‘চোখটা ফালায় দিতে হইছে। ছেলেটার মনটা খুব খারাপ। আমার যে কেমন লাগে! তাও ছেলেরে সান্ত্বনা দিয়া বলি, বাবা, মন খারাপ কইরো না।’—হাসপাতালে ছেলের শয্যাপাশে বসে কথাগুলো বলছিলেন সাবিনা ইয়াসমিন। এর মাত্র দুই ঘণ্টা আগে ছেলে মো. সাকিব হাসানের (১২) ডান চোখে অস্ত্রোপচার হয়েছে। সে রাজধানীর জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।

গত বছরের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় ১৯ জুলাই সাকিবের ডান চোখে ছররা গুলি লাগে। চার মাস আগে ওই চোখের সম্পূর্ণ দৃষ্টিশক্তি হারায় সে। আট মাস চিকিৎসার পর আজ সোমবার ডান চোখে অস্ত্রোপচার করে প্রস্থেটিক আই (কৃত্রিম চোখ) স্থাপন করা হয়েছে।

বেলা একটায় হাসপাতালের ৪৩৫ নম্বর কক্ষে গিয়ে দেখা যায়, সাকিব ঘুমাচ্ছে। মাঝেমধ্যে নড়াচড়া করছে। বিড়বিড় করে মাকে কিছু বলল, মা তখন একটা বালিশ এনে হাতের নিচে দিয়ে দিলেন।

যেভাবে গুলিবিদ্ধ হয় সাকিব

সাকিবের বাবা আবু তালেব রংমিস্ত্রির কাজ করতেন। চর্মরোগের কারণে অসুস্থতায় বর্তমানে নিয়মিত কোনো কাজ করেন না। শেরপুরের ঝিনাইগাতি উপজেলায় গ্রামের বাড়িতে সাকিবের ১১ বছর বয়সী ছোট ভাইকে নিয়ে থাকেন। সাকিবের মা সাবিনা গৃহকর্মীর কাজ করেন। তাঁর একার আয়ে চলে সংসার। সাকিবকে নিয়ে তিনি থাকেন রাজধানীর মিরপুরের মাটিকাটা এলাকায়।

গত বছরের জুলাইয়ে আন্দোলন শুরুর আগে স্বামী গ্রামে চলে যান জানিয়ে সাবিনা বলেন, তিনি দুই সন্তানকে নিয়ে মাটিকাটা এলাকার বাসায় থাকতেন। সাকিব স্থানীয় শিশু মঙ্গল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে আর ছোট ছেলে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ত।

ঘটনার দিনের কথা বলতে গিয়ে সাবিনা বলেন, তখন স্কুল বন্ধ। অন্য দিনের মতো তিনি কাজে বেরিয়ে যান। বেলা তিনটার দিকে ইসিবি চত্বরে বন্ধুদের সঙ্গে আন্দোলনে গেলে সাকিবের ডান চোখে গুলি লাগে।

হাসপাতালে ছেলের শয্যাপাশে মা সাবিনা ইয়াসমিন। আজ রাজধানীর জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

হামদর্দের গাজার জনগণের প্রতি মানবিক সহায়তা

গাজা পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক সংকটের মুখোমুখি। ইসরায়েলি হামলায় গাজার প্রতিটি অঞ্চল ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। শিশু, নারী, চিকিৎসক, মানবাধিকার কর্মী, সাংবাদিক কেউই রেহাই পাচ্ছে না। মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে গাজা শহরটি মৃত্যুকূপে পরিণত হয়েছে। যেখানে প্রতিদিন হাজার হাজার নিরীহ মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে। 

এ পরিস্থিতিতে হামদর্দ ল্যাবরেটরিজ (ওয়াক্ফ) বাংলাদেশ গাজার জনগণের প্রতি মানবিক সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

হামদর্দ বাংলাদেশের চিফ মোতাওয়াল্লী ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাকীম মো. ইউছুফ হারুন ভূঁইয়ার আহ্বানে গত ২৬ এপ্রিল কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। হামদর্দের সকল কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা তাদের বেতন থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ অনুদান এবং শরবত রুহআফজা’র বিক্রয়লব্ধ লভ্যাংশ থেকে ফিলিস্তিনের গাজার জনগণের জন্য অর্থ সহায়তা হিসেবে প্রদান করবে।

এই অর্থ গাজার জনগণের জন্য জরুরি চিকিৎসাসেবা, খাদ্য সহায়তা, আশ্রয় এবং অন্যান্য মৌলিক প্রয়োজনে কিছুটা হলেও সহায়ক হবে। হামদর্দের এই উদ্যোগ গাজার জনগণের মানবিক সংকটের মধ্যে তাদের পাশে দাঁড়ানোর একটি ক্ষুদ্র প্রয়াস।

ঢাকা/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ