বিচার বিভাগের কার্যকর স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে সুপ্রিম কোর্টের অধীনে বিচার বিভাগের জন্য একটি স্বতন্ত্র সচিবালয় প্রতিষ্ঠার বিষয়ে তাগিদ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। তিনি বলেছেন, যা (স্বতন্ত্র সচিবালয়) অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রমকে টেকসই ও অর্থবহ করে তুলতে সক্ষম হবে।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে আজ সোমবার আয়োজিত এক ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি এ কথা বলেন। বাংলাদেশ আইন সমিতি ওই ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে।

অন্তর্বর্তী সরকারের গৃহীত সংস্কার উদ্যোগগুলোর দীর্ঘমেয়াদি স্থায়িত্ব অনেকাংশেই বিচার বিভাগের স্বাধীনতার ওপর নির্ভরশীল বলে উল্লেখ করেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। তিনি বলেন, একটি স্বাধীন বিচার বিভাগ তখনই কার্যকরভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারবে, যখন স্বতন্ত্র বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বিচার বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক স্বতন্ত্রীকরণ নিশ্চিত হয়।  

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, আগামী দিনগুলো বিচার বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক স্বায়ত্তশাসন অর্জনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ আইন সমিতি বিচার বিভাগ সংস্কারের লক্ষ্যে রোডম্যাপ (প্রধান বিচারপতি ঘোষিত) বাস্তবায়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আইন সমিতির আহ্বায়ক আইনজীবী মনির হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো.

আশফাকুল ইসলাম, আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. রেজাউল হক ও বিচারপতি এস এম এমদাদুল হক এবং অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বক্তব্য দেন। স্বাগত বক্তব্য দেন ইফতার মাহফিল উদ্‌যাপন কমিটির আহ্বায়ক মো. শাহজাহান সাজু। সমিতির সদস্যসচিব আইনজীবী মো. কামাল হোসেনের সঞ্চালনায় ইফতার মাহফিলের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন আইনজীবী মো. মাকসুদ উল্লাহ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স বতন ত র আইনজ ব

এছাড়াও পড়ুন:

‘উৎকোচের’ টাকা নির্ধারণ, শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি-সম্পাদককে শোকজ

বিভিন্ন মামলায় আদালতের পেশকার, পিয়ন ও কোর্ট পুলিশের উৎকোচ দেওয়ার টাকা নির্ধারণ করার ঘটনায় শরীয়তপুর আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছে।

আজ রোববার শরীয়তপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবুল বাশার মিঞা আইনজীবী সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম ও সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ কামরুল হাসানকে ওই নোটিশ প্রদান করেন। তাঁদের আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।

৬ মার্চ শরীয়তপুর আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী সভায় বিভিন্ন মামলায় আদালতের পেশকার, পিয়ন ও কোর্ট পুলিশের উৎকোচ দেওয়ার টাকা নির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত হয়। ওই টাকা নির্ধারণের জন্য করা সভার কার্যবিবরণী আদালতের বিভিন্ন কর্মচারী, আইনজীবী ও আইনজীবীর সহকারীদের দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে।

কারণ দর্শানোর নোটিশে বলা হয়েছে, ‘পরিমাণ যা–ই হোক না কেন, ঘুষ গ্রহণ ও প্রদানের যাবতীয় উদ্যোগ সমানভাবে নিন্দনীয় ও বেআইনি কাজ। বিচার বিভাগ থেকে যখন সব ধরনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা নীতি গ্রহণ করা হয়েছে, ঠিক তখন আপনাদের স্বাক্ষরিত এ ধরনের বেআইনি ও নৈতিকতাবিবর্জিত উৎকোচ প্রদানের উদ্যোগ আইন পেশার মতো একটি মহৎ পেশাকে যেমন কলুষিত করেছে, তেমনি বিচারপ্রার্থী জনগণের নিকট বিচার বিভাগের মর্যাদাহানি ঘটেছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে এমন বেআইনি উদ্যোগের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কেন আপনার পেশাগত নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করা হবে না, তা এই চিঠি প্রাপ্তির তিন দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশ প্রদান করা হলো।’

শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতি সূত্র জানায়, গত ১২ ফেব্রুয়ারি শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হন। ওই কমিটি ৬ মার্চ প্রথম সভা করে। সভায় বিভিন্ন সিদ্ধান্তের মধ্যে আছে আইনজীবীদের বিভিন্ন মামলা পরিচালনা করার জন্য পেশকার, পিয়ন, সি আর ফাইলিংয়ের জন্য ১০০ টাকার বেশি না দেওয়া; কোনো দরখাস্তে জিআর, সিআর ১০০ টাকার বেশি না দেওয়া; জামিননামা দাখিলের খরচ মামলাপ্রতি ১০০ টাকার নিচে এবং ২০০ টাকার বেশি না দেওয়া; গারদখানায়, ওকালতনামায় স্বাক্ষরে ১০০ টাকা, সিভিল ফাইলিংয়ে সর্বোচ্চ ২০০ টাকা এবং হলফনামায় ১০০ টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত।

আইনজীবী সমিতির এমন সিদ্ধান্তের একটি কপি জজকোর্ট, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পেশকার, পিয়ন ও কোর্ট পুলিশের জিআরওদের কাছে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন আইনজীবীকে দেওয়া হয়েছে।

জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম ও জজকোর্টের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মনিরুজ্জামানকে আজ বেলা তিনটা পর্যন্ত কয়েক দফা কল করা হলেও তাঁরা ধরেননি।

জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ কামরুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা দুর্নীতি বন্ধ করার জন্য এমন উদ্যোগ নিয়েছিলাম। আদালতের সঙ্গে আমরা আইনজীবীরাও দুর্নীতিতে জিরো টলারেন্স নীতিতে আছি। বিষয়টি নিয়ে জেলা ও দায়রা জজ এবং চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। আমরা তিন দিনের মধ্যেই শোকজের জবাব দেব।’

আরও পড়ুনশরীয়তপুর আদালতের কর্মচারীদের ফি নির্ধারণ করেছে আইনজীবী সমিতি, নানা আলোচনা ১৫ মার্চ ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সেই এসপিকে আদালতে হাজির, জেলহাজতে প্রেরণ
  • নতুন দলের নিবন্ধনে ইসির গণবিজ্ঞপ্তি চ্যালেঞ্জ করে রিট হাইকোর্টে
  • ঘুষ-দুর্নীতি বন্ধে শরীয়তপুর আদালত চত্বরে অভিযোগ বাক্স স্থাপন
  • কাঁদতে কাঁদতে শাজাহান খান বললেন, ‘ছেলের সঙ্গে পাঁচ মাস দেখা নেই’ 
  • আদালতে কাঁদলেন শাজাহান খান, জানালেন মামলার কারণ
  • সাজা স্থগিত, আপিল করার অনুমতি পেলেন মীর নাসির ও মীর হেলাল
  • ফজলে করিমের দুই ছেলের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
  • মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে পেটানোর ঘটনায় মামলা
  • ‘উৎকোচের’ টাকা নির্ধারণ, শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি-সম্পাদককে শোকজ