রূপগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতাকে কুপিয়ে জখম
Published: 17th, March 2025 GMT
রূপগঞ্জে মোতাহার হোসেন নামের এক স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকে কুপিয়ে জখম করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার (১৭ মার্চ) দুপুরে উপজেলার পূর্বাচল হেলপেট চত্বর ১৯নং সেক্টর এলাকায় ঘটে ঘটনা।
ভাঙ্গারি মালামাল বিক্রিতে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে স্থানীয় কামরুল ইসলাম এ হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার (১৭ মার্চ) দুপুরে উপজেলার পূর্বাচল হেলপেট চত্বর ১৯নং সেক্টর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মোতাহার হোসেন উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়নের কালনি এলাকার মৃত আবুল হোসেনের ছেলে। তিনি রুপগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
মোতাহার হোসেন অভিযোগ করে জানান, কালনি এলাকার মৃত আব্দুল মজিদের ছেলে কামরুল ইসলাম বিগত আওয়ামী শাসন আমল থেকে এলাকায় প্রভাব বিস্তার খাটিয়ে বিভিন্ন চোরাইকৃত মালামাল বিক্রিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড করে আসছে।
সোমবার দুপুরে পূর্বাচল হেলপেট চত্বর ১৯নং সেক্টরে ভেতরে কামরুল ইসলাম চোরাইকৃত ভাঙ্গারি মালামাল বিক্রি করার সময় ঘটনাস্থলে গিয়ে নিষেধ করি। বিষয়টি নিয়ে দুজনের মাঝে তর্কবিতর্ক শুরু হয়।
তিনি জানান, একপর্যায়ে কামরুল লোহার রড দিয়ে হত্যা করার উদ্দেশ্যে মাথায় আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে। পরে বেধড়ক মারধর করা হয়। এ সময় তার সঙ্গে থাকা ব্যবসার ৫০ হাজার টাকা নিয়ে নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত কামরুল ইসলাম বলেন, আমি কোনো হামলা করিনি। আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। আপনারা ঘটনাস্থলে এসে খোঁজখবর নিয়ে দেখুন।
.উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: র পগঞ জ ন র য়ণগঞ জ উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
লক্ষ্মীপুর বেড়িবাঁধে আশ্রিতরা উচ্ছেদ আতঙ্কে, পুনর্বাসনের দাবি
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মজুচৌধুরীর হাটের দক্ষিণে বুড়ির ঘাট পর্যন্ত যে বেড়িবাঁধটি রয়েছে, তার দুইপাশে অন্তত ৫ শতাধিক বসতঘর রয়েছে। বসবাসকৃত বাসিন্দাদের সংখ্যা কয়েক হাজার। নদীর ভাঙার কবলে পড়ে ভোলার জেলার বিভিন্ন অঞ্চলের ভূমিহীন লোকজন এখানে এসে বসতি গড়েছেন। বাসিন্দাদের বেশিরভাগই নিম্নআয়ের। নদীতে মাছ শিকার এবং অন্যের জমিতে কৃষিকাজ কিংবা দিনমজুরি দিয়ে চলে তাদের সংসার। ফলে নিজস্ব জমি কেনার মতো সাধ্য নেই এসব পরিবারের।
বাঁধের সংস্কার কাজ চলায় এসব আশ্রিত পরিবার এখন উচ্ছেদ আতঙ্কে ভূগছে। পুনর্বাসনের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে বেড়িবাঁধের পাশে বসবাসরত এই ভূমিহীন বাসিন্দারা।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করে তারা। পরে জেলা প্রশাসকের কাছে একটি স্মারকলিপি দেয়।
বেড়িবাঁধের মজুচৌধুরীর হাটের উত্তর অংশে কাজ চলমান রয়েছে, কিন্তু দক্ষিণ অংশের বাসিন্দারা উচ্ছেদ আতঙ্কে বাঁধের সংস্কার কাজে আপত্তি জানিয়েছেন। সংস্কারের আগে তারা পুনর্বাসনের দাবি জানিয়ে আসছেন।
মানববন্ধনকারীরা জানান, তাদের নিজস্ব কোন জায়গা নেই। কবরের জায়গা পর্যন্ত নেই। বেড়িবাঁধের পাশে ঘর করে তারা বসবাস করছেন। নদীতে মাছ শিকার আর অন্যের জমিতে কৃষিকাজ করে সংসার চালাচ্ছেন।
তাদের দাবি, বাঁধ সংস্কারের কারণে তাদের উচ্ছেদ করে দিলে তাদের আর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। তাই পুনর্বাসনের আগে তারা বাঁধের কাজ শুরু করতে দেবে না।
মানববন্ধনে আসা ভূমিহীন বৃদ্ধ এবং বিধবা আফিয়া খাতুন জানান, মজুচৌধুরীর হাটের দক্ষিণে নিমতলা নামক এলাকায় দুটি বসতঘর রয়েছে। ৮ সদস্য নিয়ে তারা ওই দুইঘরে বসবাস করেন। বাঁধ সংস্কারের কারণে তাদের দুটি বসতঘরও উচ্ছেদের মধ্যে পড়বে। কিন্তু কোথায় যাবেন তিনি, সে দুঃচিন্তা ভর করছে তার উপর।
আফিয়া খাতুন আরও জানান, তাদের আদি নিবাস ভোলা জেলাতে। অর্ধশত বছর আগে মেঘনা নদীর ভাঙনের পর পরিবারের সাথে চলে আসেন লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরীর হাট এলাকায়। প্রায় ৩০ বছর আগে মজুচৌধুরীর হাটের দক্ষিণে বেড়িবাঁধে ঢালে অস্থায়ী ঘর তৈরি করে পরিবার নিয়ে বসবাস শুরু করেন। পূর্বে তার বাবা-মার সাথে ছিলেন, এখানেই তার বিয়ে হয়েছে। স্বামী-সন্তানদের নিয়ে থাকতেন। স্বামী মারা গেছে, এখন সন্তান এবং নাতি-নাতনীদের নিয়ে বসবাস করছেন। নিম্ন আয়ের পরিবার হওয়ায় এতো বছরেরও নিজস্ব জমি কেনার সাধ্য হয়নি।
মানববন্ধনে আসা রহিমা বেগম বলেন, “আমার বসবাস ওই বেড়িবাঁধের পাশেই। ভোলাতে আমাদের বসতি ছিল, সাতবার ভাঙার কবলে পড়ে। জন্মের পর থেকে এখানেই আছি। আমাদের পরিবারের মোট পাঁচটি ঘর। বাঁধ সংস্কার হলে তাদের ঘরগুলো সরিয়ে নিতে হবে।”
৬০ বছরের বৃদ্ধ তৈয়বা বেগম জানান, তার পরিবারের ৫ সদস্য। ঘরে বিবাহ উপযুক্ত মেয়ে রয়েছে। তাকে নিয়ে রয়েছেন বেকাদায়। এরই মধ্যে ঘর ভেঙে চলে যেতে হবে। তিনিও এখন চোখেমুখে অন্ধকার দেখছেন।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার বলেন, “পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে কথা বলে ভূমিহীনদের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।”
ঢাকা/লিটন/টিপু