সুন্দরবনে ৯ কেজি হরিণের মাংসসহ শিকারি আটক
Published: 17th, March 2025 GMT
সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জে কোস্টগার্ড ও বনবিভাগের যৌথ অভিযানে ৯ কেজি হরিণের মাংসসহ বাবু মোল্লা নামে এক শিকারীকে আটক করা হয়েছে।
সোমবার (১৭ মার্চ) সকাল ৬টার দিকে সুন্দরবন সংলগ্ন শ্যামনগর উপজেলার পার্শ্বেখালী ব্রীজের নিচ থেকে ওই শিকারীকে আটক করা হয়।
আটক চোরা শিকারী বাবু মোল্লা (৩২) শ্যামনগর উপজেলার পার্শ্বেখালী গ্রামের মজিদ মোল্যার ছেলে।
আরো পড়ুন:
সাড়ে ২৫ লাখ টাকায় অপহৃত ৯ জেলে মুক্ত, ফেরেনি ৬ জন
সুন্দরবনে বাঘের মুখ থেকে জীবিত উদ্ধারের লোমহর্ষক ঘটনা
কৈখালী বনবিভাগের স্টেশন কর্মকর্তা (এসও) টিএম সুলতান জানান, সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জ থেকে কয়েকজন চোরা শিকারী হরিণ শিকার করে মাংস নিয়ে লোকালয়ে আসছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কৈখালী কোস্টগার্ড ও বনবিভাগের সদস্যরা যৌথভাবে সেখানে অভিযান চালায়। এ সময় সুন্দরবন সংলগ্ন শ্যামনগর উপজেলার পার্শ্বেখালী ব্রিজের নিচ থেকে ৯ কেজি হরিণের মাংসসহ চোরাশিকারীকে আটক করা হয়।
তিনি ওই চোরা শিকারীর উদ্ধৃতি দিয়ে আরো জানান, জিজ্ঞাসাবাদে সে পেশাদার হরিণ শিকারী বলে স্বীকার করেছেন।
সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বনসংরক্ষক (এসিএফ) মশিউর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, হরিণের মাংসসহ আটক চোরা শিকারী বাবু মোল্লাকে সাতক্ষীরা আদালতের মাধ্যমে জেলা হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। সুন্দরবনে হরিণ শিকার বন্ধে বন বিভাগের তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে।
সাতক্ষীরা/শাহীন/সাইফ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ন দরবন স ন দরবন স
এছাড়াও পড়ুন:
‘সকলে থামুন, এখানে বাঘের পায়ের ছাপ’, তারপর কী হলো
ভটভট শব্দে সচল হলো ট্রলারের ইঞ্জিন। বন বিভাগের হড্ডা টহল ফাঁড়ির বনকর্মীদের সঙ্গী হয়েছি। গন্তব্য গহিন সুন্দরবন। হেঁটে হরিণশিকারিদের পেতে রাখা ফাঁদ উদ্ধার করবেন বনরক্ষীরা। সুন্দরবন খুলনা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক শরিফুল ইসলামের সহায়তায় দলের সঙ্গে আমার যাওয়ার সুযোগ হয়েছে।
সাতসকালে বনের মধ্যকার খাল দিয়ে এঁকেবেঁকে শিবসা নদীতে গিয়ে পড়ে ট্রলার। ভাটার টানে নদীর তীরে চর জেগেছে। ট্রলারে বসে একটু খেয়াল করলে বনের ভেতরটাও দেখা যায়। সকালের স্নিগ্ধ আলোয় হরিণের পাল ঘুরে বেড়াচ্ছে, দৌড়ঝাঁপ করছে বানরের দল। ট্রলারে দাঁড়িয়ে দলের অন্য সদস্যদের গন্তব্য ও করণীয় সম্পর্কে সংক্ষেপে ধারণা দেন দলনেতা ফরেস্টার সাবিত মাহমুদ। তিনি খুলনার কয়রার হড্ডা টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
শিবসা নদী ধরে ঘণ্টাখানেক ট্রলার চলার পর পৌঁছে গেলাম বনের একটি খালের মুখে। দুপাশে ঘন বন। সুন্দরী, কেওড়া, গেওয়া, বাইন, গোলপাতাসহ নানা জাতের গাছ। বনরক্ষীরা জানালেন, এটি ভারানীর খাল। যে খাল দিয়ে এক খাল থেকে আরেক খালে যাওয়া যায়, সেটাই ভারানীর খাল। এসব খালঘেঁষা বনেই বেশি ফাঁদ পাতে হরিণ শিকারিরা।
ট্রলারের ইঞ্জিন বন্ধ হলো। খালের পাড়ে একটি গেওয়াগাছে বাঁধা হলো ট্রলার। লাফিয়ে খালপাড়ের কাদাপানি মাড়িয়ে সবাই জঙ্গলে উঠলাম। বনভূমিজুড়ে শূলের মতো মাথা উঁচু করে আছে অসংখ্য শ্বাসমূল। তার ভেতর দিয়ে হরিণ চলাচল করেছে, তারই খুরের ছাপ। সেই ছাপ ধরে গহিন বনের মধ্যে অস্ত্রধারী বনরক্ষীদের সঙ্গে হেঁটে এগোতে থাকি। গাছপালাগুলো এতটাই ঘন যে কয়েক হাত দূরের কিছুও দেখা যায় না।
ঘন জঙ্গলের ভেতর দিয়ে শিকারির পেতে রাখা ফাঁদ খুঁজতে খুঁজতে এগোতে থাকেন বনরক্ষীরা। তাঁদের অনুসরণ করে হাঁটাও কঠিন। কারণ, শ্বাসমূল, আঠালো কাদা আর ঝুলে থাকা জটপাকানো লতাগুল্ম। এক হাতে ক্যামেরা উঁচিয়ে ধরে এর মধ্যেই এগিয়ে চলছিলাম। হঠাৎই জঙ্গলের ভেতর কিসের যেন শব্দ, মুহূর্তের জন্য থমকে দাঁড়াই। পরক্ষণেই দেখতে পেলাম, পাশের হেঁতালঝোপ দিয়ে একটি বন্য শূকর দৌড় দিল।
সুন্দরবনে গহিনে