অর্থবছরের আট মাসে ২৪ দশমিক ২৭ শতাংশ এডিপি বাস্তবায়ন
Published: 17th, March 2025 GMT
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) ২৪ দশমিক ২৭ শতাংশ বাস্তবায়িত হয়েছে। অর্থবছরের আট মাস বিবেচনায় এটি গত ১২ বছরের মধ্যে এডিপির সর্বনিম্ন বাস্তবায়ন হার।
সোমবার (১৭ মার্চ) পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) এডিপি বাস্তবায়নের হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে।
এতে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাস ২০২৪ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এডিপি বাস্তবায়িত হয়েছে ৬৫ হাজার ৫৫৩ কোটি টাকার। এটি অর্থবছরের মোট এডিপি বরাদ্দের মাত্র ২৪ দশমিক ২৭ শতাংশ। এর আগের অর্থবছর প্রথম আট মাসে এডিপি বাস্তবায়নের হার ছিল ৩১ দশমিক ১৭ শতাংশ।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দায়িত্বে আসা অন্তর্বর্তী সরকার অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে প্রকল্প বাস্তবায়নে জোর দেয়। এতে করে আগের সরকারের নেওয়া অনেক প্রকল্পে অর্থছাড় কমিয়ে দেওয়া হয়। ফলে চলমান অনেক প্রকল্পের কাজও স্থগিত হয়ে যায়। এসব মিলিয়ে এডিপির বরাদ্দ করা অর্থ ব্যয় কমে যায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
২০২২-২৩ অর্থবছরে এ বাস্তবায়ন হার ছিল ৩২ দশমিক ১০ শতাংশ এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে এ বাস্তবায়ন হার ছিল ৩৫ দশমিক ৮০ শতাংশ। এমনকি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে দেশে কোভিড অতিমারির প্রভাব থাকা সত্ত্বেও চলতি অর্থবছরের তুলনায় বেশি হারে এডিপি বাস্তবায়িত হয়েছিল।
ওই অর্থবছরের প্রথম আট মাসে এডিপি বাস্তবায়নের হার ছিল ৩৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ। আর ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে এডিপি বাস্তবায়নের হার ছিল ৩৭ দশমিক ২৬ শতাংশ।
চলতি অর্থবছরের এডিপিতে মোট বরাদ্দের পরিমাণ দুই লাখ ৭৮ হাজার ২৮৯ কোটি টাকা। সরকারের নিজস্ব অর্থায়ন এক লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা, বৈদেশিক ঋণ বা প্রকল্প সাহায্য এক লাখ কোটি টাকা এবং বিভিন্ন সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ১৩ হাজার ২৮৯ কোটি টাকা।
বাস্তবায়নের হার পর্যালোচনায় দেখা যায়, সরকারি অর্থায়ন অংশে বাস্তবায়ন হার সবচেয়ে কম। এক্ষেত্রে বাস্তবায়িত হয়েছে ২১ দশমিক ১৩ শতাংশ বা ৩৪ হাজার ৮৫৮ কোটি টাকা। এটি প্রথম আট মাসের গড় বাস্তবায়নের চেয়ে কম। বৈদেশিক সহায়তা অংশে বাস্তবায়িত হয়েছে ২৭ দশমিক ৪৭ শতাংশ বা ২৭ হাজার ৪৭১ কোটি টাকা। আর সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন অংশে বাস্তবায়িত হয়েছে ৩৯ দশমিক ৩১ শতাংশ বা পাঁচ হাজার ২২৪ কোটি টাকা।
বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের এডিপি বাস্তবায়ন পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, অর্থবছরের প্রথম আট মাসে বাস্তবায়নে সবচেয়ে পিছিয়ে আছে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ। ৪ হাজার ৯৩৬ কোটি ৫৩ লাখ টাকা বরাদ্দের মধ্যে আট মাসে সংস্থাটি বাস্তবায়ন করেছে মাত্র ২০ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। এটি মোট বরাদ্দের মাত্র শূন্য দশমিক ৪১ শতাংশ। বাস্তবায়নে পিছিয়ে থাকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয়। ১.
এ ছাড়া এডিপি বাস্তবায়ন হারে পিছিয়ে থাকা মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ ৫.৪৮ শতাংশ, ভূমি মন্ত্রণালয় ৬.৪১ শতাংশ এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ৬.৭৭ শতাংশ।
এডিপি বাস্তবায়নে সবচেয়ে এগিয়ে থাকার তালিকা পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। চলতি অর্থবছরের এডিপিতে বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ৪ হাজার ৪৬৩ কোটি ১০ লাখ টাকা। প্রথম আট মাসে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ বাস্তবায়ন করেছে ৩,৭৬২ কোটি ৪৮ লাখ টাকা, যা মোট বরাদ্দের ৮৪ দশমিক ৩০ শতাংশ। বাস্তবায়ন হারে পরের অবস্থানে রয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। অর্থবছরের প্রথম আট মাসে ১৫ কোটি ৪৮ লাখ টাকার বরাদ্দের বিপরীতে বাস্তবায়ন করেছে ১২ কোটি ৮ লাখ টাকা, যা মোট বরাদ্দের ৭৮ দশমিক ০৬ শতাংশ। তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ, বাস্তবায়নের হার ৭২ দশমিক ৮৫ শতাংশ। আর চতুর্থ অবস্থানে থাকা বাস্তবায়ন পরীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের বাস্তবায়ন হার ৪৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ।
ঢাকা/হাসান/এনএইচ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম ট বর দ দ র বর দ দ র ম র বর দ দ প রকল প অবস থ ন মন ত র দশম ক সরক র সবচ য়
এছাড়াও পড়ুন:
করমুক্ত আয়সীমা চার লাখ টাকা নির্ধারণের সুপারিশ সিপিডি’র
বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের বার্ষিক করমুক্ত আয়সীমা ৫০ হাজার টাকা বাড়িয়ে চার লাখ টাকা নির্ধারণের সুপারিশ করেছে।
বর্তমানে একজন করদাতার করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে তিন লাখ টাকা। ২০২৫-২৬ অর্থবছরে তা আরও ৫০ হাজার টাকা বাড়ানোর সুপারিশ করেছে সিপিডি।
রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে এ সুপারিশ তুলে ধরা হয়। আগামী অর্থবছরের বাজেট সুপারিশ নিয়ে সিপিডির ধানমন্ডির কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এতে বক্তব্য দেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন, গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম প্রমুখ। আরও বক্তব্য দেন সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান।