদ সমাবেশের কার্যকরী সভাপতি আব্দুল আলীম বিশ্বাস মিঠু, সিনিয়র সহসভাপতি খন্দকার তৌফিক আলম সোহেল, তানহা ইসলাম শিমুল, আব্দুস সামাদ, সুহৃদ ফিরোজ আহমেদ, দূর্জয় ইসলাম লিমন, হাসান চৌধুরী, পরিতোষ পাল, আলমাস হোসেন হিটু প্রমুখ।
ঈশ্বরদী সুহৃদদের ইফতার মাহফিল
সমকাল সুহৃদ সমাবেশ ঈশ্বরদী ইউনিটের উদ্যোগে প্রতি বছরের মত এবারও ইফতার মাহফিলের আয়োজন গতকাল সোমবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। শহরের ফুড গার্ডেন রেস্টুরেন্ট মিলনায়তনে এই ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়। ইফতার পূর্ব আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সুহৃদ সমাবেশ ঈশ্বরদী শাখার সভাপতি আর কে বাবু। পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মাসুদুল ইসলাম মাসুদ। সুহৃদ উপদেষ্টা সেলিম সরদার এ আয়োজনের সার্বিক সমন্বয় করেন। ঈশ্বরদীর সকল সুহৃদরা এই ইফতার মাহফিলে অংশগ্রহণ করেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইউন ট র কর ন স ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
‘গাজা যুদ্ধ টিকিয়ে রেখে পুঁজিবাদী রাষ্ট্রগুলো সুবিধা নিচ্ছে’
ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধ টিকিয়ে রেখে সাম্রাজ্যবাদ ও পুঁজিবাদী রাষ্ট্রগুলো সুবিধা নিচ্ছে। রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির উদ্যোগে ‘গাজায় নারী শিশুসহ নৃশংস হত্যাযজ্ঞ’ বন্ধের দাবিতে মানববন্ধনে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম এ কথা বলেন।
সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, গাজার যুদ্ধে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হচ্ছে নারী ও শিশু। জাতিসংঘ কেন এই যুদ্ধ বন্ধ করতে সফল হচ্ছে না? জাতিসংঘে যারা অর্থ সহায়তা দেয়, তারাই যুদ্ধ বাঁধিয়ে রেখেছে। গাজার যুদ্ধ শত বছরের সমস্যা। এই সমস্যাটা টিকিয়ে রেখে সাম্রাজ্যবাদ পুঁজিবাদী রাষ্ট্রগুলো সুবিধা নিচ্ছে। পুঁজিবাদী রাষ্ট্র হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র এই যুদ্ধ টিকিয়ে রাখছে। যারা মানবতার পক্ষে তাদের প্রতি আহ্বান জানাব, আপনারা যুদ্ধকে না বলার জন্য শক্ত জনমত গড়ে তুলুন।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু, অ্যাকশন এইডের মৌসুমী বিশ্বাস, অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড নেটওয়ার্কিংয়ের পরিচালক জনা গোস্বামী, গণশক্তির নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, গাজা ও রাফায় ফিলিস্তিনের নিরস্ত্র জনগণের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর সামরিক অভিযান, অবরোধ ও গণহত্যা ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ে রূপ নিয়েছে। শিশু, গর্ভবতী নারী, বৃদ্ধ ও সাধারণ মানুষদের নির্বিচারে হত্যার মাধ্যমে ইসরায়েলি বাহিনী মানবতাবিরোধী অপরাধের সকল সীমা অতিক্রম করেছে। ইসরায়েলের সঙ্গে সকল ধরনের আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দিতে হবে। বাংলাদেশি পাসপোর্টে একসেপ্ট ইসরায়েল (ইসরায়েল ব্যতীত) পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে। ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধে আন্তর্জাতিক জনমত গঠনের জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জাতিসংঘ, ওআইসি ও অন্যান্য ফোরামে সক্রিয় কূটনৈতিক উদ্যোগ নিতে হবে। গাজা ও রাফায় মানবিক সহায়তা পাঠানো এবং প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক সহায়তায় অংশগ্রহণের বিষয়ে পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। একটি স্বাধীন, সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া আরব বিশ্বের স্থায়ী শান্তি সম্ভব নয়- এই অবস্থান বাংলাদেশকে আরও জোরালোভাবে তুলে ধরতে হবে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মাধ্যমে বিশ্ব জনমত গঠনে নেতৃত্ব দেওয়ার কূটনৈতিক প্রয়াস নিতে হবে। ইসরায়েলি বাহিনীর মানবতাবিরোধী অপরাধের শাস্তি নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারের ব্যবস্থা করতে বাংলাদেশ সরকারকে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি, এ মুহূর্তে ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়ানো শুধু একটি রাষ্ট্রের প্রতি সহানুভূতি নয়, বরং বৈশ্বিক মানবতা রক্ষার সংগ্রামে সক্রিয় অংশগ্রহণ।